রবিবার, ০৯ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৫, ০১:৪৫ এএম

ঘিরে ফেলেছে রুশ বাহিনী

পতনের মুখে ইউক্রেনের পোক্রোভস্ক

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৫, ০১:৪৫ এএম

পতনের মুখে ইউক্রেনের পোক্রোভস্ক

‘আমি কীভাবে বেঁচে আছি জানি না, কারণ সব টুকরো এসে পড়েছিল আমার বিছানার ওপর, যেখানে আমি ঘুমাচ্ছিলাম,’ বলেন ভবনটির আরেক বাসিন্দা লারিসা।

ইউক্রেনের জরুরি সেবা সংস্থার হিসাবে, গত ২৪ ঘণ্টায় রুশ হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত ও প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন।

রাশিয়ার ব্যাপক রাতভর বিমান হামলার পর ইউক্রেনজুড়ে বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মতে, নয়টি অঞ্চল রুশ হামলার শিকার হয়েছে। শনিবার (৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে সিএনএন। মধ্য ইউক্রেনের দ্নিপ্রো শহরে একটি নয়তলা আবাসিক ভবনে ড্রোন হামলায় দুজন নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছেন। অন্ধকার রাতে হামলার মুহূর্তটি ভিডিওতে ধরা পড়ে। ‘এখানে তো কেবল সাধারণ আবাসিক ভবন, আর কিছুই নেই,’ বলেন মায়া নামের এক নারী। ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া মোট ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র (এর মধ্যে কিছু ব্যালিস্টিক অস্ত্র) নিক্ষেপ করে, যার মধ্যে মাত্র ৯টি প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে। একই সঙ্গে প্রায় ৪৫০টি ড্রোনও ছোড়া হয়। ‘২৬টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৫২টি আঘাতকারী ড্রোন ২৫টি স্থানে আঘাত হেনেছে,’ বিমানবাহিনী জানায়। হামলাগুলোর বেশির ভাগই ঘটেছে কেন্দ্রীয় পলতাভা ও দিনপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলে, পাশাপাশি রাজধানী কিয়েভেও।

‘শত্রু আবারও ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে,’ বলেন দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী সভিতলানা গ্রিনচুক।তিনি আরও জানান, বিভিন্ন অঞ্চলে জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্থিতিশীল হলে তা পুনরায় চালু করা হবে।

পূর্ব ইউক্রেনের অবরুদ্ধ শহর পোকরোভস্কে নিজেদের শেষ সম্বলটুকু দিয়ে মরিয়া হয়ে লড়ছে ইউক্রেনীয় সেনারা। কিন্তু শহরটিতে টিকে থাকার লড়াই যত তীব্র হচ্ছে, ততই জোরালো হচ্ছে এক কঠিন প্রশ্নÑ তাদের কি কৌশলগতভাবে পিছু হটা উচিত? এমন সিদ্ধান্ত নিলে হয়তো অনেক সেনার জীবন বাঁচবে, কিন্তু তা রাশিয়ার হাতে তুলে দেবে এক বিরাট প্রচারমূলক বিজয়। গত দুই বছর ধরে রুশ অগ্রযাত্রা ঠেকিয়ে রেখেছে ইউক্রেন। কিন্তু এখন যখন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দিচ্ছেন কিয়েভকে দোনেৎস্ক অঞ্চল ছেড়ে দেওয়ার একটি চুক্তিতে রাজি করাতে, তখন ইউক্রেন আরও বেশি অনিচ্ছুক হয়ে পড়েছে কোনো ভূখ- ছাড়তে।

পোকরোভস্ক ছেড়ে দেওয়া হয়তো ইউক্রেনের জন্য সামরিকভাবে লাভজনক হতে পারে। কিন্তু এতে রুশ মনোবল বৃদ্ধি পাবে এবং ওয়াশিংটনের কাছে এটি এমন বার্তা দিতে পারে যে ইউক্রেন মস্কোর আগ্রাসন ঠেকাতে পারছে না। অন্যদিকে, শহরের ভেতরেই যুদ্ধ চালিয়ে গেলে সৈন্য ও সরঞ্জামের ব্যাপক ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছেÑ যেখানে দেশটি ইতিমধ্যে জনবল সংকটে ভুগছে।

