যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী রক্ষণশীল রাজনৈতিক কর্মী এবং টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএর সহ-প্রতিষ্ঠাতা চার্লি কির্ক। তিনি ইউটাহ ভ্যালি ইউনিভার্সিটিতে বক্তৃতা দেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। চার্লি কির্ক ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান রক্ষণশীল কর্মী এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন ঘনিষ্ঠ মিত্র। রয়টার্স জানিয়েছে, গুলির ছয় ঘণ্টা পার হলেও পুলিশ কোনো সন্দেহভাজনের নাম জানাতে পারেনি। কাউকে আটকও করা হয়নি। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সূত্র জানায়, একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল, পরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এফবিআই পরিচালক কাশ প্যাটেল সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। ইউটাহ গভর্নর জানান, একজন ‘পারসন অব ইন্টারেস্টকে’ জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তবে তার পরিচয় বা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার তথ্য প্রকাশ করেননি। জননিরাপত্তা বিভাগের কমিশনার বো ম্যাসন বলেন, ‘৩১ বছর বয়সি কির্ককে হত্যাকারী এখনও ধরা পড়েনি।’ পুলিশের ধারণা, হামলাকারী দূরের কোনো ভবনের ছাদ থেকে গুলি চালিয়েছে। ঘটনার সময় অনুষ্ঠানে প্রায় ৩ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ প্রধান জেফ লং জানিয়েছেন, ছয়জন কর্মকর্তা দায়িত্বে ছিলেন এবং কার্কের নিরাপত্তা দলের সঙ্গে সমন্বয় করেছিলেন। তার মৃত্যুর ঘটনায় খুবই হতাশ হয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘এটা আমেরিকার জন্য অন্ধকার মুহূর্ত।’ হত্যাকারীকে খুঁজে বের করতে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।
একজন স্থপতির ছেলে কির্ক বড় হয়েছেন শিকাগোর অভিজাত উপশহর প্রসপেক্ট হাইটসে। তিনি শিকাগোর একটি কমিউনিটি কলেজে পড়াশোনা করছিলেন, কিন্তু রাজনীতিতে পুরোপুরি মনোনিবেশ করার জন্য পড়া ছেড়ে দেন। মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ প্রতিষ্ঠা করেন, যার লক্ষ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের উদারপন্থি কলেজগুলোতে রক্ষণশীল মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়া। গত বছরের নির্বাচনে ট্রাম্প এবং অন্যান্য রিপাবলিকান প্রার্থীদের জন্য ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে এই সংগঠনটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কির্ককে বহু নতুন ভোটার নিবন্ধন করানো এবং অ্যারিজোনায় ট্রাম্পের পক্ষে জনমত পরিবর্তনে বিশেষ অবদান রাখার জন্য প্রশংসা করা হয়। কির্ক ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বক্তব্য এবং কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ে সংশয়বাদী অবস্থানের জন্যও পরিচিত ছিলেন। ২০২০ সালে, তিনি প্রকাশ্যে সেই ভুয়া দাবি প্রচার করেন যে, জো বাইডেনের জয়ে ট্রাম্পের কাছ থেকে নির্বাচন চুরি করা হয়েছে।
বুধবার রাতেই ট্রাম্প ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ কির্ককে স্মরণ করে ট্রাম্প লেখেন, ‘মহান এবং এমনকি কিংবদন্তিতুল্য চার্লি কির্ক এখন আর নেই। যুক্তরাষ্ট্রের যুবসমাজের হৃদয়কে কেউ এতটা ভালোভাবে বুঝত না যতটা চার্লি বুঝত।’ হোয়াইট হাউস থেকে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প বলেন, তার প্রশাসন অবশ্যই হামলাকারীকে খুঁজে বের করবে। তিনি আরও সতর্ক করেছেন, যারা ঘটনা সমর্থন করেছে, অর্থ জুগিয়েছে বা এতে সম্পৃক্ত, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। ট্রাম্প চার্লি কার্কের সম্মানে রোববার পর্যন্ত সব সরকারি ভবনে পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।