দেশের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে বেশ তোড়জোড় করেই বিগত সরকারের আমলে উদ্বোধন করা হয়েছিল দেশের অন্যতম বড় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র রামপালের। কিন্তু উদ্বোধনের প্রথম ৮ মাসেই যান্ত্রিক ত্রুটিসহ কয়লা সংকটে সাতবার বন্ধ হয় এর উৎপাদন। কোনো মাসেই উৎপাদন সক্ষমতার ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের মধ্যে কেন্দ্রটি ১ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারেনি
এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন করলেই কেন্দ্রটির বয়লারের মধ্যের টিউব ফেটে বন্ধ হয়ে যায় উৎপাদন। কিন্তু উৎপাদনক্ষম হলেও প্রতিদিন ২৬৪ মেগাওয়াটের জন্য অতিরিক্ত ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে। এতে করে প্রতিদিন রামপালের জন্য সরকারকে গচ্চা দিতে হচ্ছে ৩ কোটি ৪০ লাখ ৬২ হাজার টাকা।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মেয়াদ ২০ বছর ধরে হিসাব করলে কেন্দ্রটির মোট গচ্চার পরিমাণ দাঁড়াবে ২৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন অকেজো একটি প্রকল্প আওয়ামী লীগ সরকার ভারতকে করতে দিয়েছে শুধু দেশটির স্বার্থে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে কোনো বিশেষ অবদান রাখা তো দূরে থাক, কর্মকর্তাদের আকণ্ঠ দুর্নীতি আর অনিয়মে এটি এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কেন্দ্রের যত দুর্নীতি
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে যত বড় প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল তার মধ্যে বাগেরহাটের রামপালে এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি অন্যতম। বাংলাদেশ-ভারত জয়েন্ট ভেঞ্চারে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গরদাশকাঠি মৌজায় প্রায় ১ হাজার ৮৩৪ একর জমির ওপর নির্মিত হয়েছে এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ উদ্যোগে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১,৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিট নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে প্রথম ইউনিট ২০২২ সালের ডিসেম্বর ও দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে উৎপাদনে যায়। কিন্তু উৎপাদন শুরুর পর থেকেই কখনো কয়লা সংকট, কখনো কারিগরি ত্রুটি লেগেই আছে।
উৎপাদন শুরুর প্রথম বছরেই আট মাসে সাতবার নানা কারণে সাময়িক বন্ধ রাখতে হয়েছে কেন্দ্রটি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও কেন্দ্রটিতে এখনো বহাল রয়েছেন আগের কর্মকর্তারাই। যদিও চুক্তি অনুযায়ী একটা নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর এক-তৃতীয়াংশ দেশি কর্মী এখানে বেশি থাকার কথা ছিল কিন্তু এখনো বহাল তবিয়তেই রয়েছেন ভারতীয় কর্মীরা।
দেশি-বিদেশি এসব কর্মীর বিরুদ্ধে নিয়মিত উঠছে দুর্নীতির অভিযোগ। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রটিতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক)। বেতন বৈষম্য, কর মওকুফে অনিয়ম এবং মালামাল লুটপাটসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে গত ২৬ জুন কেন্দ্রটিতে অভিযান পরিচালনা করে দুদক।
পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী পরিচালিত অভিযানে দুদক কর্মকর্তারা রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভারত ও বাংলাদেশের কর্মীদের মধ্যে বেতন বৈষম্যের সুস্পষ্ট প্রমাণ পায়। শুধু তাই নয়, ভারতীয় কর্মীদের জন্য তিন বছর কর মওকুফ থাকলেও বাংলাদেশি কর্মীদের এ ধরনের কোনো সুবিধা নেই।
এ বিষয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান জানান, দুই দেশের নাগরিকদের বেতন বৈষম্য, কর মওকুফে অনিয়ম, কয়লা ক্রয়ে নয়-ছয়সহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের এসব জটিলতার পেছনে যেসব কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম কোম্পানির সাবেক প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী আবসার উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল। অভিযোগ রয়েছে, তিনি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সময় ভারতীয়দের এক তরফা সুবিধা দিয়েছিলেন। তার এই সহায়তার সুযোগে পুরোনো যন্ত্রাংশের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাংলাদেশের কাঁধে গছিয়ে দিয়ে গেছে ভারতীয় কোম্পানি। ধারণা করা হয়েছিল সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ খাত লুটের এই মাস্টারমাইন্ডকে গ্রেপ্তার করা হবে কিন্তু এখন হচ্ছে তার উল্টো।
দুই দিন পরপরই বন্ধ হয়ে যায় উৎপাদন: কেন্দ্রটি চালুর পরপরই প্রথম গত বছরের ১৪ জানুয়ারি কয়লা সংকটের কারণে সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ওই সময় এক মাসের মতো বন্ধ রাখা হয়। এরপর ২৩ এপ্রিল একই কারণে ১৫ দিন বন্ধ রাখা হয়, ৩০ জুলাই সাময়িক বন্ধ রাখা হয় ১৬ দিন। এভাবে প্রতি মাসে কখনো কয়লা সংকট, কখনো যান্ত্রিক ত্রুটিতে কোনো মাসে দুইবারও বন্ধ রাখতে হয়েছে
বিষয়গুলো নিয়ে বিব্রত খোদ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তারাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, প্রতি মাসেই রানিং বিদ্যুৎকেন্দ্র হঠাৎ বন্ধ ঘোষণা করতে হচ্ছে। এটা স্বাভাবিক হতে পারে না। কয়লা সংকট ভিন্ন বিষয়, কিন্তু চালুর পর থেকেই কারিগরি ত্রুটি কতবার হতে পারে? এটিকে বসিয়ে বসিয়ে ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়ার কোনো মানেই নেই।
কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের বেশকিছু যন্ত্রপাতিতে সমস্যা রয়েছে বলেও জানান তিনি। এর অন্যতম কারণ পুরোনো যন্ত্রপাতি উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা বলেন, কাজী আবসার উদ্দিন ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পুরোটা সময় সংশ্লিষ্ট কোম্পানির প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ভারতীয় কোম্পানিকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে গেছেন। এতে রাষ্ট্রের ক্ষতি হয়েছে কয়েক হাজার কোটি টাকা।
গলার কাঁটা রামপাল
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন ক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট। কেন্দ্রটি নিজস্ব ব্যবহার বাদে গ্রিডে একসঙ্গে ১২৬৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে। অন্তত পিডিবি তার নিজের বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়ে এমন ছাড়পত্র দিয়েছে। কিন্তু রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন শুরুর পর থেকে কোনো দিন এক মিনিটের জন্যও ১২৬৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেনি।
কেন্দ্রটির দুটি ইউনিটের সমান উৎপাদন ক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট করে। কিন্তু ৪৫০ থেকে ৫০০ মেগাওয়াট লোডের বেশি উৎপাদন করতে গেলেই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বয়লারের মধ্যে থাকা টিউব ফেটে যায়। কেন্দ্রের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর আগে যতবারই এই চেষ্টা করা হয়েছে ততবারই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎটির টিউব ফেটে কয়েক দিন বন্ধ থেকেছে।
এ জন্য পলাতক হাসিনার অনুমতি নিয়ে কেন্দ্রটির উৎপাদন সবসময় এক হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কেন্দ্রের ছাড়পত্র যেহেতু ১২৬৪ মেগাওয়াটের সেহেতু কেন্দ্রটি যাই উৎপাদন করুক না কেন ১২৬৫ মেগাওয়াটের ক্যাপাসিটি পেমেন্ট দেওয়া হয়।
প্রতিদিন রাষ্ট্রের গচ্চা ৩ কোটি ৪০ লাখ ৬২ হাজার
কেন্দ্রটি যেহেতু এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে না সেহেতু প্রতিদিন এক হাজার মেগাওয়াটের জন্য ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নির্ধারণ করা উচিত ছিল। এক হাজার মেগাওয়াটের চেয়ে বেশি অর্থাৎ যে ২৬৪ মেগাওয়াট কেন্দ্রটি কোনো দিন উৎপাদনই করতে পারবে না সেই অংশের জন্য ক্যাপাসিটি পেমেন্ট দেওয়া অবৈধ।
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ইউনিট প্রতি বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য পিডিবির কাছ থেকে ৪ দশমিক ৮৫ সেন্ট ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিয়ে থাকে। এখন প্রতিদিন কেন্দ্রটি যদি ২৬৪ মেগাওয়াট কম বিদ্যুৎ উৎপাদন করেও ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিয়ে যায় তাহলে সে অতিরিক্ত ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নেয় (২৬৪ X ১০০০ X ২৪ X ৪.৮৫)/১২০ X ১২০ বা ৩ কোটি ৪০ লাখ ৬২ হাজার টাকা অতিরিক্ত ক্যাপাসিটি
পেমেন্ট নিচ্ছে যা পুরোপুরি অবৈধ। কেন্দ্রটির মেয়াদকাল ২০ বছরে এই লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৪ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা। কাজী আবসার উদ্দিন কীভাবে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত: বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ কোম্পানি (বিআইএফপিসিএল)।
এই কোম্পানিটির বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কোম্পানির এক মেয়াদে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভারতের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়, পরের মেয়াদে বাংলাদেশের তরফ থেকে দেওয়া হয়। কোম্পানিটি বাংলাদেশে এক দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে মাত্র একটি কেন্দ্রই নির্মাণ করেছে।
