ঢাকা বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

৭২% ব্যবসায়ী মনে করেন কর  কর্মকর্তারা দুর্নীতিতে জড়িত: সিপিডির জরিপ

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৫, ০৬:৩৩ এএম
সিপিডির জরিপ

বাংলাদেশের কর ব্যবস্থা নিয়ে ব্যবসায়ীদের আস্থার সংকট দিন দিন বাড়ছে। গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) পরিচালিত সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, ৭২ শতাংশ ব্যবসায়ী মনে করেনÑ কর কর্মকর্তারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। একই সঙ্গে, ৮২ শতাংশ উদ্যোক্তা করব্যবস্থাকে অসংগতিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে আয়োজিত ‘করপোরেট ট্যাক্স ও ভ্যাট সংস্কার: এনবিআরের জন্য ন্যায়সংগত দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক এক সংলাপে এ জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ১২৩টি কোম্পানির প্রতিনিধির অংশগ্রহণে এই জরিপ পরিচালনা করে সিপিডি।

জরিপে আরও বলা হয়, প্রায় পাঁচজন ব্যবসায়ীর মধ্যে চারজন মনে করেন, কর কর্মকর্তাদের মধ্যে দায়বদ্ধতার অভাব রয়েছে। ফলে কর আহরণব্যবস্থার প্রতি আস্থাহীনতা ও অসন্তোষ প্রকট হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, ‘আমাদের কর-জিডিপি অনুপাত ক্রমেই কমছে। পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাদের অনুপাত ১২ শতাংশের বেশি; অথচ আমাদেরটা নেমে এসেছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।’

২০২৩ সালে কর ফাঁকির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, বলে সিপিডির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। অপরদিকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এনবিআর প্রায় ৩ লাখ ৭১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ করেছে।

রাজস্ব খাতে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘ভ্যাটের ক্ষেত্রে একটি একক হার নির্ধারণের চেষ্টা চলছে। তবে ব্যবসায়ীরাই এতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন। এখন ভ্যাট দিতে আর কারো কাছে যেতে হয় না, অনলাইনে এক ক্লিকেই পরিশোধ করা যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কর্মসংস্থান সৃষ্টির স্বার্থে দেশি-বিদেশি কোম্পানিকে কর ছাড় দিয়ে থাকি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে আট বছরের জন্য দেওয়া ছাড় ৪০ বছর পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হয়। এটি রাজস্ব ব্যবস্থাপনার অদক্ষতারই প্রমাণ।’

রাজস্ব সংগ্রহে কাক্সিক্ষত উন্নতি না হলে বিদেশি ঋণের বোঝা সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে উঠবে বলেও সতর্ক করেন আবদুর রহমান খান। তিনি জানান, রাজস্ব আহরণ প্রক্রিয়াকে কার্যকর করতে নীতিনির্ধারণ ও ব্যবস্থাপনাকে পৃথক দুটি বিভাগে ভাগ করা হবে।

সংলাপে ব্যবসায়ী নেতা, উদ্যোক্তা ও অর্থনীতিবিদরা উপস্থিত থেকে করনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।