ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের আট ভোটকেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রথম স্তরে থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি সদস্য ও প্রক্টরিয়াল টিম। দ্বিতীয় স্তরে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন থাকবে। আর তৃতীয় স্তরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি প্রবেশমুখে সেনাবাহিনী ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে অবস্থান করবে।
ডাকসু নির্বাচনের ভিপি, জিএস ও এজিএস পদপ্রার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশনের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রয়োজন অনুযায়ী সেনাবাহিনী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবে এবং ভোট শেষে ফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত সেনা সদস্যরা ভোটকেন্দ্র কর্ডন করে রাখবেন। ভোট গণনার সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারো প্রবেশের সুযোগ থাকবে না।’ এ ছাড়া পুলিশ বাহিনী ভোটের দিন রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে। ইতোমধ্যে পুলিশের টহল টিমসহ সংশ্লিষ্ট শাখাগুলো সক্রিয় রয়েছে বলে জানানো হয় সেখানে।
তপশিল অনুযায়ী, ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। তার আগে সোমবার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। গতকাল মঙ্গলবার প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের আগের দিন ৮ সেপ্টেম্বর এবং নির্বাচনের দিন ৯ সেপ্টেম্বর মেট্রোরেলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন বন্ধ থাকবে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নির্বাচনের সাত দিন আগে থেকে আবাসিক হলে কোনো বহিরাগত থাকতে পারবে না। নিয়মিত টহল পরিচালনার মাধ্যমে এ ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে। তবে ছাত্রীদের হলগুলোতে কখনোই বহিরাগতরা থাকতে পারেন না।
নির্বাচনের দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। বৈধ শিক্ষার্থী, অনুমোদিত সাংবাদিক ও নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা ছাড়া অন্য কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। যে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে থাকেন, তাদের ভোট দেওয়ার সুবিধার্থে বিভিন্ন রুটে বাসের অতিরিক্ত ট্রিপের ব্যবস্থা করা হবে। এসব বাস যাতে নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়ার কথা বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জনসংযোগ দপ্তর বলছে, ‘এসব নিরাপত্তাসংক্রান্ত সিদ্ধান্তে কোনো প্রার্থী দ্বিমত পোষণ করেননি। সবাই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’ রিটার্নিং কর্মকর্তারা সভায় নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে চলতে এবং সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন। নির্বাচন কমিশনের প্রধান অধ্যাপক জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে অন্য সদস্যরাও সভায় উপস্থিত ছিলেন।
ডাকসু নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থী হলেন ৪৭১ জন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থী হয়েছেন ৪৭১ জন। মোট ৫০৯ জন প্রার্থীর মধ্যে ২৮ জন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন এবং ১০ জন আপিল করেননি। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে চূড়ান্ত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ১২ জন প্রার্থী রয়েছেন।
এর আগে গত ১২ আগস্ট থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন এবং ২০ আগস্টের মধ্যে জমা দেন। এবার কেন্দ্রীয় সংসদে মোট ২৮ পদে শিক্ষার্থীরা লড়বেন। এসব পদের মধ্যে রয়েছে সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহ-সাধারণ সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক, ক্রীড়া সম্পাদক, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক, সমাজসেবা সম্পাদক, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক, মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক এবং ১৩টি নির্বাহী সদস্য পদ।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন