ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণকে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ‘ক্যান্সার’ বলা হয়। অর্থনীতির এই ‘ক্যান্সার’ এখন পাহাড় সমান হয়ে গেছে। সরকার পরিবর্তনের আগে গত বছরের জুন শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। বর্তমানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা।
অর্থাৎ বিতরণকৃত ঋণের ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ এখন খেলাপি। গত মার্চ পর্যন্ত খেলাপির হিসাব যোগ করে এই তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। জুন পর্যন্ত হিসাব এখনো তৈরি করেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ধারণা করা কঠিন, খেলাপি ঋণের পরিমাণ কত লাখ কোটি টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়! বিগত সরকারের ১৫ বছরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ১৯ গুণ। এই টাকা দেশে কাজে লাগলে অর্থনীতি উপকৃত হতো।
কিন্তু বেশির ভাগই বিদেশে পাচার হয়েছে। মোটা দাগে পাঁচ কারণে খেলাপি ঋণ বেড়েছে বলে মনে করছেন আর্থিক খাত বিশেষজ্ঞরা। সেগুলো হলো মেয়াদি ঋণখেলাপির সময় পুনর্নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে কিছু বড় অঙ্কের ঋণ বিরূপমানে শ্রেণীকৃত হওয়া, গ্রাহকের চলতি ঋণ নবায়ন না হওয়া, পুনঃতফসিল করা ঋণের কিস্তি যথাসময়ে পরিশোধ না হওয়া এবং বিদ্যমান খেলাপি ঋণের ওপর সুদ যোগ হয়ে বেড়েছে খেলাপি।
একসময় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট ঋণের যেখানে ৫ শতাংশের কম ছিল খেলাপি। কিন্তু বর্তমানে সবচেয়ে বেশি খেলাপি ঋণ বেসরকারি খাতে। এর অন্যতম কারণ বিগত সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বিভিন্ন ব্যাংক দখল করে ঋণের নামে বিপুল অর্থ লুট করা হয়। সেই টাকা আর ফেরত আসছে না।
দখল করা কোনো কোনো ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার এখন ৯৮ শতাংশে ঠেকেছে। বিভিন্ন জালিয়াতি করে ঋণের নামে বিপুল অর্থ বের করে নেওয়া শীর্ষ ঋণগ্রহীতাদের বেশির ভাগই এখন পলাতক। কেউ কেউ গ্রেপ্তার হয়ে জেলে আছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীর্ষ ঋণখেলাপিদের সম্পদ জব্দ করতে হবে। তাদের বিচারে গঠন করতে হবে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। অন্যথায় ব্যাংক খাত কখনোই ঠিক হবে না।
জানা যায়, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা নেওয়ার সময় দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল মাত্র ২২ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। আর শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরের মাস তথা গত বছরের সেপ্টেম্বরে তা ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ টাকায় ঠেকে। এ ঋণের বাইরেও প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ অবলোপন করা হয়।
আর খেলাপি কম দেখাতে গত কয়েক বছরে বাছ-বিচার ছাড়াই লাখ লাখ কোটি টাকার ঋণ পুনঃতফসিল ও ঋণ পুনর্গঠন করা হয়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের বিতরণকৃত ঋণের এক-তৃতীয়াংশ তথা ৬ লাখ কোটি টাকার বেশি ঋণ আগে থেকেই ‘দুর্দশাগ্রস্ত’।
অর্থনীতিবিদেরা অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করছিলেন যে তৎকালীন সরকারের ঘনিষ্ঠ ও প্রভাবশালীরা নানা অনিয়মের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বের করে নিয়েছেন, যার একটা বড় অংশ বিদেশে পাচার হয়ে গেছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র বের হতে শুরু করে। সেই সরকারের আমলে ব্যাংক থেকে প্রভাবশালীদের বড় অঙ্কের ঋণ দিতে নানা সুবিধা দেওয়া হয়। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ কাগজে-কলমে কম দেখাতে নেওয়া হয় একের পর এক নীতি।
সরকার পরিবর্তনের পর সেই নীতি থেকে সরে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মূলত ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ ও বহুল সমালোচিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হওয়া ব্যাংকগুলোর ঋণের প্রকৃত চিত্র বের হতে শুরু করেছে। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বেশি বেড়েছে।
একইভাবে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেশ বেড়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, এস আলমসহ আরও কিছু বড় ব্যবসায়ীগোষ্ঠী ঋণখেলাপি হয়ে পড়েছে। এতেও বেড়েছে খেলাপি ঋণ।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত জুন মাসে খেলাপি ঋণের সর্বশেষ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি বছরের মার্চ শেষে দেশের ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের স্থিতি ছিল ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা।
