মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৫, ০২:৪৭ এএম

যুদ্ধবিরতির পরও মানবিক বিপর্যয়

চিকিৎসা-ক্ষুধা-শীতে বিপর্যস্ত গাজা

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৫, ০২:৪৭ এএম

চিকিৎসা-ক্ষুধা-শীতে বিপর্যস্ত গাজা

গাজার দুর্দশা আরও গভীর হওয়ার সাথে সাথে, নেতানিয়াহু মন্ত্রিসভার কাছে প্রকাশ করেছেন যে যুদ্ধবিরতি কত দিন স্থায়ী হবে সে বিষয়ে তিনি অনিশ্চিত। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য খাত বর্তমানে চরম সংকটজনক অবস্থায় আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে যে, ২০১৪ সালের নভেম্বরের পর থেকে গাজায় প্রায় ২১২টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলা হয়েছে, যার ফলে প্রায় ৬০% স্বাস্থ্য অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। এর ফলে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। অনেক হাসপাতাল বর্তমানে আংশিকভাবে কার্যকর আছে এবং অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। ভৌত অবকাঠামো ধ্বংস: ইসরায়েলের হামলায় অনেক হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গেছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। গুরুতর স্বাস্থ্যসংকট: যুদ্ধের কারণে অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, খাদ্য ও বিশুদ্ধ জলের অভাব এবং অন্যান্য ঝুঁকির ফলে মানুষের স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্মীর অভাব: গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে ১৭০০-এর বেশি স্বাস্থ্যসেবা কর্মী নিহত হয়েছেন, যা স্বাস্থ্যসেবার ওপর আরও বড় প্রভাব ফেলেছে। প্রজন্মগত প্রভাব: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে যে এই স্বাস্থ্য সংকটের প্রভাব কয়েক প্রজন্ম ধরে চলতে পারে এবং এর সমাধানে বিপুল পরিমাণ ত্রাণ সহায়তা ও পুনর্গঠনের প্রয়োজন রয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও গাজার সার্বিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি এখনো নাজুক। রোববার এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র খালিল আল-দাকরান বলেন, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে না চলায় স্বাস্থ্যসংকট আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মুখপাত্রের অভিযোগ, ইসরায়েল এখনো গাজায় ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী ঢুকতে দিচ্ছে না এবং আহত ফিলিস্তিনিদের বিদেশে চিকিৎসার জন্য বের হওয়ার অনুমতিও আটকে রাখছে। তার ভাষ্য অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র সম্পন্ন থাকা সত্ত্বেও ১৬ হাজার ৫০০ রোগী ও আহত ব্যক্তিকে গাজা ছাড়তে বাধা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, তীব্র বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ায় অনেক চিকিৎসাকেন্দ্র ও অস্থায়ী মেডিকেল পয়েন্ট অকার্যকর হয়ে পড়েছে। কারণ এসব সেবাকেন্দ্রের টেন্টগুলো উড়ে গেছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজায় টেন্ট, মোবাইল হোম ও নির্মাণসামগ্রী প্রবেশের ব্যবস্থা করতে দাকরান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জরুরি ভিত্তিতে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান, যাতে বাস্তুচ্যুত মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমানো যায়। শুক্রবার থেকে গাজায় ভারি বৃষ্টি, শীত ও ঝোড়ো হাওয়ায় হাজার হাজার তাঁবু ডুবে গেছে, যেখানে ইসরায়েলের দুই বছরের হামলায় বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঝড় রোববার সন্ধ্যার দিকে দুর্বল হতে পারে। গত অক্টোবর ২০২৩ থেকে চালানো ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৬৯ হাজার ২০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৭০০ জনের বেশি আহত হয়েছে। ২ দশমিক ৪ মিলিয়ন জনসংখ্যার গাজা উপত্যকা এখনো চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে, যদিও ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির ফলে হামলা কিছুটা থেমে আছে।

গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ মানবিক ও স্বাস্থ্য সংকটের চিত্র তুলে ধরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, চিকিৎসা জন্য গাজা ত্যাগে বিলম্ব হওয়ায় ৯০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। ইসরায়েলের কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও চিকিৎসা অনুমতি না দেওয়ার ফলে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ডব্লিউএইচও’র তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ১৬ হাজার ৫০০ রোগী এখনো চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে গাজা থেকে বাইরে নেওয়ার অনুমতি অপেক্ষায় আছেন। এদের মধ্যে প্রায় চার হাজার শিশু, যারা জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসাসেবার তীব্র প্রয়োজনীয়তায় ভুগছে। সংস্থাটি সতর্ক করেছে বলেছে, সংকটাপন্ন রোগীদের চিকিৎসা অনুমতি আরও বিলম্বিত হলে তা সরাসরি ‘মৃত্যুদ-’ প্রদানের সমান। প্রতিটি মুহূর্ত তাদের জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডব্লিউএইচও জানায়, জ্বালানি, ওষুধ এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতির কারণে গাজার হাসপাতালগুলো অর্ধেকেরও কম সক্ষমতা নিয়ে চলছে। ফলে গুরুতর রোগীদের সেবা দেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। ২০২৪ সালের মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত চিকিৎসার জন্য রোগীদের গাজার বাইরে সরিয়ে নিতে ডব্লিউএইচও মোট ১১৯টি স্থানান্তর অভিযান পরিচালনা করেছে। এর মাধ্যমে প্রায় আট হাজার রোগীকে গাজার বাইরে চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা সম্ভব হয়, যার মধ্যে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার শিশু। তবে এখনো হাজার হাজার রোগী ভয়াবহ সংকটে আটকে আছে। তাদের চিকিৎসার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, কারণ গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে এবং জীবনরক্ষাকারী সেবা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসুস বলেছেন, গাজার ১৬ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষের জরুরি চিকিৎসাসেবা প্রয়োজন।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) এক্স-পোস্টে তিনি বলেন, গাজা থেকে ১৯ জন গুরুতর অসুস্থ রোগী এবং ৯৩ জন সঙ্গীকে চিকিৎসার জন্য ইতালিতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ঘেব্রেয়েসুস বলেন, ‘আমরা আরও দেশকে গাজা থেকে রোগীদের গ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। কেননা ১৬ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি লোকের এখনো জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন, যা গাজায় পাওয়া যায় না।’ তিনি প্রয়োজনে রোগীদের স্থানান্তরের সুবিধার্থে সমস্ত পথ - বিশেষ করে পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেমের ক্রসিং খুলে দেওয়ার আহ্বান জানান। মেডিভয়েস রিপোর্ট: ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত এক হাজার ৭২৩ জনেরও বেশি স্বাস্থ্যসেবা কর্মী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বুরশ।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!