মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২৫, ১২:৩৯ এএম

৭৩০ দিনের গণহত্যা

বিধ্বস্ত গাজায় কেবলই আর্তনাদ

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২৫, ১২:৩৯ এএম

বিধ্বস্ত গাজায় কেবলই আর্তনাদ

দুই বছর আগে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে একাধিক যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে দেখেছি। এখন যুদ্ধ বন্ধ হওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছি। আমরা পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি না। আমরা কি রাস্তায় থাকব? গাজার আরেক বাসিন্দা বলেন, সংকীর্ণ জায়গায় কয়েক ডজন পরিবার একসঙ্গে তাঁবুতে বাস করছি। খাবার ও পানীয় জল পাওয়া যাচ্ছে না। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের হামলায় গাজার ১৯ লাখ মানুষÑ অর্থাৎ ৯০ শতাংশ জনসংখ্যাই জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। রয়টার্সকে বলেন, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি নাগরিক আহমেদ আসাদ। যুদ্ধ যখন তৃতীয় বছরে প্রবেশ করছে, তখন গাজা প্রায় পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে। মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে, ক্ষুধার্ত অবস্থায় বেঁচে থাকার লড়াই করছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এটিকে বলছেÑ ‘৭৩০ দিনের গণহত্যা ও জাতিগত নিধন।’

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের দুই বছর পূর্ণ হলো আজ ৭ অক্টোবর। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে ৬৭ হাজারের বেশি মানুষ এবং নিখোঁজ আরও প্রায় ১০ হাজার। গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে মিসরে আলোচনার আগ মুহূর্তে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে চারজন আশ্রয়প্রার্থীও রয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার ভিত্তিতে ইসরায়েল ও হামাস সোমবার (৬ অক্টোবর) মিসরের শার্ম আল-শেখে পরোক্ষ আলোচনায় বসে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, গাজায় শান্তি ফেরানোর প্রথম ধাপের আলোচনা সহজ হলেও দ্বিতীয় ধাপে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। আলোচনা শুরু হলেও চুক্তির নিশ্চয়তা নেই। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুমকি দিয়েছেন, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ ছাড়া হামলা বন্ধ হবে না। বিপরীতে হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জিম্মিদের মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই হামলা বন্ধ করতে হবে।

বিশ্বনেতাদের দৌড়াদৌড়িতেও গাজার স্থলভাগে কোনো পরিবর্তন আসেনি। ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনিদের ধৈর্য ভেঙে পড়ছে। ট্রাম্পের বোমাবর্ষণ বন্ধের আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ও ট্যাংক শনিবার রাতভর গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় আক্রমণ করেছে। গাজা শহরের পশ্চিমে আল-তায়ারান জংশনে একটি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টে সোমবার, (০৬ অক্টোবর ২০২৫) ভয়াবহ বিমান হামলা হয়েছে। গাজা শান্তিচুক্তি আলোচনায় ইসরায়েলের প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেবেন কৌশলগতবিষয়ক মন্ত্রী রন ডার্মার। বন্দি সমস্যা সমাধানে দায়িত্বপ্রাপ্ত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর আস্থাভাজন সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। তার সঙ্গে রয়েছেন গাল হির্শ। যিনি ইসরায়েলের বন্দি ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করছেন। এ ছাড়া রয়েছেন সেনাবাহিনীর বন্দি ইউনিটের প্রধান মেজর জেনারেল নিটজান আলোন এবং শিন বেট নিরাপত্তা সংস্থার একজন প্রতিনিধি। হামাস এখনো তাদের দল সম্পর্কে খুব বেশি কিছু প্রকাশ করেনি। মার্কিন মধ্যস্থতাকারীদলে রয়েছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং তার উপদেষ্টা জামাতা জ্যারেড কুশনার।

এরই মধ্যে ইসরায়েল প্রথম ধাপে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। শনিবার রাতেই সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, উপত্যকাটি থেকে প্রথম ধাপে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়েছে ইসরায়েল। একই সঙ্গে হামাস নিশ্চিত করলেই যুদ্ধবিরতি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে বলে ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বন্দিবিনিময় দ্রুত শুরুর আহ্বান জানিয়েছে হামাসও। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ ও গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় থাকা কর্মীদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ইউরোপ। যুক্তরাজ্য, ইতালি, পর্তুগাল, স্পেনের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেছে লাখো মানুষ। শনিবার লন্ডনে হওয়া বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে এবং কমপক্ষে ৪৪২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দ্য গার্ডিয়ান এ সংখ্যা ৫০০ বলে জানিয়েছে। পুলিশের তথ্য মতে, স্পেনে ও বার্সেলোনায় প্রায় ৭০,০০০ মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। অন্যদিকে মাদ্রিদের সরকার জানিয়েছে, রাজধানীতে প্রায় ৯২,০০০ জন বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডামের রাস্তায় নেমেছে হাজার হাজার মানুষ। তৃতীয়বারের মতো গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ করছে ডাচ জনগণ। সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ চলছে ইতালিতে।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া অভিযানে ১১৫২ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৪০ শতাংশের বেশি সেনার বয়স ২১ বছরের কম। খবর জেরুজালেম পোস্টের। সোমবার (৬ অক্টোবর) এ তথ্য প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়টি জানিয়েছে, নিহত সেনাদের মধ্যে ১৪১ জনের বয়স ৪০-এর বেশি। আর অধিকাংশই ছিলেন রিজার্ভ সদস্য ও কর্মকর্তা। ইসরায়েলি মন্ত্রণালয় বলছে, ৬,৫০০-এর বেশি পরিবারের সদস্য শোকগ্রস্ত পরিবারের তালিকায় যুক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ১,৯৭৩ জন শোকাহত বাবা-মা, ৩৫১ জন বিধবা, ৮৮৫ জন অনাথ শিশু এবং ৩,৪৮১ জন শোকাহত ভাই-বোন।’

দুই বছরে উপত্যকাটিতে নিহত হয়েছে ৬৭ হাজারের বেশি মানুষ এবং নিখোঁজ আরও প্রায় ১০ হাজার। এ ছাড়া, এই সময়ের মধ্যে অঞ্চলটিতে ২ লাখ টনের বেশি বিস্ফোরক ফেলেছে ইসরায়েল। লেবাননের সংবাদমাধ্যম আল-মায়েদিনের খবরে বলা হয়েছে, গাজা সরকারের জনসংযোগ কার্যালয় অঞ্চলটিকে ইসরায়েলি আগ্রাসনের দুই বছরকে কেন্দ্র করে নতুন এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনে ভয়াবহ ধ্বংস, গণহত্যা, লাখো মানুষের বাস্তুচ্যুতি এবং দশ হাজারের বেশি সাধারণ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। রোববার প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে জানানো হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ৭৬ হাজার ৬০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বা নিখোঁজ আছেন। এর মধ্যে ৬৭ হাজার ১৩৯ জনের মৃত্যুর তথ্য হাসপাতাল থেকে নিশ্চিত হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৯ হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ, যাদের অনেককে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!