মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মির্জা হাসান মাহমুদ

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৫, ০৩:২১ এএম

আত্মার দুনিয়ায় মিগুয়েল

মির্জা হাসান মাহমুদ

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৫, ০৩:২১ এএম

আত্মার  দুনিয়ায়  মিগুয়েল

অ্যানিমেশন সিনেমা মানে রঙিন কল্পনার দুনিয়া। এসব সিনেমা তৈরি করা হয় মানুষকে বিনোদিত করার জন্য। কিন্তু কিছু সিনেমা শুধু বিনোদনের বস্তু হয়ে থাকে না; শেখায় জীবন ও ভালোবাসার অর্থ। ডিজনি ও পিক্সারের ২০১৭ সালের অ্যানিমেশন সিনেমা কোকো এমনই এক গল্প। এই সিনেমায় দেখানো হয়েছে এমন গল্প, যা জীবন সম্পরকে ভিন্ন ভাবনা এনে দেয় মনে। এখানে দেখা যায় ছোট্ট এক ছেলের সংগীতপ্রেম তাকে নিয়ে যায় মৃত্যুর পরের জগতে। এই যাত্রা আমাদের শেখায় পরিবারের আসল মূল্য।

গল্পের শুরু মেক্সিকোর ছোট্ট এক গ্রামে। সেখানে বাস করে মিগুয়েল রিভেরা নামের ১২ বছরের একটি ছেলে। মিগুয়েলের পরিবারের সবাই সংগীতকে ঘৃণা করে। কারণ অনেক বছর আগে তাদের এক পূর্বপুরুষ নাকি সংগীতের নেশায় পরিবার ছেড়ে চলে গিয়েছিল। তাই রিভেরা পরিবারে গান গাওয়া থেকে শুরু করে সংগীত সম্পর্কিত সবই নিষেধ। কিন্তু মিগুয়েলের রক্তে যেন সুর বাজে। তার আদর্শ মহান গায়ক এরনেস্তো দে লা ক্রুজের মতো সে-ও একদিন অনেক বড় সংগীতশিল্পী হতে চায়।  একদিন দিয়া দে লস মুয়ের্তোস বা মৃতদের স্মরণ দিবসে মিগুয়েল জানতে পারে, তার পরিবারের পুরোনো ছবিতে মুখ ঢেকে রাখা মানুষটি হয়তো এরনেস্তো দে লা ক্রুজ! আরও জানতে পারে সেই মানুষটি আসলে তার প্রপিতামহ হতে পারেন। প্রমাণ খুঁজতে গিয়ে মিগুয়েল এক অবিশ্বাস্য ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে।

হঠাৎই সে চলে যায় ল্যান্ড অব দ্য ডেড-এ। অর্থাৎ মৃতদের জগতে! শুনতে ভয়ঙ্কর মনে হলেও সেই জগৎটা কিন্তু ভয়ঙ্কর নয়, বরং রঙে-আলোয় ভরা এক চমৎকার শহর। সেখানে আত্মারা পরিবারের স্মরণে বেঁচে থাকে। পরিবারের লোকেরা যদি তাদের ভুলে যায়, আত্মারাও চিরতরে হারিয়ে যায়। মিগুয়েল সেখানে দেখা পায় এক মজার চরিত্রের, যার নাম হেক্টর। দুজন মিলে বের হয় মিগুয়েলের প্রকৃত পূর্বপুরুষের সন্ধানে। অর্থাৎ এরনেস্তো দে লা ক্রুজকে খুঁজে বের করার জন্য।  এ ছাড়া চেষ্টা করে বাস্তব জগতে ফেরার। সিনেমাটির মাঝে আসে জীবনের গভীর শিক্ষা।

মিগুয়েল বুঝতে শেখে, শুধু সংগীত নয়; জীবনে পরিবারও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। হেক্টর তাকে মনে করিয়ে দেয়- যারা আমাদের ভালোবাসে, তাদের স্মৃতি কখনো হারিয়ে যেতে দেওয়া উচিত নয়। মুভির একটি বিখ্যাত গান ‘রিমেম্বার মি’ প্রকাশের পর ব্যাপক জনপ্রিয় হয়।

এই গানটি ভালোবাসা ও স্মৃতির এক প্রতীক। দাদি কোকোর সঙ্গে মিগুয়েলের সেই গান গাওয়ার দৃশ্যটি হয়তো যে কারো চোখে জল এনে দিতে পারে।

তবে কোকো মুভিটি শুধু শিশুদের জন্য নয়, বড়রাও এতে খুঁজে পায় জীবনের মর্ম। মেক্সিকোর দিয়া দে লস মুয়ের্তোস উৎসবের সাংস্কৃতিক রঙ, ঐতিহ্য ও ভালোবাসার বার্তা সিনেমাটিকে করে তুলেছে অনন্য। পরিচালক লি আনক্রিচ এবং সহ-পরিচালক অ্যাড্রিয়ান মোলিনা এত নিখুঁতভাবে এই গল্প ফুটিয়ে তুলেছেন যে মনে হবে প্রতিটি চরিত্র সত্যি বেঁচে আছে। অ্যানিমেশন, রঙ ও সংগীত মিলিয়ে কোকো এক অসাধারণ ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা। সিনেমাটিতে ব্যবহৃত মেক্সিকান সংগীত, গিটার বাজানোর ভঙ্গি এমনকি পোশাকের নকশাও বাস্তবের মতো নিখুঁত। প্রতিটি দৃশ্য যেন উৎসবের মতো ঝলমলে। ২০১৮ সালে কোকো জিতে নেয় একাডেমি অ্যাওয়ার্ডের সেরা অ্যানিমেটেড ফিচার এবং সেরা মৌলিক গানের পুরস্কার। কিন্তু পুরস্কার নয়, তাদের আসল সাফল্য হলো মানুষের হৃদয়ে জায়গা পাওয়া।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!