ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫

স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বাণিজ্য

কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০২৫, ০১:১৫ এএম

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের কাকিয়ারচর এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুল হকের বিরুদ্ধে। ১৪ জুলাই বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিডিসিএল) ভিজিলেন্স টিম ও ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পরিচালিত বিশেষ অভিযানে ১৩টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। আগের অভিযানে আরও ৭টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বিএনপির সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের মোকাম ইউনিয়নের সহ-সভাপতি আব্দুল হক দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে আসছেন। অভিযানের খবর পেয়েই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান তিনি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতিটি সংযোগ দিতে গ্রাহকের কাছ থেকে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করেন আব্দুল হক ও তার সিন্ডিকেট। স্থানীয় কয়েকজন জানান, তারা আব্দুল হককে অর্থ দিয়ে অবৈধ সংযোগ নিয়েছেন। অভিযানে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাকিয়ারচর এলাকায় সাদাত জুট মিলসের পাশেই অবস্থিত আব্দুল হকের সিন্ডিকেটের মূল কার্যক্রম। স্থানীয় আবিদ আলীর চার ছেলে- রফিক, মাসুক, মাহফুজ ও ইমরানসহ শতাধিক পরিবার এই অবৈধ সংযোগ ব্যবহার করছে। অথচ, সরকারি বৈধ গ্রাহকরা নিয়মিত বিল পরিশোধ করে আসছেন, যার সংখ্যা এ এলাকায় প্রায় ২০০।

স্থানীয়রা জানান, বাখরাবাদের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের কর্মচারীরা এই অবৈধ বাণিজ্যে জড়িত। একাধিক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈধ গ্রাহক বলেন, ‘আমরা বিল দিচ্ছি, অথচ অবৈধ সংযোগকারীরা কোনো বিল দিচ্ছে না। এটা আমাদের সঙ্গে চরম অবিচার।’

বিষয়টি নিয়ে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৩০ জুন ও ১৪ জুলাই দুটি অভিযান পরিচালিত হয়। দুটি অভিযানে মোট ২০টি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত কারো বিরুদ্ধে মামলা কিংবা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এদিকে, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বিমল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘কাকিয়ারচর এলাকায় দুই দফা অভিযানে ২০টি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তবে এখনো মামলা হয়নি।’
স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন, বারবার অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা নতুন করে সংযোগ চালু করছে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে, আর সাধারণ বৈধ গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।