বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ১৫৪ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদের মধ্যে ৫৯ জন শিক্ষক রয়েছেন।
সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষকদের মধ্যে ৬ জনকে বরখাস্ত, ১২ জনকে অপসারণ, ৯ জনকে নিম্নপদে অবনমন, ১ জনের পদোন্নতি ও বেতন বৃদ্ধি স্থগিত এবং ৩১ জনকে তিরস্কার করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের মধ্যে ৮ জনকে বরখাস্ত, ৮ জনকে অপসারণ, ৭ জনকে তিরস্কার এবং ১ জনকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়েছে।
কর্মচারীদের মধ্যে ২ জনকে বরখাস্ত, ১ জনকে চাকরি থেকে অপসারণ এবং ১৯ জনকে তিরস্কার করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১০ জনকে আজীবন বহিষ্কার এবং ৩৯ জনের সনদপত্র বাতিল করা হয়েছে।
এর আগে, ১৮ মে ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২৮তম সিন্ডিকেট অধিবেশনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিশনের শাস্তির সুপারিশ অনুমোদিত হয়। এর ধারাবাহিকতায় আজ প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণের কারণে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, হুমকি-ধামকি এবং শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্টের অভিযোগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সেইদিন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা বহিরাগতদের নিয়ে ‘শান্তি মিছিল’ আয়োজন করে ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ ও ‘ঘরে ঘরে খবর দে, এক দফার কবর দে’ স্লোগান দিয়ে নিরীহ ছাত্র ও শিক্ষকদের ওপর হামলা চালায়। এর দায়ে ৭ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার এবং ২৪ জনের সনদপত্র বাতিল করা হয়।
এর পাশাপাশি, ২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর আশরাফুল হক হলে চারজন শিক্ষার্থীকে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় ২১ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার জেরে ১৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৫ জনের সনদপত্র বাতিল ও ৩ জনকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ছাড়া দুই শিক্ষককে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং একজন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।
বাকৃবির তদন্ত কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান সরকার জানান, তদন্ত কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :