শুক্রবার, ০৮ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৫, ০৩:০৯ এএম

ফিলিস্তিনিদের নজরদারিতে মাইক্রোসফট ক্লাউড

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৫, ০৩:০৯ এএম

ফিলিস্তিনিদের নজরদারিতে মাইক্রোসফট ক্লাউড

আজ্যুরের ‘অসীম’ স্টোরেজ ক্ষমতা। আর এটি ব্যবহার করে ইউনিট ৮২০০ প্রতিদিন গাজা ও পশ্চিম তীর থেকে লক্ষাধিক ফোন কল রেকর্ড করতে থাকে। শুধু মেটাডেটা নয়, পুরো কথোপকথনই সংরক্ষিত হয়Ñ যার মাধ্যমে গোয়েন্দারা আগে বা পরবর্তী সময়ে একজন ব্যক্তির কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করতে পারেন।

ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ইউনিট ৮২০০, প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফটের আজ্যুর ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে প্রতিদিন কীভাবে লাখ লাখ ফিলিস্তিনির মোবাইল ফোনকল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করছে, সেটাই উঠে এসেছে দ্য গার্ডিয়ান, ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি প্রকাশনা প্লাস ৯৭২ ম্যাগাজিন এবং হিব্রু ভাষার সংবাদমাধ্যম ‘লোকাল কল’-এর যৌথ অনুসন্ধানে। প্রকল্পটি এতটাই ব্যাপক যে, সংশ্লিষ্টদের ভেতরে স্লোগান চালু হয়েছে ‘প্রতি ঘণ্টায় এক মিলিয়ন কল।’ ২০২১ সালের শেষের দিকে মাইক্রোসফট সিইও সত্য নাদেলার সঙ্গে ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ইউনিট ৮২০০ প্রধান ইওসি সারিয়েলের একটি বৈঠক হয় যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে মাইক্রোসফট সদর দপ্তরে।

সেখানে মাইক্রোসফটের আজ্যুর ক্লাউড প্ল্যাটফরমে ইসরায়েলের গোপন গোয়েন্দা ডেটা সংরক্ষণের প্রস্তাব দেন সারিয়েল। নাদেলা প্রকল্পটির প্রকৃত উদ্দেশ্য জানতেন নাÍ মাইক্রোসফট এমন দাবি করলেও গোপন নথি বলছে, তিনি ৭০% ডেটা স্থানান্তরকে সমর্থন দেন এবং বলেন, ‘এই অংশীদারত্ব গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ ২০১৫ সালে ‘লোন উলফ’ হামলার পর ইসরায়েলি গোয়েন্দারা বুঝতে পারেন যে, আগের মতো নির্দিষ্ট লক্ষ্যের ওপর নজরদারি আর যথেষ্ট নয়। এরপর শুরু হয় পুরো জনগোষ্ঠীকে নজরদারির আওতায় আনার পরিকল্পনা। আজ্যুরের ‘অসীম’ স্টোরেজ ক্ষমতা ব্যবহার করে ইউনিট ৮২০০ প্রতিদিন গাজা ও পশ্চিম তীর থেকে লক্ষাধিক ফোন কল রেকর্ড করতে থাকে। শুধু মেটাডেটা নয়, পুরো কথোপকথনই সংরক্ষিত হয়Ñ যার মাধ্যমে গোয়েন্দারা আগে বা পরবর্তী সময়ে একজন ব্যক্তির কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করতে পারেন। সূত্র বলছে, এই ফোনকল বিশ্লেষণ করে বোমা হামলার টার্গেটও নির্ধারণ করা হয়েছে, বিশেষ করে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়। প্রকল্পটির আরও একটি অংশ রয়েছে ‘নয়েজি মেসেজ’ নামে। ফিলিস্তিনিদের পাঠানো টেক্সট মেসেজ স্ক্যান করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করে ফিচারটি। এতে শব্দের ওপর ভিত্তি করে ‘সন্ত্রাসী ঝুঁকি’ নির্ধারণ করা হয়।

এদিকে ইসরায়েল বৃহস্পতিবার একটি নতুন পর্যায়ক্রমিক সামরিক পরিকল্পনার অনুমোদন দিয়েছে। জানা গেছে, যার মাধ্যমে গাজা উপত্যকার বড় একটি অংশ দখল করা হবে এবং আগামী পাঁচ মাসে প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে বাস্তুচ্যুত করা হতে পারেÑ এমনটাই জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সমর্থনে থাকা এই পরিকল্পনার শুরু হবে গাজা সিটি এবং মধ্যবর্তী শরণার্থী শিবিরগুলোর ওপর আক্রমণের মাধ্যমে। টাইমস অব ইসরায়েলের মতে, এই আক্রমণের ফলে বহু মানুষ দক্ষিণে অবস্থিত ‘মাওয়াসি মানবিক অঞ্চল’-এর দিকে ঠেলে দেওয়া হবে। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হচ্ছে হামাসের অবশিষ্ট শক্তি ধ্বংস করা এবং গাজায় এখনো যেসব জিম্মি আটকে রাখা হয়েছেÑ প্রায় ৫০ জন, যাদের মধ্যে প্রায় ২০ জন জীবিত বলে ধারণাÑ তাদের মুক্তির জন্য চাপ সৃষ্টি করা। যদিও ইসরায়েলের অভ্যন্তরেই এই পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে, বিশেষ করে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এমন অভিযানে জিম্মিদের জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে।

তবুও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বসা ইসরায়েলের উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় নেতানিয়াহু যথেষ্ট সমর্থন পেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে, গাজায় মানবিক সংকট আরও গভীর হচ্ছে বলে সতর্ক করছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। একটি বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষক সংস্থা পরিস্থিতিকে একটি ‘দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি’ বলে উল্লেখ করেছে। শিশুদের মধ্যে অপুষ্টিজনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, এবং এখনো পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় (বৃহস্পতিবার সকালে অন্তত ১৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আর গতকাল বুধবার (৬ আগস্ট) এক দিনে ৪৪ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী, যার মধ্যে ১৮ জনই ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত হয়েছেন। এদিকে না খেয়ে অপুষ্টির কারণে মারা গেছেন আরও অন্তত ৫ ফিলিস্তিনি। এ নিয়ে যুদ্ধের কারণে অনাহার, অপুষ্টির শিকার হয়ে উপত্যকাটিতে মারা গেছেন ১৯৩ জন। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলে অবরোধের কারণে গাজায় শতাধিক অপরিণত নবজাতক চরম মৃত্যুঝুঁকিতে আছে। কারণ অবরোধের গাজায় জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় তাদের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

যুদ্ধ শুরুর পর গত ২২ মাসে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় প্রাণ গেছে ৬১ হাজার ১৫৮ জনের, আহত হয়েছে প্রায় দেড় লাখ মানুষ। এদিকে বুধবার জরুরি চিকিৎসার জন্য যুদ্ধে আহত ১৫ শিশুকে উদ্ধার করে জর্ডানে পাঠানো হয়েছে। এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় গাজার ৮৬ শতাংশ কৃষিজমি ধ্বংস হয়ে গেছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!