৯ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে অবরোধ প্রত্যাহার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) তিন শিক্ষার্থীর ওপর হামলা ও দুজনকে মারধরের প্রতিবাদ ও হামলার ঘটনায় জড়িত বহিরাগতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তিসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন সহপাঠীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন তারা। পরে দুপুর ২টার দিকে প্রশাসনের আশ্বাসে ৯ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন আন্দোলনকারীরা।

দাবিগুলো হলো- হামলায় জড়িত দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি নিশ্চিত, দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যদের জবাবদিহির আওতায় আনা এবং ক্যান্টিন কর্তৃপক্ষ সিসিটিভি ফুটেজ মুছে ফেলার কারণে কাজলা ক্যান্টিন বন্ধ করে দিতে হবে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আসিফুর রহমান বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার না করলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে। পুলিশ ফাঁড়ির পাশেই এমন ঘটনা ঘটল, অথচ তারা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি- এটা অগ্রহণযোগ্য। আর ক্যান্টিন কর্তৃপক্ষ সিসিটিভি ফুটেজ ডিলিট করেছে, তাই ক্যান্টিনটি বন্ধ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রশাসন আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। আমাদের বেঁধে দেওয়া দেওয়া ২৪ ঘণ্টার এখনও ৯ ঘণ্টা বাকি আছে। এর মধ্যে সব দাবি মেনে নেওয়া না হলে আবার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক এবং রেলপথ অবরোধ করব।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে অপরাধীদের ধরার চেষ্টা করছে। এসব বিষয়ে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেই কাজ করতে হয়, পুলিশ ভুক্তভোগীদের মামলা নিয়ে তাদের কার্যক্রম চালাবে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে। জনভোগান্তি এড়াতে মহাসড়ক অবরোধ স্থগিত করার বিষয়টি শিক্ষার্থীরা মেনে নিয়েছেন বলে জানান তিনি।

মতিহার থানার ওসি আব্দুল মালেক বলেন, দুজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। কারা হামলা করেছে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে জনি নামে একজনের নাম পাওয়া গেছে। কেন এবং কারা এ হামলা করেছে, তা উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে।

এর আগ গত বুধবার রাত ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের পাশে কাজলা গেইট সংলগ্ন কাজলা ক্যান্টিনে খাবার খাওয়ার সময় ‘ছাত্রলীগ’ আখ্যা দিয়ে রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় একদল লোক। এতে তিন শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নামে আহত শিক্ষার্থীদের সহপাঠীরা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেনÑ ফিন্যান্স বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের ফারাবী, যিনি আগে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং একই বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী বকশী। একই সময় খাবার নিতে গিয়ে নাট্যকলা বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী মিনহাজও হামলার শিকার হন। আহতদের মধ্যে দুজন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে এবং একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন আছেন।