২০২৪ সালের মার্চে এ স্থিতি ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা ছিল। সে হিসাবে গত এক বছরে ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের স্থিতি বেড়েছে মাত্র ১ লাখ ১ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা। যদিও এ সময়ে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণই ২ লাখ ৩৮ হাজার ৪০ কোটি টাকা বেড়েছে।
গত বছরের মার্চে যে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা ছিল, সেটি এখন ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকায় ঠেকেছে। এর হারও ১১ দশমিক ১১ থেকে বেড়ে ঠেকেছে ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশে। সরকার পরিবর্তনের আগে গত বছরের জুন শেষে খেলাপি ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। সে তুলনায় বেড়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ শেষ ৯ মাসে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
খেলাপি ঋণের শীর্ষে বেসরকারি ব্যাংক
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এ সময়ে খেলাপি ঋণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোয়। এর অন্যতম কারণ, বিগত সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বিভিন্ন ব্যাংক দখল করে ঋণের নামে বিপুল অর্থ লুট করা হয়। সেই টাকা আর ফেরত আসছে না। দখল করা কোনো কোনো ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার এখন ৯৮ শতাংশে ঠেকেছে। একসময় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট ঋণের যেখানে ৫ শতাংশের কম ছিল খেলাপি। চলতি বছরের মার্চ শেষে বেসরকারি ব্যাংকের ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।
এসব ব্যাংকের মোট ঋণের যা ২০ দশমিক ১৬ শতাংশ। রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর ১ লাখ ৪৬ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা বা ৪৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। আর বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপি হয়েছে ৬ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা, যা ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এ ছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোর ৩ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ ঋণ খেলাপি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীর্ষ ঋণখেলাপিদের সম্পদ জব্দ করতে হবে। তাদের বিচারে গঠন করতে হবে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। অন্যথায় ব্যাংক খাত কখনোই ঠিক হবে না।
এ নিয়ে জানতে চাইলে ব্যাংক খাতের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান আনিস এ খান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নিয়মের বাইরে যেসব ঋণ দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো খেলাপি হয়ে পড়ছে। আমরা তখন জানতাম, একদিন ব্যাংক খাতে খারাপ পরিস্থিতি আসবে। এখন সেই দিন এসেছে, সব প্রকৃত তথ্য বের হয়ে আসছে। এর মধ্যে যারা ভালো ব্যবসায়ী তাদের সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। না হলে পুরো অর্থনীতি খারাপ হয়ে পড়বে।’
খেলাপি ঋণের ৭১ শতাংশই ১০ ব্যাংকে
দেশের ব্যাংকিং খাতের মোট খেলাপি ঋণের ৭১ শতাংশই রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি মিলিয়ে মাত্র ১০ ব্যাংকে। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত চার প্রতিষ্ঠান হচ্ছে অগ্রণী, জনতা, সোনালী ও রূপালী ব্যাংক। বাকি ছয়টি হলো ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক। এই ১০ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ তিন লাখ ২৮ কোটি টাকা।
গত মার্চ পর্যন্ত জনতা ব্যাংক মোট ৯৪ হাজার ৭৩৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে ৭০ হাজার ৮৪৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা খেলাপি হয়েছে। একসময়ের জনপ্রিয় জনতা ব্যাংক বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অ্যানটেক্স, ক্রিসেন্ট, বেক্সিমকো, থার্মেক্স ও এস আলম গ্রুপের ধারাবাহিক আর্থিক কেলেঙ্কারির কারণে সুনাম হারায়।
