দেশে ‘ধর্মের নামে একটি গোষ্ঠী বিভাজনের পথ সৃষ্টি করছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশে একটা বড় বিভাজনের পথ তৈরি করার চেষ্টা চলছে, একটা গোষ্ঠী, একটা মহল ধর্মের নামে বাংলাদেশে একটা বিভাজনের পথ সৃষ্টি করতে চায়। আমরা বাংলাদেশের মানুষ অবশ্যই ধর্মভীরু, অবশ্যই ধর্মকে এখানে আমরা সবাই মেনে চলি।’
গতকাল রোববার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনার কর্মসূচির’ অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিকেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন।
ধর্ম নিয়ে রাষ্ট্রকে বিভাজন করা বা সমাজকে বিভাজন করায় বিশ্বাস করি না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা মনে করি যে বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষ একসাথে বাস করবে, একইভাবে থাকবে এবং ১৯৭১ সালে যে স্বাধীনতাযুদ্ধ হয়েছিল, সেই যুদ্ধের মূল যে ভিত্তি ছিল, সেটা হলো সকলের বাংলাদেশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নেতা যে স্লোগানটি দিয়েছেন, সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে যেমন জাতীয় ক্ষেত্রে কিংবা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একইভাবে গুরুত্বপূর্ণ ‘সবার আগে বাংলাদেশ’। এই কথাটা আমাদের মুখের মধ্যে গেঁথে নিতে হবে। এই বিষয়টা নিয়েই আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আমি আশা করব, আজকে সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে, তাদের পরাজিত করে সব অপপ্রয়াসকে পরাজিত করে আমাদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এবং তার সামনের সারিতে যারা থাকবে তারা হচ্ছে এই ছাত্রদল, যারা ভ্যানগার্ড হিসেবে, অগ্রবর্তী সৈনিক হিসেবে থাকবে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেওয়া পরিকল্পনাগুলো আগামীতে বাস্তবায়ন করার মধ্য দিয়ে দেশকে জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল । তিনি বলেন, ‘বিএনপি হচ্ছে সেই দল, যেই দল অতীতে যেমন সমস্ত সংস্কার করেছে, রাজনৈতিক সংস্কার এবং অর্থনৈতিক সংস্কার বাংলাদেশের সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে। ঠিক একইভাবে আগামীতেও বাংলাদেশ অবশ্যই তারেক রহমান সাহেবের নেতৃত্বে বিএনপির নেতৃত্বে অন্যতম একটা সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হবেÑএই বিশ্বাস আমাদের আছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসনের পরে গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়ার এখন একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অনেক বাধা-প্রতিবন্ধকতা আসছে। কিন্তু এগুলো এড়িয়ে আমাদের সাফল্য অর্জন করতে হবে। আজকে আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম চক্রান্ত হয়, প্রচারণা চলে, অপপ্রচার চলে। এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধেও আমাদের কাজ করতে হবে। আমি সব সময় বলি, সাইবার ওয়ারে যদি আমি যোদ্ধা হতে না পারি, তাহলে কিন্তু আমি পরাজিত হয়ে যাবÑ এটা ইয়াং জেনারেশনকে করতে হবে।’
তরুণদের এগিয়ে আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা যখন ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছিলাম, আন্দোলন করছিলামÑ বিভাগীয় সমাবেশগুলোতে সব সময় একটি কথাই খুব জোর দিয়ে বলতাম যে, আমাদের তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে, তরুণদের ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। এটা যেদিন হয়েছে, সেদিনই এই পরিবর্তনটা এসেছে।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব ও দেশ গড়ার পরিকল্পনা শীর্ষক কমিটির আহ্বায়ক রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন