বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রহিম শেখ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২৫, ০৭:০৩ এএম

ডিজিটাল লেনদেনে আর্থিক খাত চাঙ্গা

রহিম শেখ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২৫, ০৭:০৩ এএম

ডিজিটাল লেনদেনে আর্থিক খাত চাঙ্গা

গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর দেশের ব্যাংকগুলোয় অর্থ লেনদেনে যে ভাটা পড়েছিল, তা কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে। গত আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বর মাসে ব্যাংক লেনদেনের প্রায় সব মাধ্যমে গতি ফিরেছে। এর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যাংকিং, ই-কমার্স, ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি), ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বেড়েছে লেনদেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে অর্থ লেনদেনের এ চিত্র পাওয়া গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দেশের ব্যাংকগুলোয় গত সেপ্টেম্বরে চেকের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন হয়েছিল তিন লাখ ৮০ হাজার ৬১৮ কোটি টাকা, যা আগস্টে ছিল তিন লাখ ৫০ হাজার ৫২ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে আট দশমিক ৭৩ শতাংশ। দেশে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেনের প্রধান মাধ্যম আরটিজিএস। আগস্টের তুলনায়  সেপ্টেম্বর মাসে এ মাধ্যমে লেনদেন বেড়েছে ১৭ দশমিক পাঁচ শতাংশ। আগস্টে আরটিজিএস মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে পাঁচ লাখ ৪৩ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে আরটিজিএস মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ছয় লাখ ৩৬ হাজার ৬৯ কোটি টাকা টাকা। এছাড়া ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশের (এনপিএসবি) মাধ্যমে গত সেপ্টেম্বরে লেনদেন হয়েছে ৩৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। এক মাসের ব্যবধানে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ছয় দশমিক ৩৪ শতাংশ। তবে গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ডস্ ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক (বিইএফটিএন) সেবায় লেনদেন কমেছে প্রায় ১৮ শতাংশ। লেনদেন সাত দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়েছে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারে (ইএফটি)। আগস্টে ইএফটি ব্যবহার করে লেনদেন হয়েছিল ৬৯ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে এসে তা ৭৪ হাজার ৮১৬ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। নগদ অর্থ উত্তোলন ও লেনদেনের জন্য জনপ্রিয় মাধ্যমগুলোর একটি ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড। আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বর মাসে এ দুটি মাধ্যমেও লেনদেন বেড়েছে। আগস্টে কার্ডভিত্তিক লেনদেন ছিল ৪৫ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে লেনদেন হয়েছে ৪৬ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে লেনদেন বেড়েছে দুই দশমিক আট শতাংশ। তবে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের লেনদেন কিছুটা কমেছে। আগস্টে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছিল এক লাখ ১২ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে তা কমে দাঁড়ায় এক লাখ আট হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। এক মাসে হ্রাস পেয়েছে তিন দশমিক ২৭ শতাংশ। তবে সেপ্টেম্বরে লেনদেনের পরিমাণ কমলেও ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবায় গ্রাহকের পরিমাণ বেড়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে এক কোটি ২২ লাখ গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাদের লেনদেন সম্পন্ন করেছেন।

এর মধ্যে পুরুষ ৯৪ লাখ এবং নারী সেবা গ্রহীতার সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ। একই সঙ্গে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যাও বেড়েছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে ৭৫ লাখ গ্রাহক বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের লেনদেন করেছেন। এরমধ্যে পুরুষ ৫৫ লাখ এবং নারী সেবা গ্রহীতার সংখ্যা ছিল ১৫ লাখ।

অর্থ লেনদেন বেড়েছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সেবা হিসেবে পরিচিত এজেন্ট ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (এমএফএস) মাধ্যমেও। আগস্টে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন ছিল এক লাখ ৫১ হাজার ২৩ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে তা এক লাখ ৫৩ হাজার ৯৫১ কোটি টাকায় ওঠে। এ ক্ষেত্রে লেনদেন বেড়েছে এক দশমিক ৯৪ শতাংশ। লেনদেন বেড়েছে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবায়। আগস্টে এ মাধ্যমে লেনদেন হয়েছিল ৬৩ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে লেনদেন হয়েছে ৬৬ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন বেড়েছে পাঁচ দশমিক ২৫ শতাংশ। একই সঙ্গে গত সেপ্টেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৫১ লাখ। গত সেপ্টেম্বর শেষে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৭ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা এবং ঋণ বিতরণ করা হয়েছে এক হাজার ১১০ কোটি টাকা। গত আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বর মাসে স্কুল ব্যাংকিংয়ে হিসাব বেড়েছে শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বর মাস শেষে স্কুল ব্যাংকিংয়ের হিসাব সংখ্যা ছিল ৭৫ লাখ ৭০ হাজার। তবে ব্যাংক হিসাব বাড়লেও আমানতের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। গত সেপ্টেম্বর মাস শেষে দেশের ক্ষুধে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক হিসাবে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১ কোটি টাকা।

জানতে চাইলে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, জুলাই-আগস্ট ছিল দেশের নতুন ইতিহাস সৃষ্টির মাস। এ দুই মাসে অর্থনৈতিক কর্মকা- স্বাভাবিক ছিল না। তাই এর বিরূপ প্রভাব ব্যাংকিং লেনদেনের ওপর পড়েছে। আগের যেকোনো মাসের তুলনায় ডিসেম্বর-জানুয়ারি অর্থনৈতিক কর্মকা- ভালো ছিল। এ কারণে ব্যাংকগুলোয় লেনদেন বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি দুই বছর আগের তুলনায় ভালো। রেমিট্যান্সে বড় প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। দেশের ব্যালান্স অব পেমেন্টের (বিওপি) ঘাটতি কমছে। ডলারের বিনিময় হার ও চাহিদাও স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। এ প্রসঙ্গে বিশ^ব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘৫ আগস্টের আগের অবস্থা আর পরের অবস্থা পুরোটাই বিপরীত। ফলে এখন মানুষের আস্থা বাড়ছে। এ ছাড়া বহির্বিশে^ও একটা ইতিবাচক সিগন্যাল যাচ্ছে, যা আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করছে।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!