এর খেলাপি মাত্র নয় মাসে ৪৮ শতাংশ বেড়েছে। গত বছরের জুনে তা ছিল ৪৮ হাজার কোটি টাকা। ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় শরিয়াহভিত্তিক এই ব্যাংক বিতর্কিত এস আলম গ্রুপের কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে। গত বছরের আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত এই শিল্পগোষ্ঠী ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ নিয়ন্ত্রণ করত।
চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল ৪৭ হাজার ৬১৮ কোটি টাকা। এটি মোট বিতরণ করা ঋণের ২৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ইসলামী ব্যাংকের বিতরণ করা ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৬৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ঋণের অর্ধেকের বেশি নিয়েছে এস আলম গ্রুপ ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো। গত বছরের জুন শেষেÑঅর্থাৎ ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ঠিক আগে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল মাত্র সাত হাজার ৭২৪ কোটি টাকা।
শীর্ষ ঋণখেলাপিদের সম্পদ জব্দ ও ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ড. মইনুল ইসলাম বলেন, ‘ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সরকার। আসলে তারা কী ভাবছে, ঠিক বুঝতে পারছি না। দীর্ঘদিন বলে আসছি, শীর্ষ ঋণখেলাপিদের সম্পদ জব্দ করতে হবে। তাদের গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠাতে হবে। জেলের ভাত না খেলে তারা ঠিক হবে না। এর আগে একটা ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।
সে ট্রাইব্যুনালের আওতায় প্রতিটি ব্যাংকের শীর্ষ ১০ ঋণখেলাপির বিচার করতে হবে।’ বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘খেলাপি ঋণ বাড়তির এ ধারা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।’ তার ধারণা, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ৮ লাখ কোটি টাকা পর্যন্ত ছুঁতে পারে। কারণ, ঋণখেলাপিরা আগে যেসব সুযোগ-সুবিধা পেত, সেটা এখন বন্ধ। তা ছাড়া এখন লুকানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। যা আছে সবই প্রকাশ পাবে।
ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেনÑ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণের বড় একটা অংশ বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। সেটা ফেরতে কাজ চলছে। ইতিমধ্যে বিদেশে কিছু সম্পদ জব্দ হয়েছে, আরও হবে। এটাও ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অংশ। এ ছাড়া কয়েকজন বড় খেলাপি গ্রেপ্তার হয়ে জেলে আছেন, বাকিরা পলাতক। তাদের দেশে থাকা সম্পদ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) সংশ্লিষ্টরা কাজ করছে।’
খেলাপি ঋণ বাড়বে আগে ধারণা দিয়েছিলেন গভর্নর
খেলাপি ঋণ যে এভাবে লাফিয়ে বাড়বে, তা আগেই ধারণা দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। গত বছরের আগস্টে দায়িত্ব নেওয়ার পরই তিনি বলেন, খেলাপি ঋণ অনেক বাড়বে। আগের সেই কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, খেলাপি ঋণ আরও বাড়বে। কোনো তথ্য লুকিয়ে রাখা হবে না। তবে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর পর এটা আবার কমবে। এ ছাড়া নতুন করে বিতরণ করা ঋণ যেন খেলাপি না হয়, সে জন্য বিভিন্ন আইনি কঠোরতা আনা হচ্ছে।
বিগত সরকারের সময় নানা নীতিসহায়তার মাধ্যমে খেলাপি ঋণ কম দেখানো হতো। অবশ্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ কর্মসূচি শুরুর পর সংস্থাটি নীতিসহায়তা তুলে দেওয়ার শর্ত দেয়। বিশেষ করে মেয়াদি ঋণ অনাদায়ি থাকার ৬ মাস পর থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ হিসাব করার বিধান বাতিল এবং ঋণ পরিশোধ না করেও নিয়মিত দেখানোর সুযোগ বন্ধ করতে বলে সংস্থাটি।
এর মধ্যে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। বিভিন্ন জালিয়াতি করে ঋণের নামে বিপুল অর্থ বের করে নেওয়া শীর্ষ ঋণগ্রহীতাদের বেশির ভাগই এখন পলাতক। কেউ কেউ গ্রেপ্তার হয়ে জেলে আছেন। এসব কারণেই খেলাপি ঋণ লাফিয়ে বাড়ছে।
নতুন গভর্নর দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের ১৪টি বেসরকারি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। পরিবর্তন আসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনায়। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার সময় এ ব্যাংকগুলোয় নজিরবিহীন লুটপাট হয়েছিল।
আপনার মতামত লিখুন :