অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু উপদেষ্টার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক।
গতকাল শনিবার (২৪ মে) দুপুরে রাজধানীর পল্লবীর ২ নং কমিউনিটি সেন্টারে মহানগর উত্তর বিএনপির এক যৌথসভায় তিনি বলেন, এসব উপদেষ্টা দুর্নীতি করে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করছেন এবং দেশের জনগণের টাকা পাচার করে নিজেদের পরিবারকে স্বাবলম্বী করছেন। তাদের দুর্নীতি জনগণের কাছে ইতিমধ্যেই প্রকাশ পেয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
আমিনুল হক বলেন, ‘জনগণ এই ধরনের দুর্নীতিবাজ উপদেষ্টাদের রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায় না। আমরা দ্রুত সময়ের ভিতরে এই দুর্নীতিবাজ উপদেষ্টাদের পদত্যাগ চাই।’
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিকভাবে সর্বজন শ্রদ্ধেয় একজন ব্যক্তিত্ব উল্লেখ করে আমিনুল হক বলেন, ‘তিনি যখন ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার কথা চিন্তা করছেন, এই সিদ্ধান্ত তার ব্যক্তিগত।’
তবে পরবর্তীতে কে বা কারা ক্ষমতার দায়িত্বভার গ্রহণ করবে, সেই সিদ্ধান্ত এ দেশের সাধারণ মানুষ এবং জনগণই নিবে বলে তিনি মনে করেন।
জনগণের ওপর বিএনপির পূর্ণ আস্থা রয়েছে জানিয়ে আমিনুল হক বলেন, তারা জনগণকে সঙ্গে নিয়েই সকল কার্যক্রম করতে চান এবং আগামীর স্বপ্নের ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে চলেছেন।
নির্বাচন ও সংস্কার প্রসঙ্গে বিএনপির অবস্থান
অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন প্রসঙ্গে আমিনুল হক বলেন, স্বৈরাচারমুক্ত হওয়ার পর এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যখনই তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলছেন, তখনই তারা ‘সংস্কার’ ও ‘স্বৈরাচারের বিচার’-এর কথা বলে বিভিন্ন অজুহাত দেখানোর চেষ্টা করেছে।
কিন্তু তাদের কোনো অজুহাত এখন পর্যন্ত কাজে লাগেনি। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, যদি সরকার নিজেদের চাহিদা পূরণের জন্য অহেতুক নির্বাচন পিছানোর অপচেষ্টা করে, তাহলে বাংলাদেশের জনগণ তা মেনে নিবে না।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দীর্ঘ ৯ মাসেও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে স্থিতিশীলতা ফেরাতে পারেনি। দেশি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের প্রশ্রয় দিয়ে তারা নিজেরাই বিতর্কের মধ্যে পড়ে গেছে।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানান, যার মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে এবং জনগণই ঠিক করবে কীভাবে বাংলাদেশ চলবে, এবং রাষ্ট্র সংস্কার ও স্বৈরাচারের দোসরদের বিচার করতে হবে।
আমিনুল হক বলেন, বিএনপি তরুণদের চিন্তা-ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চায়। বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে তিন কোটির বেশি তরুণ ভোটার রয়েছে। গত ১৫ বছর ধরে জনবিচ্ছিন্ন স্বৈরাচারী সরকারের কারণে তরুণ ভোটাররা ভোট দিতে পারেনি।
৫ আগস্টের পর যারা নতুন করে ভোটার হয়েছেন, তাদের নতুনভাবে বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বিএনপি সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চায়।
মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তফা জামানের সঞ্চালনায় যৌথসভায় উত্তরের যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এবিএমএ রাজ্জাক, এম কফিল উদ্দিন আহমেদসহ মহানগর উত্তর বিএনপির ২৬টি থানা ও ৭১টি ওয়ার্ড বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :