রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৫, ০১:১৯ এএম

কড়া পরিণতির হুঁশিয়ারি

 ফের মুখোমুখি পাকিস্তান-আফগানিস্তান

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৫, ০১:১৯ এএম

 ফের মুখোমুখি পাকিস্তান-আফগানিস্তান

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনাপূর্ণ। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর ইসলামাবাদ অভিযোগ করে, কাবুল টিটিপি-কে আশ্রয় দিচ্ছেÑ যারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ওপর হামলার জন্য দায়ী। অন্যদিকে, তালেবান নেতারা দাবি করেন, পাকিস্তান আফগান ভূখ-ে হামলার অজুহাতে তাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করছে। দুই দেশের সীমান্তে সহিংসতা ও হামলার পরিমাণ বাড়তে থাকায় বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে কূটনৈতিক অস্থিরতার জন্ম নিতে পারেÑ বিশেষ করে ভারত-তালেবান ঘনিষ্ঠতা ও পাকিস্তানের নিরাপত্তা-উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে।

কাবুলের পর পকতিকা প্রদেশের মারঘি এলাকায় একটি বাজারে শুক্রবার পাক সেনা বোমা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে আফগান প্রতিরক্ষা দপ্তর। সরাসরি সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলা হয়েছে পাক সেনার বিরুদ্ধে। রাজধানী কাবুলের পর এবার সীমান্তবর্তী আফগান প্রদেশ পকতিকায় হামলার অভিযোগ উঠল পাকিস্তানি সেনার বিরুদ্ধে। তা নিয়ে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার সরাসরি হুঁশিয়ারি দিল পাকিস্তানকে। তালেবান প্রতিরক্ষা দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমাদের সার্বভৌম ভূখ- লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। নজিরবিহীন হিংসা এবং প্ররোচনামূলক এই পদক্ষেপের পরিণাম ভালো হবে না।’ ঘটনাচক্রে, আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মহম্মদ ইয়াকুব তালেবানের প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের পুত্র। ইয়াকুব আফগান তালেবানের অন্দরে ‘পাকিস্তান ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত ‘হাক্কানি নেটওয়ার্কে’র বিরোধী বলে পরিচিত। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল ও পূর্বাঞ্চলীয় পাকতিকা প্রদেশে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে শুক্রবার।

ঘটনায় পাকিস্তানকে সরাসরি দায়ী করেছে তালেবান সরকার। বৃহস্পতিবারের এ ঘটনায় দুই দেশের পুরোনো বৈরিতা আবারও সামনে এসেছে। তালেবান সরকারের মতে, পাকিস্তান তাদের ভূখ-ে হামলা চালিয়েছে, যদিও ইসলামাবাদ আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগটি স্বীকার বা অস্বীকার করেনি। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, কাবুল ও পাকতিকায় সংঘটিত বিস্ফোরণের জন্য পাকিস্তান দায়ী। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো প্রমাণ বা তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। এর আগের দিন তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ কাবুলে একটি বিস্ফোরণের ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন এবং জনগণের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তান অভিযান চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শফকাত আলি খান। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিমান হামলা চালানোর পর সাপ্তাহিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেন তিনি। যদিও কাবুলে হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তিনি বলেন, ‘এখন আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি, পাকিস্তান তার জনগণের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিতের অটল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে।

আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা সংস্থা সীমান্ত অঞ্চলে লক্ষ্যভিত্তিক অভিযান চালাচ্ছে, যেন আমাদের নাগরিকদের সন্ত্রাসী হুমকি থেকে রক্ষা করা যায়, বিশেষত ফিতনা আল-খোয়ারিজ বা টিটিপির মতো গোষ্ঠীর হুমকি থেকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এসব অভিযান বিশ্বাসযোগ্য ও কার্যকর গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে পরিকল্পিত এবং নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করা হয়।’ মুখপাত্র আরও বলেন, ‘পাকিস্তান আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান জানায় এবং সন্ত্রাসবিরোধী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রতিবেশীর সঙ্গে সংলাপ ও সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতিতে অটল।’

শফকাত আলি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আফগানিস্তানের নিজের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হওয়া উচিত এবং টিটিপির মতো সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোরভাবে মোকাবিলা করা প্রয়োজন।’ মুখপাত্র জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা এই বিষয়টির গুরুত্ব সম্পর্কে বারবার জোর দিয়েছি এবং প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সিনিয়র কর্মকর্তাদের স্তর পর্যন্ত আমরা আমাদের অবস্থান স্পষ্ট ও দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করেছি।’ অস্থায়ী আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানের যেকোনো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অন্য দেশের সঙ্গে সেই দুই দেশের বিষয়। আফগানিস্তান একটি সার্বভৌম, স্বাধীন দেশ। এ নিয়ে পাকিস্তানের কিছু বলার নেই।’

আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি এক সপ্তাহের সফরে ভারতে পৌঁছেছেন, একসময় যা ছিল কল্পনাতীত। ২০২১ সালে পশ্চিমা মদদপুষ্ট আশরাফ গনি সরকারকে হটিয়ে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার পর এটাই তাদের সবচেয়ে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধির প্রথম ভারত সফর। আট দিনের সফরে মুত্তাকি দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করবেন। এদিকে ভারত সফরে এসে পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি।

যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানের মাটিতে কোনো বিদেশি শক্তির নিয়ন্ত্রণ মেনে নেওয়া হবে না।’ মূলত কিছুদিন আগে বাগরাম বিমানঘাঁটিকে আবার মার্কিন নিয়ন্ত্রণে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে ট্রাম্পের আহ্বান প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেন মুত্তাকি। একই সঙ্গে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। ভারত সফরের দ্বিতীয় দিনে দিল্লির আফগান দূতাবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব মন্তব্য করেন। ২০২১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর এই প্রথমবার ভারত সফরে এসেছেন তালেবান শাসিত আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা শিথিলের পর সফরের সুযোগ পান তিনি। সম্প্রতি বাগরাম বিমানঘাঁটিকে মার্কিন নিয়ন্ত্রণে ফেরানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আফগানিস্তান দৃঢ়ভাবে এর বিরোধিতা করে। ভারত সফরের দ্বিতীয় দিনে দিল্লিতে বসেই সেই প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে বার্তা দিয়েছেন মুত্তাকি। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তান ইতিমধ্যে এই সত্যের সাক্ষ্য দিয়েছে যে আমরা সেখানে কখনোই কোনো সামরিক বাহিনীকে গ্রহণ করিনি এবং কখনো তা করব না। আফগানিস্তান একটা সার্বভৌম দেশ এবং সেটাই থাকবে। আপনি যদি সম্পর্ক চান তাহলে একটি কূটনৈতিক মিশনের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন, কিন্তু সামরিক পোশাক পরা কাউকে গ্রহণ করি না আমরা।’

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে মুত্তাকির শুক্রবার বৈঠকের সময় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা করেনÑ আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে দূতাবাস ফের চালু করা হবে।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!