শুরুতে কোম্পানিতে একজন ভারতীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব নেন কাজী আবসার উদ্দিন। আর কাজী আবসার উদ্দিনের সময়ই কেন্দ্রটির পুরো নির্মাণকাজ করে ভারত হেব্বি ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি বা ভেল।
এই কাজী আবসার উদ্দিন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হওয়ার আগেও ২০১৪ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বিআইএফপিসিএল’র প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা ছিলেন। অর্থাৎ ঠিকাদার কোম্পানি ভেলের নিয়োগের পেছনেও তার জোরালো ভূমিকা ছিল। প্রথম ভারতীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক চলে গেলে সেখানে ঠিকাদার কোম্পানি ভেলের ইচ্ছা এবং সুপারিশে কাজী আবসার উদ্দিনকে বিআইএফপিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। অর্থাৎ আবসার উদ্দিনের চাকরিকালীন ছয় বছরের মধ্যে কেন্দ্রটি নির্মাণে ভেল নিজেদের ইচ্ছামতো যন্ত্রাংশ বসিয়ে দিয়ে গেছে।
ভারতীয়দের ধরার শেষ চেষ্টাও নষ্ট করে দেওয়া হয়: প্রথমত, আবসারের নেতৃত্বে গুটিকয়েক কর্মকর্তা কেন্দ্র নির্মাণের সময় পুরোনো যন্ত্রাংশ বসানোর বিষয়টি তিনি আওয়ামী লীগ সরকারকে টের পেতে দেননি। দ্বিতীয়ত, সরকার যখন বুঝতে পারে কেন্দ্রটি ভবিষ্যতে দেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে তখন তৃতীয় একটি পক্ষকে দিয়ে বাণিজ্যিক উৎপাদনে কেন্দ্রটি কত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে তা ঠিক করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
এই কেন্দ্রটির পরামর্শক হিসেবে ভেল নিয়োগ দিয়েছিল জার্মান কোম্পানি ফিশনারকে। ফিশনার জার্মান কোম্পানি হলেও এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল সব ভারতীয়। বিআইএফপিসিএলের চাকরি চলে যাওয়ার পর আবসার উদ্দিন মাসিক আট লাখ টাকা বেতনে ফিশনারের অলিখিত পরামর্শক হিসেবে কাজ করতেন।
সর্বশেষ বিভিন্ন সংবাদপত্রে তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তার চাকরি চলে গেলেও তার সহযোগীরা এখনো কেন্দ্রটিতে দৌরাত্ম্য চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের তদন্ত করার জন্য খোদ নিজেই আহ্বান জানিয়ে তিনি রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, কেন্দ্রটি কমিশনিংয়ের আগেই আমি চলে এসেছি। বর্তমানে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন মানুষের দাবি-দাওয়া তুলছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই হয়তো আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। যদি তেমন হয় তাহলে তদন্ত হোক। আমার কোনো অসুবিধা নেই এক্ষেত্রে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ঢাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখতে রামপালের এই কেন্দ্রটি চালু করা হয়েছিল। কেন্দ্রটি থেকে ঢাকায় দৈনিক প্রায় ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। বাকি বিদ্যুৎ খুলনায় সরবরাহ করা হতো। কিন্তু বৈশ্বিক ডলার সংকটের কারণে ঋণপত্র খুলতে না পারায় গত বছরের জানুয়ারিতে প্রথমবারের মতো বন্ধ করে দেওয়া হয় এর উৎপাদন।
এর এক মাস পর গত ৯ ফেব্রুয়ারি ৩০ হাজার টন কয়লা জেটিতে আসার পর আনলোড করে ১৫ ফেব্রুয়ারি আবারও উৎপাদন শুরু করে কর্তৃপক্ষ। এরপরে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরেকটি জাহাজ আসলে উৎপাদন কিছুটা স্বাভাবিক হয়। কিন্তু তারপর থেকে একের পর এক যান্ত্রিক ত্রুটি লেগেই আছে কেন্দ্রটির। যাকে গলার কাঁটা হিসেবেই বিবেচনা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা: কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ¦ালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, রামপালের মাধ্যমে ভারত বাগেরহাট নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে এই অঞ্চলে বঙ্গোপসাগরের ওপর নজরদারি করছে। মংলা বন্দরের আধুনিকায়ন এবং মংলা থেকে সরাসরি কলকাতা ট্রেন লাইন নির্মাণ করে ভারত নিয়ন্ত্রণকে আরও জোরালো করেছে।
সুন্দরবনের পাশেই নির্মাণ করা রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে শুরু থেকেই বাংলাদেশের পরিবেশবাদীদের বিরোধিতার মুখে পড়েছিল সরকার। এমনকি ইউনেসকো রামপাল ইস্যুতে শক্ত অবস্থান নিয়েও বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ ঠেকাতে পারেনি। আফসোস অন্তর্বর্তী সরকারকেও এমন একটি প্রকল্প চালিয়ে যেতে হচ্ছে চুক্তি থাকায়। আমার পরামর্শ থাকবে চুক্তি বিবেচনা করা যায় কি না তা দেখার জন্য।
আপনার মতামত লিখুন :