শতাব্দী কালের অন্যতম ভয়াবহ পানিসংকটের মুখে দাঁড়িয়ে আছে ইরান। রাজধানী তেহরানের পানির প্রধান উৎস আমির কবির বাঁধ, এই বাঁধ আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই শুকিয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আইআরএনএ। এর ফলে রাজধানীতে দেখা দিতে পারে তীব্র খরা এবং জনজীবনে নেমে আসতে পারে চরম দুর্ভোগ। রোববার (৩ নভেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে। রাজধানীর পানিব্যবস্থাপনা সংস্থার পরিচালক বেহজাদ পারসার বরাত দিয়ে আইআরএনএ জানিয়েছে, তেহরানের পানীয় জলের প্রধান পাঁচটি বাঁধের মধ্যে অন্যতম হলো আমির কবির বাঁধ। বর্তমানে এই জলাধারে মাত্র ১৪ মিলিয়ন ঘনমিটার পানি অবশিষ্ট আছে, যা এর মোট ধারণক্ষমতার মাত্র ৮ শতাংশ। বেহজাদ পারসা আরও জানিয়েছেন, এই পরিমাণ পানি দিয়ে জলাধারটি তেহরানে মাত্র ‘দুই সপ্তাহের মতো’ পানি সরবরাহ চালিয়ে যেতে পারবে।
১ কোটিরও বেশি মানুষের এই মহানগরী সাধারণত বরফে আচ্ছাদিত থাকে এবং আলবোর্জ পর্বতমালার দক্ষিণ ঢালের বিপরীতে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫ হাজার ৬০০ মিটার (১৮০০০ ফুট) উঁচুতে অবস্থিত এই পর্বতমালা থেকে নেমে আসা নদীগুলো একাধিক জলাধারকে পানি সরবরাহ করে। তবে তেহরান বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। গত মাসেই স্থানীয় এক কর্মকর্তা ঘোষণা করেছিলেন যে, তেহরানে বৃষ্টিপাতের মাত্রা প্রায় এক শতাব্দী ধরে নজিরবিহীনভাবে কম ছিল। পারসা বলেন, এক বছর আগেও আমির কবির বাঁধ ৮৬ মিলিয়ন ঘনমিটার পানি ধরে রেখেছিল, কিন্তু তেহরান অঞ্চলে বৃষ্টিপাত ১০০ শতাংশ কমে গেছে।
অন্য জলাধারগুলোর অবস্থা সম্পর্কে বেহজাদ পারসা এখনো বিস্তারিত বিবরণ না দিলেও, ধারণা করা হচ্ছে যে আসন্ন খরা ইরানের অনেক অঞ্চলকে গ্রাস করতে পারে। ইরানি মিডিয়া অনুসারে, তেহরানের জনগণ প্রতিদিন প্রায় তিন মিলিয়ন ঘনমিটার পানি ব্যবহার করে। পানি সাশ্রয়ী ব্যবস্থা হিসেবে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তেহরানের বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া এই গ্রীষ্মে তাপপ্রবাহের মধ্যে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটও দেখা দিয়েছে। জুলাই এবং আগস্ট মাসে পানি এবং জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য ইরানে দুই দিনের সরকারি ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছিল।
কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ইরানের রাজধানী তেহরান। এ পরিস্থিতিতে তেহরানের পানির প্রধান উৎস আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে শুকিয়ে যাওয়ার গুরুতর ঝুঁকিতে রয়েছে বলে রোববার দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সতর্ক করেছে।
        
                            
                                    
                                                                
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
                                    
                                    
                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                            
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন