সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২৫, ০৩:২৩ এএম

সস্কার-নতুন ব্যবস্থাপনায় ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ইডিসিএল

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২৫, ০৩:২৩ এএম

সস্কার-নতুন ব্যবস্থাপনায় ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ইডিসিএল

দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনায় জর্জরিত রাষ্ট্রায়ত্ত এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল) ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। টেন্ডার সিন্ডিকেট করে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বেশি দামে কাঁচামাল কেনা, যন্ত্রপাতি অকেজো থাকা, অতিরিক্ত লোকবলÑ সব মিলিয়ে এত দিন সরকারের কোটি কোটি টাকা লোকসানের কারণ হয়ে ছিল প্রতিষ্ঠানটি। গত কয়েক মাসে দৃশ্যপট নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। দুর্নীতির ঘোরটোপ থেকে বেরিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এখন স্বস্তির খবর দিচ্ছে।

নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সামাদ মৃধা দায়িত্ব নিয়েই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, প্রতিষ্ঠানটিতে আর দুর্নীতি ও অদক্ষ লোকবলের জায়গা থাকবে না। তার নেতৃত্বে সংস্কার কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ইডিসিএল টেন্ডার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ফেরানোর পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় লোকবল ছাঁটাই করে উৎপাদন খরচ কমিয়ে এনেছে, যার ফলে ৩৩টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। এ ছাড়া উৎপাদন বাড়ায় প্রতিষ্ঠানটি এখন আগের চেয়ে বেশি কার্যকরভাবে সেবা দিতে পারছে। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরের অডিট রিপোর্টে শুধু অকার্যকর যন্ত্রপাতি ও ব্যর্থ প্রকল্পের কারণে ইডিসিএলে প্রায় ৩২ কোটি টাকার ক্ষতির চিত্র ধরা পড়েছিল।

এ ছাড়া টেন্ডার জটিলতায় গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন। একটি যন্ত্র আড়াই বছরখানেক ধরে ব্যবহার না করায় আর্থিক ক্ষতি ছাড়িয়েছিল ১৮ কোটি টাকা। উচ্চ আদালত এই কোম্পানির বিরুদ্ধে ৪৭৭ কোটি টাকার দুর্নীতি ও ৩২টি অনিয়মের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুদক প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান চালায়। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে ভাবমূর্তি ফেরাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে ইডিসিএল। ইডিসিএলের বড় অর্জন হলো ওষুধের দাম কমানো। কোম্পানির ইতিহাসে এবারই প্রথম ওষুধের দাম কমেছে।

আর্থিক স্বচ্ছতা ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণের ফলে সম্প্রতি ইডিসিএল ৩৩টি ওষুধের দাম ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছে। এতে শুধু জনগণই উপকৃত হচ্ছে না, বরং সরকারের বছরে প্রায় ১১৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। দাম কমানোর তালিকায় রয়েছেÑ গ্যাস্ট্রিকের ওমিপ্রাজল ক্যাপসুল, ব্যথার কেটোরোলাক ইনজেকশন, নিউমোনিয়া ও ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক (যেমন সেফট্রিয়াক্সোন ও সেফটাজিডিম), হাঁপানির মন্টিলুকাস্ট ট্যাবলেটের মতো অতিপ্রয়োজনীয় ওষুধ। বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবার জন্য তালিকাভুক্ত ৩২টি ওষুধের মধ্যে ২২টির দাম কমানো হয়েছে, যা গ্রাম্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসাসেবা আরও সহজলভ্য করবে।

এত দিন কোম্পানির ব্যয়ের বড় অংশ গেছে অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় লোকবলে। নতুন ব্যবস্থাপনায় এক ঝটকায় সাত শতাধিক কর্মীকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রায় ৭২২ জন অপ্রয়োজনীয় ও অদক্ষ কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। আরও হাজারেরও বেশি জনবল ছাঁটাই করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সংস্কারের ফলে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন বাড়ায় আগের বছরের তুলনায় এবার প্রায় ৫৯ কোটি টাকার ওষুধ বেশি উৎপাদিত হয়েছে। এর ফলে সরকারি হাসপাতাল ও গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখন নিয়মিত ওষুধ সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে।

কাঁচামাল কেনার ক্ষেত্রেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে যেখানে সিন্ডিকেট-ভিত্তিক কাঁচামাল কেনা হতো, এখন সেখানে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক দামে কাঁচামাল কেনা হচ্ছে। নতুন প্রক্রিয়ায় প্রতি মাসে প্রায় ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। ইডিসিএল ইতিমধ্যে তৃতীয় প্রজন্মের জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ও স্যালাইন উৎপাদন ইউনিট চালু করেছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্যালাইনের ট্রায়াল রান শেষ হয়েছে, কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন স্যালাইন বাজারে আসবে। এ ছাড়া সরকারি ওষুধ সরবরাহে নির্ভরশীলতা কমাতে প্রতিষ্ঠানটি টোল ম্যানুফ্যাকচারিং বন্ধ করে নিজস্ব উৎপাদনক্ষমতা ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে একটি অত্যাধুনিক ভ্যাকসিন ও অ্যান্টি-ভেনম উৎপাদন কারখানা স্থাপন করতে ৪০ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। এই প্ল্যান্ট স্থাপিত হলে দেশের ভ্যাকসিন উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আসবে এবং গুরুত্বপূর্ণ জীবন রক্ষাকারী ওষুধের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভরতা কমবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!