রবিবার, ০৯ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মাঠে ময়দানে ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৫, ০১:৩৭ এএম

নারী খেলোয়াড়দের যৌন হয়রানি

ফুঁসে উঠেছে দেশের ক্রীড়াঙ্গন

মাঠে ময়দানে ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৫, ০১:৩৭ এএম

ফুঁসে উঠেছে দেশের ক্রীড়াঙ্গন

নারী ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলম যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলেছেন। তার অভিযোগকে কেন্দ্র করে ফুঁসে উঠেছে দেশের ক্রীড়াঙ্গন। এরই মধ্যে যৌন হয়রানির শিকার হওয়াদের পাশে দাঁড়িয়েছেন দেশের নারী ও পুরুষ খেলোয়াড়রা। তাদের আকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন। পাশাপাশি ক্রীড়াঙ্গন থেকে যৌন শিকারিদের খোঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান এবং নারীদের জন্য ক্রীড়া ক্ষেত্রকে নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশ তৈরির জন্য আহ্বান জানান তারা। জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মুর্তজার পর জাহানারা ইস্যুতে মুশফিকুর রহিমও ক্ষোভ, প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের অফিসিয়াল পেজে এই উইকেটরক্ষক ও ব্যাটসম্যান লিখেছেন, ‘সম্প্রতি আমাদের ক্রিকেট সম্প্রদায়ে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভয়াবহ খবরের কথা জানতে পেরেছি। আমি যদিও ঘটনার দুই দিক বা পুরো সত্যটা জানি না, তবুও আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে এই পৃথিবীতে কোনো ধরনের হয়রানির স্থান নেই, আপনি যেই হোন না কেন, আপনার লিঙ্গ বা অবস্থান যা-ই হোক না কেন।’ অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীদের যথাযথ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মুশফিক, ‘যদি অভিযোগুলো প্রমাণিত হয়, তাহলে দোষীদের অবশ্যই যথাযথ শাস্তি ও জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে। যারা এই কঠিন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন, তাদের প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন ও সংহতি রইল। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক পথ দেখান এবং ক্ষতিগ্রস্তদের শক্তি ও ধৈর্য দান করুন।’ টেস্ট দলের ক্রিকেটার তাইজুল ইসলামও জাহানারা ইস্যু প্রতিবাদ করেছেন।

এদিকে, নারীদের জন্য ক্রীড়াঙ্গন নিরাপদ নয় বলে মন্তব্য করেছেন দেশের তারকা শ্যুটার কামরুন্নাহার কলি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা যারা খেলাধুলার মাঠে আমাদের স্বপ্ন নিয়ে যুদ্ধ করছি, আমাদের জীবনের প্রতিটি ঘাম, পরিশ্রম, মানসিক শক্তি- সব কিছুই দেশের পতাকা উঁচু করার জন্য উৎসর্গ করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এই ক্রীড়াঙ্গনে নারী খেলোয়াড়রা আজ নিরাপদ নয়। আমাদের অনেকেই প্রতিদিন মানসিক চাপ, অপমান, এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের শিকার হচ্ছি।’ এরপরই কিছু কর্মকর্তার দিকে ইঙ্গিত করে লেখেন, ‘উচ্চপদস্থ কিছু কর্তৃপক্ষ নিজেদের প্রভাব ব্যবহার করে নারী অ্যাথলেটদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, তাদের মানসিকভাবে ভেঙে দিচ্ছে। আরও কষ্টের বিষয়, কিছু নারী কোচ বা নারী কর্মকর্তাও সেই অন্যায় ব্যবস্থার অংশ হয়ে গেছেন। আমাদের দেশের প্রায় প্রতিটি স্পোর্টস ফেডারেশনে এক ধরনের সিন্ডিকেট কালচার তৈরি হয়েছে- যেখানে কিছু প্রভাবশালী কর্মকর্তা ও কোচ নিজের পছন্দের মানুষদের সুবিধা দেন, আর অন্যদের অযথা মানসিক চাপে রাখেন, সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেন।’ কলি প্রশ্ন রাখেন, ‘নারী খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা কোথায়? বিসিবি ব্যতীত আরও যে ৫০টা ফেডারেশন রয়েছে, সেসব ফেডারেশনের চিত্র ঠিক একই, কোথাও নারী খেলোয়াড়রা নিরাপদ নয়।’

ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর সাবেক শ্যুটার ও কোচ শারমিন আক্তার রতœা। তিনি বলেন, ‘জাহানারার অভিযোগের পর এখন বিসিবি এবং উপদেষ্টা তদন্তের কথা বলেছেন। ফলে আমাদের শ্যুটিংয়ের বিষয়টিও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। শ্যুটিং ফেডারেশনের নতুন কমিটি হওয়ার আগেই আমরা কয়েকজন শ্যুটার জি এম হায়দার সাজ্জাদকে নিয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। তার ওপর নারীসংক্রান্ত অনেক অভিযোগই ছিল। এ জন্য তাকে শ্যুটিং ফেডারেশনের কমিটিতে না রাখার দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দেখা গেল, তিনি কমিটির যুগ্ম সম্পাদক হয়েছেন।’ ক্রীড়া উপদেষ্টা বরাবর জি এম হায়দার সাজ্জাদকে নিয়ে বেশ গুরুতর অভিযোগ এনেছিলেন শ্যুটাররা। সেখানে তারা উল্লেখ করেন, ‘অতীতে উল্লিখিত ব্যক্তি আমাদের বিভিন্ন নারী শ্যুটারের সাথে অনৈতিক আচরণ করার চেষ্টা করেছেন এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারী শ্যুটাররা তার অনৈতিক আচরণ ও অশ্লীল কর্মকা-ের শিকার হয়েছেন। সেই চিঠিতে শ্যুটারদের পক্ষে রতœা স্বাক্ষর করেন। তবে সেই চিঠি মন্ত্রণালয় বা এনএসসি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছে এ রকম প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’ বাংলাদেশের অন্যতম নারী কিংবদন্তি শ্যুটার সাবরিনা সুলতানা। তিনি বিষয়টির তদন্ত চেয়ে বলেন, ‘যেহেতু একটা স্পর্শকাতর বিষয়ে শ্যুটাররা অভিযোগ করেছেন। ফলে এটা অবশ্যই শ্যুটিং এবং ক্রীড়াঙ্গনের স্বার্থে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’ অতীতে উল্লিখিত ব্যক্তি আমাদের বিভিন্ন নারী শ্যুটারের সাথে অনৈতিক আচরণ করার চেষ্টা করেছেন এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারী শ্যুটাররা তার অনৈতিক আচরণ ও অশ্লীল কর্মকা-ের শিকার হয়েছেন। সেই চিঠিতে শ্যুটারদের পক্ষে রতœা স্বাক্ষর করেন। তবে সেই চিঠি মন্ত্রণালয় বা এনএসসি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছে এ রকম প্রমাণ পাওয়া যায়নি। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাঁতারু মাহফুজা রহমান তানিয়া বলেন, ‘ক্রীড়াঙ্গনে এ ঘটনা নতুন নয়। আমি নিজেও অনেক ঘটনার সাক্ষী। ক্রীড়াঙ্গনে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় আমিই প্রথম কোনো ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় এনেছিলাম। তার নাম আমিরুল ইসলাম। কুষ্টিয়ার সুইমিং কোচ। শাপলা নামের এক উদীয়মান সাঁতারুকে সে ধর্ষণ করেছিল। ওই ঘটনায় তদন্ত কমিটির একজন সদস্য হিসেবে আমিরুলকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করেছিলাম। পরে তাকে তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ক্রীড়াঙ্গনকে যৌন নিপীড়কমুক্ত রাখতে হলে জাহানারার ঘটনার সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ বিচার করতে হবে এবং অবশ্যই করতে হবে।’ জাতীয় কুস্তি দলের কোচ শিরিন সুলতানা বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরেই এটি চলে আসছে। কেউ বলার সাহস পাচ্ছে না। বলতে ভয় পাচ্ছে। সুইমিংয়েও কিন্তু এমন একটা ঘটনা ঘটেছিল। একটা মেয়ে আত্মহত্যা করেছিল। এর বিচার হয়নি। আত্মরক্ষামূলক খেলা জুজুৎসুতেও যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছিল। চিরতরে ক্রীড়াঙ্গন থেকে বের করে ক্রীড়াঙ্গন কলঙ্কমুক্ত করা হোক। জাহানারা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয় ক্রীড়ার অংশ। ক্রিকেটের অংশ। সেই ক্রিকেটেই যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে, তাহলে ভবিষ্যতে এ অঙ্গনে মেয়েরা আসতে ভয় পাবে।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!