রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৫, ০১:২২ এএম

নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী কে এই মারিয়া কোরিনা মাচাদো

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৫, ০১:২২ এএম

নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী কে এই মারিয়া কোরিনা মাচাদো

এক বছর ধরে আত্মগোপনে। তাঁর জীবন গুরুতর হুমকির মুখে থাকা সত্ত্বেও তিনি ভেনেজুয়েলায় নিজ দেশেই আছেন, যা লাখ লাখ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। তিনি দেশের বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করেছেন। ভেনেজুয়েলায় সামরিকীকরণের বিরুদ্ধে তিনি সব সময় সোচ্চার ছিলেন। শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সব সময় ছিলেন অটল। ভেনেজুয়েলায় গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো।

সেই তিনিই পেলেন ২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার। নোবেল কমিটি তাদের ঘোষণায় জানায়, তারা সব সময় ‘সেই সাহসী নারী ও পুরুষদের সম্মান জানায়, যারা দমন-পীড়নের মুখে স্বাধীনতার আশাকে বাঁচিয়ে রেখেছে কারাগারে, রাস্তায় এবং জনসমাবেশে। যাদের কর্মকা- প্রমাণ করেছে যে শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধই বিশ্বকে বদলাতে পারে।’ কমিটি উল্লেখ করে, ‘গত বছর মাচাদো তার জীবনের ওপর গুরুতর হুমকি সত্ত্বেও আত্মগোপনে থাকতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি দেশ ছেড়ে যাননি, এই সিদ্ধান্তই লাখ লাখ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে।’ কমিটি আরও জানায়, ‘স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের সাহসী রক্ষকদের স্বীকৃতি দেওয়া এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মারিয়া কোরিনা মাচাদো আলফ্রেড নোবেলের উইলে বর্ণিত শান্তি পুরস্কারের তিনটি মানদ-ই পূরণ করেছেন।

‘তিনি তার দেশের বিরোধীদের একত্রিত করেছেন। তিনি কখনো ভেনেজুয়েলার সামরিকীকরণের বিরোধিতা থেকে সরে আসেননি। তিনি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পক্ষে অটল থেকেছেন।’ নোবেল কমিটি আরও জানায়, তারা আশা করছে এই পুরস্কার ‘তার সংগ্রামকে সমর্থন দেবে, সীমিত করবে না।’ শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়া এক্সে এক পোস্টে নোবেল কমিটি জানায়, তারা এই পুরস্কার দিচ্ছেন মাচাদোকে ‘ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তার নিরলস প্রচেষ্টা ও একনায়কতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে ন্যায়সংগত ও শান্তিপূর্ণ রূপান্তরের সংগ্রামের জন্য।’

অসলোতে মাচাদোর নাম ঘোষণা করতে গিয়ে নোবেল কমিটির সভাপতি ইয়রগেন ওয়াটনে ফ্রিডনেস বলেন, পুরস্কারটি যাচ্ছে ‘এক সাহসী ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ শান্তির নেত্রী, এমন এক নারীর কাছে, যিনি ক্রমবর্ধমান অন্ধকারের মধ্যেও গণতন্ত্রের শিখা প্রজ্বলিত রেখেছেন।’ তিনি আরও বলেন, মাচাদো ‘আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছাপত্রে বর্ণিত সব মানদ- পূরণ করেছেন।’ সেই ইচ্ছাপত্র অনুযায়ী, ‘শান্তি পুরস্কার দেওয়া হবে তাকে, যিনি জাতিগুলোর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায়, স্থায়ী সেনাবাহিনী বিলোপ বা হ্রাসে এবং শান্তি কংগ্রেসের আয়োজন ও প্রসারে সর্বাধিক বা সর্বোত্তম কাজ করেছেন।’ ভেনেজুয়েলায় ‘আয়রন লেডি’ নামে পরিচিত মাচাদো ১৯০১ সালে শান্তি পুরস্কার চালুর পর থেকে ১৪৩ জন পুরস্কারজয়ীর মধ্যে শুধু ২০তম নারী। নিজের পুরস্কারের খবর জানার পর তিনি ‘আশ্চর্য ও অভিভূত’ হয়েছেন বলে জানান।

এএফপি সংবাদ সংস্থার কাছে তার প্রেস টিম পাঠানো এক ভিডিওতে ফোনে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি অবিশ্বাস্য অনুভব করছি!’ তিনি সেই সময় ফোনে কথা বলছিলেন এদমুন্ডো গনসালেস উরুতিয়ার সঙ্গে, যিনি মাচাদোর প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার পর বিরোধী জোটের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হয়েছিলেন। গনসালেস বলেন, ‘আমরা আনন্দে অভিভূত।’ মারিয়া কোরিনা মাচাদো পারিসকার বয়স ৫৮ বছর। তিনি ভেনেজুয়েলার বিরোধীদল ভেন্তে ভেনেজুয়েলার নেতা। তিনি স্বচ্ছ গণতন্ত্রের পক্ষে প্রচারণা চালান, বাজারমুখী অর্থনৈতিক সংস্কারের পক্ষে, যার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি পিডিভিএসএ’র মতো প্রতিষ্ঠান বেসরকারীকরণের প্রস্তাবও রয়েছে।

আবার একই সঙ্গে তিনি দেশের দরিদ্র জনগণের সহায়তায় কল্যাণমূলক কর্মসূচি চালুরও সমর্থক। তিনি ১৯৬৭ সালের ৭ অক্টোবর কারাকাসে জন্মগ্রহণ করেন। চার বোনের মধ্যে তিনি সবচেয়ে বড়। তিনি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ও ফিন্যান্সে মাস্টার্স ডিগ্রিধারী। তিন সন্তানের জননী মাচাদো ২০০২ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন স্বেচ্ছাসেবী নাগরিক সংগঠন ‘সুমাতে’-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা হিসেবে। সংগঠনটির লক্ষ্য ছিল নিকোলাস মাদুরোর শাসনের সময় দেশের রাজনৈতিক বিভাজনের মধ্যেও মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা।

সুমাতে থাকাকালীন তিনি একই বছর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের বিরুদ্ধে গণভোট আয়োজনের নেতৃত্ব দেন। সেখানে শ্যাভেজের স্বৈরাচারী নীতির প্রতিবাদ জানানো হয়। এর ফলে তাকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয় এবং শ্যাভেজ সমর্থকদের পক্ষ থেকে তার পরিবার মৃত্যুর হুমকি পায়। বাধ্য হয়ে তিনি তার সন্তানদের বিদেশে পাঠান। তবুও মাচাদো নিকোলাস মাদুরোর বিরোধিতায় অবিচল থেকেছেন। মাদুরো ২০১৩ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!