সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২৫, ০২:৪১ এএম

অস্তিত্বের সংকটে ব্রোকারেজ হাউসগুলো

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২৫, ০২:৪১ এএম

অস্তিত্বের সংকটে ব্রোকারেজ হাউসগুলো

দেশের পুঁজিবাজারের প্রধান অংশীজন হিসেবে বিবেচিত ব্রোকারেজ হাউসগুলো তাদের ব্যবসা থেকে ছিটকে দূরে সরে যাচ্ছে। বাজারে লেনদেন কম হওয়ায় ব্যবসা ছোট করে নিচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান। কেউ কেউ সংস্কারকাজের কথা জানিয়ে প্রধান কার্যালয়ের কার্যক্রমও বন্ধ করে রেখেছে। প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গত ২০ নভেম্বর পর্যন্ত শেয়ার লেনদেনের ব্যবসা করা ব্রোকাজের হাউসগুলোর ১১৭টি অফিস বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে শাখা অফিসের পাশাপাশি কয়েকটি ব্রোকাজের হাউসের প্রধান কার্যালয়ও বন্ধ রয়েছে।

তথ্যমতে, চলতি বছর সাদ সিকিউরিটিজের দুটি শাখা অফিস বন্ধ হয়েছে। তাদের মিরপুর ও নারায়ণগঞ্জের অফিস দুটি বন্ধ রাখা হয়েছে। এই সিকিউরিটিজ হাউসটির চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসাইন বলেন, ‘বাজার এখন যে গতিতে চলছে, তাতে শুধু শাখা অফিস নয়, সব অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া উচিত। শাখা অফিস রেখে খরচ বাড়ানো ছাড়া কিছুই হচ্ছে না। যে বাজারে গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে একটি টাকাও বাড়েনি (আইপিও আসেনি), সেই বাজারে বিনিয়োগকারীই বা কেন থাকবে? আর বিনিয়োগকারী নেই বলেই তো আমরা ব্যবসা চালিয়ে নিতে না পেরে শাখা অফিস বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।’

বন্ধ রয়েছে ইউনাইটেড সিকিউরিটিজের প্রধান কার্যালয়। তবে প্রতিষ্ঠানটি এটিকে সরাসরি বন্ধ না বলে সংস্কারকাজের জন্য আপাতত লেনদেন বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে। এই সিকিউরিটিজ হাউসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. সাব্বির হুসাইন বলেন, ‘আমাদের প্রধান কার্যালয়ে রিনোভেশন (সংস্কার) চলছে, এ জন্য আপাতত লেনদেন বন্ধ রাখা হয়েছে। একই ভবনের ৮ তলা থেকে ১১ তলায় অফিস সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এতে ডেকোরেট করতে বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। এই কাজগুলো হয়ে গেলেই লেনদেন কার্যক্রম পুনরায় চালু হবে।’

চলতি বছরে বন্ধ হয়েছে শার্প সিকিউরিটিজের একটি শাখা অফিস। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘প্রধানত দুটি কারণে আমাদের শাখা অফিস বন্ধ করা হয়েছে। একটি হলো, আমরা ক্লায়েন্টদের (বিও হিসাবধারীদের) সেবা অনলাইনে দেওয়ার প্রতি জোর দিচ্ছি। দ্বিতীয়ত, বাজারে যে পরিমাণ লেনদেন হচ্ছে, তাতে খরচ কমানোর কথাও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে ক্লাইন্ট ডিমান্ড (চাহিদা) বাড়লে তখন আবার শাখা চালু রাখার বিষয়ে চিন্তা করব।’

বেনিফিশিয়রি ওনার্স বা বিও হিসাবধারীদের লেনদেনের সুবিধা দিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে নিবন্ধিত ট্রেক সনদ নিয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যভুক্ত হয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে ব্রোকারেজ হাউসগুলো। এখন পর্যন্ত স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেক হোল্ডার হিসেবে ব্যবসা শুরু করেছে ৩০৭টি ব্রোকারেজ হাউস। এর মধ্যে গ্রাহক হিসেবে ঘাটতি থাকাসহ বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে পাঁচটি ব্রোকারেজ হাউসের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। সচল থাকা বাকি ৩০২টি ব্রোকারেজ হাউসের মূল অফিস ও শাখা অফিসের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৫০০।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, ব্রোকারেজ হাউসগুলোর মূল অফিস ও শাখা অফিসের অধিকাংশই রাজধানী ঢাকা ও বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রাম অঞ্চলে। বাজারে লেনদেন কম হওয়া, সনদ নবায়ন না হওয়া এবং অফিস সংস্কারের কথা জানিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে ব্রোকারেজ হাউসগুলোর প্রধান কার্যালয়সহ ১১৭টি শাখা অফিস। এর মধ্যে বিকল্প লেনদেন অফিস না থাকায় কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসের হিসাবধারী এখন শেয়ার লেনদেনও করতে পারছে না।

সনদ নবায়ন জটিলতায় একসময়ের দাপুটে ব্রোকারেজ হাউস বেক্সিমকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের লেনদেন বন্ধ রয়েছে। এই ব্রোকারেজ হাউসটির বিও হিসাবধারী মাসুদ আহমেদের পুঁজিবাজারে ১৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। বিপরীতে তার কেনা সিকিউরিটিজের বাজারমূল্য গত ৯ নভেম্বর দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ, বিনিয়োগের মূলধন থেকে তার অবাস্তবায়িত ক্ষতি (আনরিয়েলাইজড লস) ১০ লাখ ১৫ হাজার টাকা। ওই বিনিয়োগকারী তার পোর্টফোলিওতে থাকা ৯টি সিকিউরিটিজের মধ্যে থেকে একটি বিক্রি করার চেষ্টা করেও হাউস বন্ধ থাকায় লেনদেন করতে পারছেন না।

 ক্ষোভের কণ্ঠে মাসুদ আহমেদ বলেন, ‘আমার টাকার খুবই প্রয়োজন ছিল। তাই লোকসান নিয়েই একটি শেয়ার বিক্রি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু, ফোন দিয়ে জানতে পারলাম ব্রোকারেজ হাউসের লেনদেন বন্ধ রয়েছে। বিপদের সময়ে যদি টাকা তুলতে না পারি, এমন বিনিয়োগ দিয়ে কী হবে? লোকসান কাভার করতে পারলে এই বাজারে আর থাকব না। এখানে লুটপাট করে বড়রা আর দায় নিতে হয় আমাদের মতো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!