ইউক্রেনের পোক্রোভস্ক শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া রাশিয়া। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সেখানে তীব্র যুদ্ধ চলছে। মস্কোর দাবি করেছে, ইউক্রেনীয় বাহিনীকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয়েছে। এখন পুরোপুরি দখলের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে রুশ সেনারা। তবে জেলেনস্কির পাল্টা দাবি, রুশ সেনারা গত একদিনে কোনো অগ্রগতি করতে পারেনি। তাদের বিশেষ বাহিনী শহরে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। পূর্ব ইউক্রেনের কৌশলগত শহর পোক্রোভস্ক ঘিরে গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সেনাদের মধ্যে ব্যাপক লড়াই চলছে। তীব্র লড়াইয়ের পর রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, পোক্রোভস্ক ও পার্শ্ববর্তী কুপিয়ানস্ক শহরে ইউক্রেনীয় সেনাদের ঘিরে ফলা হয়েছে। এখন তাদের আত্মসমর্পণ ছাড়া প্রাণে বাঁচার কোনো পথ নেই। তবে কিয়েভ পাল্টা দাবি করেছে, তাদের বিশেষ বাহিনী শহরে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে এবং অর্ধশতাধিক রুশ আক্রমণ প্রতিহত করেছে।কিয়েভের লজিস্টিক হাব হিসেবে পরিচিত পোক্রোভস্ক ইউক্রেন সেনার প্রতিরক্ষা ব্যূহের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র ছিল। অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও রেল সংযোগ কেন্দ্র পোক্রোভস্ক দখলে সবসময় মরিয়া ছিল রাশিয়া। যা দখল করতে পারলে রাশিয়া আরও কার্যকরভাবে সামরিক সরঞ্জাম ও সরবরাহ স্থানান্তর করতে পারবে। শহরটি দখল করা হলে দনেস্ক অঞ্চল সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে আনার রাশিয়ার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে।  শহরটির কাছে ইউক্রেনের একমাত্র কয়লা খনি রয়েছে, যা দেশটির অর্থনীতির জন্য অপরিহার্য এবং ইস্পাত উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পোক্রোভস্ক শহরের মাধ্যমে চাসিভ ইয়ার ও কস্তিয়ানতিনিভকার মতো ফ্রন্টলাইনের শহরগুলোতে সরবরাহ পাঠানো হয়, যা ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।সর্বশেষ মানচিত্রে দেখা যাচ্ছে, রুশ বাহিনী পোক্রোভস্ক সম্পূর্ণ ঘেরাও থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে এবং কুপিয়ানস্ক শহরের প্রধান সড়কের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।যুদ্ধ শুরুর আগে পোক্রোভস্কের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৬০ হাজার। এখন শহরটি প্রায় জনশূন্য। সব শিশুকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, অল্পসংখ্যক মানুষ ধ্বংসস্তূপের মধ্যে রয়ে গেছেন।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির সঙ্গে বাতিল হওয়া বৈঠকটি ফের হওয়ার সুযোগ আছে বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর বৈঠকের ভেন্যু হিসেবে বুদাপেস্টই প্রথম পছন্দ মার্কিন প্রেসিডেন্টের। শুক্রবার ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন ও দপ্তর হোয়াইট হাউসে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অর্বানের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। বৈঠকের পর এক ব্রিফিংয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, (পুতিনের সঙ্গে) বৈঠকের সম্ভাবনা ছিল এবং এখনো আছে, বেশ ভালোভাবেই আছে।

ইউক্রেনে যুদ্ধের অবসান নিয়ে গত অক্টোবরের শেষ দিকে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের। বৈঠকের আয়োজনের জন্য প্রস্তুতিও শুরু করেছিল হাঙ্গেরি। তবে এর মধ্যেই গত ২৩ অক্টোবর অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই নির্ধারিত সেই বৈঠক বাতিল করেন ট্রাম্প।

শুক্রবারের ব্রিফিংয়েও সেই কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, আমি হাঙ্গেরির বুদাপেস্টেই এটা (বৈঠক) হোক। সেখানে আগের প্রস্তাবিত বৈঠকটি আমি বাতিল করেছিলাম। কারণ আমার মনে হয়েছিল সেটি থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু আসবে না। কিন্তু যদি সত্যিই বৈঠকটি হয়, তাহলে আমি চাইব বুদাপেস্টেই সেটি হোক।

আফ্রিকা মহাদেশের অন্তত ৩৬ টি দেশের ১ হাজার ৪০০ জন নাগরিক রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। বিদেশি নাগরিকদের এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখতে দেশগুলোর সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা।শুক্রবার (৭ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে সিবিহা বলেন, আফ্রিকার মানুষদের বিভিন্ন উপায়ে প্রলুব্ধ করে যুদ্ধে নিয়ে আসছে রাশিয়া।

ব্যবস্থার জন্য নতুন একজন কমান্ডার নিয়োগ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রুশ ড্রোন হামলার ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবিলায় শুক্রবার (৭ নভেম্বর) গৃহীত এ পদক্ষেপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!