এলডিসি উত্তরণ নিয়ে বর্তমান সরকার প্রস্তুতি চালিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য মনজুর হোসেন। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম চলমান। তবে এখন উত্তরণ হবে, নাকি পিছিয়ে দেওয়া হবে, সেটা হয়তো পরবর্তী সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। গতাকল রোববার মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার আয়োজিত সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মনজুর হোসেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকিন আহমেদ। সেমিনারে বক্তব্য দেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। ঢাকা চেম্বার ভবনে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
জিইডির সদস্য মনজুর হোসেন বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এটা শুধু সরকারের প্রস্তুতির বিষয় নয়, বেসরকারি খাতেরও প্রস্তুতি নিতে হবে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী পাঁচ বছর পরও প্রস্তুতি নেওয়া হবে না।
মনজুর হোসেন আরও বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ শতাংশ শুল্ক মেনে নিতে পারলে এই চ্যালেঞ্জও আমরা উতরে যেতে পারব। নেপাল উত্তরণ করছে, সেখানে আমরা পাঁচ বছর সময় চাইব, সেটা হয়তো হবে না। পেছানো গেলে ভালো, তবে না হলেও প্রস্তুতি রাখতে হবে।’
সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ সময় পেছানোর আবেদন করতে পারে। কিন্তু সেটা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে গৃহীত হতে হবে। তিনটি সূচকে আমাদের অবস্থান কম দেখাতে হবে। ১ হাজার ৩০০ ডলার মাথাপিছু আয় হলে উত্তরণ হওয়ার সক্ষমতা অর্জন হয়। কিন্তু আমাদের বর্তমানে আছে ২ হাজার ৮০০ ডলারের বেশি। তাই সময় বাড়ানোর আবেদন করলেও প্রস্তুতি রাখতে হবে।’
ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পারস্পরিক শুল্কারোপসহ বৈশ্বিক রাজনৈতিক অস্থিরতা, অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ হ্রাস, শিল্প খাতে জ¦ালানি সরবরাহে অনিশ্চয়তা, বিনিয়োগে স্থবিরতা, নানাবিধ দুর্নীতি প্রভৃতি কারণে বেসরকারি খাতের অগ্রগতি তেমন আশাব্যঞ্জক নয়। এমতাবস্থায় এলডিসি থেকে উত্তরণে প্রস্তুতি সম্পন্নে আরও কিছুদিন সময় প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় নিয়ে ডিসিসিআই কমপক্ষে তিন বছর এলডিসি উত্তরণ স্থগিত করার প্রয়োজন বলে মনে করে। যাতে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি, একটি শক্তিশালী ট্রানজিশন কৌশল বাস্তবায়ন এবং সংশ্লিষ্ট নীতিমালাগুলো হালনাগাদ করা সম্ভব হয়। করপোরেট করহার, বিশেষ করে অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক হওয়া উচিত, যার কারণে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হবে না।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন