বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২৫, ০১:০৮ এএম

যুদ্ধরেখায় শান্তি আলোচনা

রাজি ইউক্রেন, অনড় রাশিয়া

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২৫, ০১:০৮ এএম

রাজি ইউক্রেন, অনড় রাশিয়া

ইউক্রেনের শহরগুলোয় রাশিয়ান ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দুই শিশুসহ কমপক্ষে সাতজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এ হামলার ঘটনায় আরও ২১ জন আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, বুদাপেস্টে আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে। কারণ তিনি ‘অকার্যকর বৈঠক’ চান না। এর মধ্য দিয়ে ট্রাম্প এবং ইউরোপীয় নেতাদের সম্মুখ সারিতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করল ক্রেমলিন। এদিকে, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা মঙ্গলবার গভীর রাতে ব্রায়ানস্ক সীমান্ত অঞ্চলে একটি রাশিয়ান রাসায়নিক কারখানায় যুক্তরাজ্যের সরবরাহকৃত স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করেছে। রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় প্রবেশ করে চালানো এ হামলাকে ‘একটি সফল আঘাত’ বলে অভিহিত করেছেন ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তারা। গত মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে, ওই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্য করে, দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ অন্তত ৫১টি ড্রোন ও অন্যান্য ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তারা।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বর্তমান যুদ্ধরেখায় শান্তি আলোচনার বিষয়ে একমত হয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতারা। যুদ্ধ বন্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থানকেও সমর্থন জানিয়েছে তারা। কিন্তু বর্তমান যুদ্ধরেখায় সংঘাত থামানোর বিষয়ে রাজি নয় রাশিয়া। এদিকে হাঙ্গেরিতে ট্রাম্প-পুতিনের শান্তি আলোচনা বৈঠকের বিষয়ে তাৎক্ষণিক পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। এর আগে বৈঠকের কোনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি বলে জানিয়েছিল ক্রেমলিন। নিজের দ্বিতীয় মেয়াদে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ব্যাপক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউরোপীয় নেতারা ট্রাম্পের প্রস্তাব সমর্থন করলেও, রাশিয়া বলছে এখনই যুদ্ধ থামানো সম্ভব নয়। ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী বর্তমান যুদ্ধরেখায় শান্তি স্থাপনের বিষয়ে একমত হয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা। এক বিবৃতিতে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারসহ ১১ জন ইউরোপীয় নেতা জানান, অবিলম্বে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে তারা মার্কিন প্রেসিডেন্টের অবস্থানকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করছেন। তবে এ সিদ্ধান্তে বরাবরের মতো বেঁকে বসেছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মস্কো কেবল দীর্ঘমেয়াদি, টেকসই শান্তিতে আগ্রহী। বর্তমান যুদ্ধরেখা স্থগিত করেন, তা একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, ‘এখন আমরা ওয়াশিংটন থেকে শুনি, আমাদের অবিলম্বে থামতে হবে এবং আমাদের আর কোনো আলোচনা করা উচিত নয়। থামুন এবং ইতিহাসকে বিচার করতে দিন। যদি আমরা কেবল থামি, তাহলে এর অর্থ হবে সংঘাতের মূল কারণগুলো ভুলে যাওয়া।’ এদিকে হাঙ্গেরিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ট্রাম্পের সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের শান্তি আলোচনা বৈঠকের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। এর আগে বৈঠকের কোনো সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ হয়নি বলে জানিয়েছিল ক্রেমলিন।

গেল সপ্তাহে পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, শান্তি আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে পুতিন। যদিও ওই সময় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি পুতিন। ফোনালাপের এক দিন পর হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানায়, ওই বৈঠকে ট্রাম্প ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের বড় অংশ ডনবাস রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দিতে জেলেনস্কিকে চাপ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকে তীব্র বাগবিত-াও হয়েছে। যদিও ট্রাম্পের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। আর জেলেনস্কিকে ডনবাস ছেড়ে দিতে বলার বিষয়টি অস্বীকার করেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা কখনো এটা নিয়ে আলোচনা করিনি। আমরা মনে করি যুদ্ধক্ষেত্রে, যেখানে তারা আছে, সেখানেই থামানো উচিত। বাকিটা আলোচনা করা খুব কঠিন। আমি যা বলছি, তা হলো তাদের এখনই যুদ্ধক্ষেত্রে থামানো উচিত, বাড়ি ফিরে যাওয়া উচিত, মানুষ হত্যা বন্ধ করা উচিত।’ চলতি সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রতিনিধি দলের বৈঠকের মাধ্যমেই ট্রাম্প-পুতিনের শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা ছিল।

ইউরোপীয় নেতারা মঙ্গলবার বলেছেন, ইউক্রেনের বর্তমান ফ্রন্টলাইনকে কেন্দ্র করেই শান্তি আলোচনার সূচনা হওয়া উচিত। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রস্তাবিত সম্মেলনের প্রস্তুতি জটিলতায় পড়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।ট্রাম্প সম্প্রতি পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করে ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানার চেষ্টা করবেন।কিন্তু বৃহস্পতিবার বুদাপেস্টে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের মধ্যে যে প্রাথমিক বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, তা স্থগিত হয়েছে। ল্যাভরভের ডেপুটি সের্গেই রিয়াবকভ মঙ্গলবার বলেছেন, এখনই সরাসরি সাক্ষাতের সময় নিয়ে কিছু বলার সময় হয়নি।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে সম্ভাব্য বৈঠক স্থগিত করলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নিকট ভবিষ্যতেও ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের আর কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ ‘অর্থহীন বৈঠক’ নিয়ে আর ‘সময় নষ্ট’ করতে চান না ট্রাম্প।রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহেই পুতিনের সঙ্গে ফোনে দীর্ঘ আলাপ করেন ট্রাম্প। সে সময় তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যেই বুদাপেস্টে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। ওই বৈঠকের সম্ভাবনা থেকেই ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকেও যুদ্ধের জন্য ‘টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র’ দিতে অস্বীকৃতি জানান ট্রাম্প।বিশ্লেষকদের মতে, বুদাপেস্টের সম্ভাব্য বৈঠকের আগেই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে পুতিনকে চাপ দিচ্ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে সেই যুদ্ধ নিয়ে ওয়াশিংটন-মস্কো বিপরীত অবস্থানই এ বৈঠক স্থগিত হওয়ার প্রধান কারণ।ট্রাম্পের ধারণা, পুতিন কেবলই সময় ক্ষেপণ করছেন, আদতে তিনি যুদ্ধ বন্ধে আগ্রহী নন। কাজেই ইউরোপে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আর পুতিনের অপেক্ষায় থাকতে চান না মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

এর আগে, গত আগস্টে আলাস্কায় সবশেষ মুখোমুখি হয়েছিলেন ট্রাম্প-পুতিন। অবশ্য সে বৈঠক থেকেও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে তেমন কোনো ইতিবাচক ফল আসেনি।

সম্প্রতি কিয়েভ এবং ইউরোপীয় নেতাদের সমর্থিত এক যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবেও সমর্থন জানান ট্রাম্প। জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বর্তমান ফ্রন্টলাইনেই (যে পর্যন্ত যুদ্ধ গড়িয়েছে) সংঘাত থামানোর আহ্বান জানান তিনি।ট্রাম্প বলেন, ‘যেভাবে আছে, সেভাবেই রেখা টেনে দাও। যুদ্ধ থামাও, রক্তপাত বন্ধ কর। যুদ্ধে কেবলই মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে।’ এমনকি ইউক্রনকে রাশিয়ার কাছে যুদ্ধে হারানো অঞ্চল পুনরুদ্ধার থেকেও নিরুৎসাহিত করেন তিনি।কিয়েভ প্রথমদিকে তাতে আপত্তি জানালেও ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হারানো অঞ্চল রাশিয়ার হাতে ছেড়ে দিয়ে যুদ্ধ থামাতে আগ্রহের কথা জানায়। ইউরোপীয় নেতারাও ট্রাম্পের প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দেন। জেলেনস্কির সঙ্গে এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার ভিত্তি হওয়া উচিত- এখানেই সংঘাত থামিয়ে দেওয়া। তবে যুদ্ধ বন্ধে অবশ্যই রাশিয়ার সদিচ্ছার ঘাটতি আছে।’

এদিকে রাশিয়া এই প্রস্তাব একাধিকবার প্রত্যাখ্যান করেছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেন থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং দনবাস অঞ্চলে রুশ সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতির শর্তে অটল থাকবে।রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, ‘মস্কো কেবল “দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই শান্তিতে” আগ্রহী, সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে নয়।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!