রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৫, ০৪:৩৩ এএম

‘জ্বালানি খাতে ১৫ বছরের দুর্নীতি তদন্ত করে তালিকা প্রকাশের আহ্বান’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৫, ০৪:৩৩ এএম

‘জ্বালানি খাতে ১৫ বছরের দুর্নীতি তদন্ত করে তালিকা প্রকাশের আহ্বান’

‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’ আয়োজিত ছায়া সংসদে। ছবি-সংগৃহীত

জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ১৫ বছরের ব্যাপক দুর্নীতি ও লুণ্ঠনের অভিযোগ তুলেছেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

শনিবার রাজধানীর এফডিসিতে ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’ আয়োজিত এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, এই খাতে জড়িত দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রকাশ ও তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হোক।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে দুর্নীতির সব রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে। এই খাতে জড়িত দুর্নীতিবাজদের অধিকাংশই দেশ থেকে পালিয়েছেন, তাদের তদন্ত করে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা অপরিহার্য।

জ্বালানি খাতে লুণ্ঠনের চিত্র

তিনি অভিযোগ করেন, রামপাল, মাতারবাড়ী ও রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো মেগা প্রকল্পগুলো অর্থনীতির ওপর বিশাল বোঝা চাপিয়েছে। বহির্দেশীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তিগুলোকে তিনি ‘জাতীয় স্বার্থবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে তা বাতিলের পথ খোঁজার আহ্বান জানান।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার নাজুক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং এটি বন্ধ করা উচিত। এর ফলে সাময়িক ক্ষতি হলেও, দুর্নীতিবাজদের বাজেয়াপ্ত সম্পদ দিয়ে তা পূরণ করা সম্ভব।

অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রত্যাশা থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু পদক্ষেপ হতাশ করেছে। তিনি উল্লেখ করেন, জ্বালানি খাতের দায়মুক্তি আইন বাতিল করা হলেও বিগত সরকারের প্রকল্পগুলোকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে, যা হতাশাজনক।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বিগত শাসন আমলে অর্থনৈতিক বিনিময় ছাড়া কোনো বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হয়নি। কতিপয় রাজনীতিবিদ, আমলা ও ব্যবসায়ী – এই তিন পক্ষের যোগসাজশেই জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সেক্টরে দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একক পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের হরিলুটের ঘটনা ঘটেছে। ট্রেড-বেইজড মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে ফার্নেস অয়েল ও কয়লা আমদানিতে ওভার ইনভয়েসিং করে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে জ্বালানি খাতের মাফিয়ারা।

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ আরও বলেন, অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাঁচামাল ফার্নেস অয়েল ও কয়লার বাংলাদেশী আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ও বিদেশে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান একই মালিকের নিয়ন্ত্রণাধীন কোম্পানি। 

আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের চাইতে দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে কয়লা ও ফার্নেস অয়েল আমদানি করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে এলসির পরিবর্তে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক দ্বিগুণ এরও বেশি মূল্যে আমদানিকারকের পক্ষে ইমপোর্ট পারমিট প্রদান করা হয়েছিল। 

এতে জনগণকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে, কলকারখানার উৎপাদন খরচ বাড়ছে, এবং ট্রেড বেইজড মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে দেশের টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে, যার প্রভাব রিজার্ভের ওপর পড়েছিল। তিনি দাবি করেন, শতভাগ জনগোষ্ঠীকে বিদ্যুতের আওতায় আনা হয়েছে বলে বিগত সরকার মানুষকে মিথ্যা গল্প শুনিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘ফেরি করে বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা বলা হলেও বিদ্যুতের ফেরিওয়ালারা এখন জেলে অথবা পলাতক।’ এছাড়াও, বিদ্যুতের এমন মিটার বসানো হয়েছে যেখানে বাতি না জ্বললেও মিটার ঘোরে।

প্রিপেইড মিটারে রিচার্জ করার সাথে সাথে এক চতুর্থাংশ টাকা মিটার খেয়ে ফেলে। শিল্প কারখানাগুলোতে গ্যাসের পাইপে গ্যাসের পরিবর্তে বাতাস দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। 

অন্যদিকে গৃহস্থলি কাজে গ্যাস সরবরাহ ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে, ফলে রান্না-বান্না ব্যাহত হলেও মাস শেষে ঠিকই বিল গুনতে হচ্ছে।

‘সঠিক পরিকল্পনার অভাবই জ্বালানি খাতে লুণ্ঠনের প্রধান কারণ’ শীর্ষক এই ছায়া সংসদে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় বিতার্কিকদের পরাজিত করে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকেরা বিজয়ী হন। 

প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, অধ্যাপক তাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাংবাদিক রিশান নসরুল্লাহ ও মো. মহিউদ্দিন।

প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!