বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২৫, ০২:১৮ এএম

আরচারির সম্পাদকের পকেটে প্রায় অর্ধকোটি টাকা!

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২৫, ০২:১৮ এএম

আরচারির সম্পাদকের পকেটে প্রায় অর্ধকোটি টাকা!          ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

আরচারির সম্পাদকের পকেটে প্রায় অর্ধকোটি টাকা! ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বিদেশে লোক পাঠানোর নামে অর্থ কেলেঙ্কারির সঙ্গে নাম জড়াল বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশনের বর্তমান অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদের। গত মার্চে বিতর্কের মধ্যে এই অ্যাডহক কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন তানভীর। আরচারির সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে এবার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

অস্ট্রেলিয়া ও ক্রোয়েশিয়ায় লোক পাঠানোর নামে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আরচারির সাবেক এই খেলোয়াড় ও আন্তর্জাতিক জাজ! এরই মধ্যে তানভীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে (এনএসসি) গত ২২ জুন একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন জাহানারা চৌধুরী (ঝর্ণা) নামের এক ভুক্তভোগী।

তিনি একজন মানবাধিকারকর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে অভিযোগপত্রে বলেছেন, সূত্রাপুর থানার ওয়ারীর টিকাটুলি অভয় দাস লেনের বাসিন্দা আরচারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ অস্ট্রেলিয়ায় লোক পাঠানোর নামে ৪৩ লাখ টাকা নিয়েছেন।

এর আগে জাহানারা চৌধুরীকে নিজের প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ব্রিজ ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ায় লোক পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন তানভীর। সেই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ৮ জনের পাসপোর্ট জোগাড় করে দেন জাহানারা। ব্যাংক ও নগদসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তানভীরের প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে ৮ জনের জন্য টাকা জমা দেন অভিযোগকারী। এর বিপরীতে যে ভিসা ও টিকিট দেওয়া হয়েছে, তা পুরোটাই জাল ও ভুয়া।

রূপালী বাংলাদেশকে জাহানারা চৌধুরী বলেন, ‘একই এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় সরল বিশ্বাসে তানভীরকে আমি টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু সে যে ভিসা ও টিকিট দিয়েছে, তা ভুয়া। আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে সে। এখন টাকা নিয়ে নানা রকম টালবাহানা করছে।’ তবে এখনো আইনগত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি জাহানারা।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে অভিযোগপত্র দিয়েছি। এনএসসির কর্তারা বলেছেন, বিষয়টি তারা মীমাংসা করে দেবেন। যদি না দেন, তাহলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’

জানাহারা জানান, অস্ট্রেলিয়ার ওয়ার্ক পারমিটের ভিসা দেওয়ার কথা বলেছিলেন তানভীর। জনপ্রতি ৮ লাখ টাকা করে দিতে হবে তাকে। ক্রোয়েশিয়ার ক্ষেত্রেও একই পরিমাণ টাকা। বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ার জন্য ৮ জন আর ক্রোয়েশিয়ার জন্য ২ জনের পাসপোর্ট তানভীরের প্রতিষ্ঠানে জমা দেওয়া হয়। দুবাই থেকে ক্রোয়েশিয়ার জন্য দেওয়া হয় আরও দুটি পাসপোর্ট। মোট ১২টি পাসপোর্ট নিয়ে কাজ করেন তানভীর। কিন্তু ওয়ার্ক পারমিটের কথা বলে অস্ট্রেলিয়ার ট্যুরিস্ট ভিসা আর রিজার্ভেশন বিমান টিকিট ধরিয়ে দেন আরচারির সাধারণ সম্পাদক।

জাহানারা বলেন, ‘তানভীর একজন চিটার। তার ম্যানেজিং পার্টনার পরিচয় দেওয়া আরাফাত জামানের (অপু) মাধ্যমে টাকা সংগ্রহের কাজ করান। জেলা থেকে টাকা সংগ্রহ করেন অপু। কিন্তু তাদের একজনের সঙ্গে আরেকজনের কথার কোনো মিল নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘তানভীর এমন প্রস্তাবও দেন যে, এখন সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় স্পোর্টস অর্গানাইজেশন থেকে বিদেশে লোক পাঠানো যাবে। তবে কীভাবে এটি করা হবে, তা আমার জানা নেই।’ আরচারির সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগপত্র পেয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম জানান, ‘আমরা এরই মধ্যে অভিযোগপত্রটি পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পরিচালক (ক্রীড়া)-কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন।’ 

নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেননি তানভীর আহমেদ। রূপালী বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘এই অভিযোগটা ভিত্তিহীন না, তবে যে পরিমাণ টাকার কথা বলা হয়েছে, সেটি সত্য না। ব্যাংকে যা দিয়েছিল, ওই পরিমাণ টাকাই। ওদের (ভুক্তভোগী) ভিসার জন্য একটা কনসালটেন্সি ফার্মকে দেওয়া হয়েছিল, তারা ভিসা দিয়েছে, এটার কপিও আমার কাছে আছে। ভিসার পর আরও অনেক বেশি পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করার কথা ছিল তাদের। কিন্তু তারা দিয়েছে মাত্র দুজনের টাকা। আরও ৬ জনের টাকা দেওয়ার কথা। বলা হয়েছিল, তিন-চার দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ করা হলে, আপনাদের পাঠানো হবে। তারা তা করেনি।’

তানভীর বনানীস্থ গ্লোবাল ব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল প্রতিষ্ঠানের কেউ নন বলে দাবি করেন। অথচ নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টসহ নানা জায়গায় নিজেকে গ্লোবাল ব্রিজ ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান ও সিইও বলে পরিচয় দেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে তানভীর বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। ওই যে অপু ছেলেটা তাদের সঙ্গে ছিল, ওর ওই কোম্পানির সঙ্গে সম্পর্ক। ওই কোম্পানি যেহেতু রেসপন্স পাচ্ছে না, তাই ভিসাগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। সেই কপিগুলোও আছে। ওই ছেলেকে ২০-২২ লাখ টাকা মনে হয় দিয়েছিল। ও তো বিদেশে। ও দেশে এলে হয়তো পাঁচ-সাত দিনের মধ্যে দেখি তাদের বসিয়ে কী করা যায়।’ স্পোর্টস ফেডারেশনের নাম ভাঙিয়ে বিদেশে লোক পাঠানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে তানভীর বলেন, ‘ও (জাহানারা) একটা মিথ্যুক। ও আমার ইমেজ নষ্ট করার চেষ্টা করছে।’

ভুয়া ও জাল ভিসার ব্যাপারে তানভীরের বক্তব্য, ‘এটা যখন ওয়েবসাইটে আসে, তখন কি এটা ভুয়া হয়? এখনো ওয়েবসাইটে ভিসা আছে, সেটিও বাতিল হয়ে যাবে, যেহেতু আমরা তাকে পাঠাতে পারছি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাসপোর্ট দিয়েছে ৮ জনের। আর টাকা দিয়েছে দুজনের। এটা কী করে হয়, বলেন?’ ক্রীড়াঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে, মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করে আরচারি ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটিতে এসেছেন তানভীর। তা ছাড়া তার বিরুদ্ধে খেলোয়াড়, কমিটির বিভিন্ন পদে থাকা, আন্তর্জাতিক ইভেন্টে বিদেশে লোক পাঠানোর ক্ষেত্রে অর্থ আদায় সাপেক্ষে তদবির করার অভিযোগ রয়েছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!