বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হাসান আরিফ

প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৫, ০৬:৪৪ এএম

কানাডার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হচ্ছে

হাসান আরিফ

প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৫, ০৬:৪৪ এএম

বাংলাদেশ ও কানাডার পতাকা। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশ ও কানাডার পতাকা। ছবি- সংগৃহীত

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ফলে কানাডার বাজার হারাতে পারে বাংলাদেশ। তাই কানাডার বাজার ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশ-কানাডা দ্বি-পাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (বিসি এফটিএ) করার প্রক্রিয়া শুরু করছে সরকার। সম্প্রতি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও বাণিজ্য উপদেষ্টার মধ্যে সরকারি পত্র বিনিময় এবং মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এ বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে দুজনেই এ বিষয়ে একমত হয়েছেন। উভয় পক্ষ দ্রুত এফটিএ করার বিষয়ে একমত হয়েছেন। দুই দেশের মধ্যে এফটিএ নিয়ে আলোচনা শুরু হচ্ছে শিগগিরই। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

চলতি মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের পর কানাডার বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার হারাতে পারে। ফলে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানি বাজার সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এফটিএ চুক্তি জরুরি হয়ে পড়ে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক বৈঠকে অংশীজনদের মতামত এবং প্রেজেন্টেশনের পর সভায় উপস্থিত সবাই কানাডার সঙ্গে দ্রুত এফটিএ আলোচনা শুরুর বিষয়ে একমত পোষণ করেন।

এ বিষয়ে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ফলে কানাডায় পণ্য রপ্তানির শুল্কমুক্ত সুবিধা হারাবে। ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যকে কানাডার বাজারে প্রবেশের সময় সাধারণভাবে আরোপিত শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে। ফলে কানাডায় বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংকোচনের সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভাব্য এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কানাডায় বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংরক্ষণ, সম্প্রসারণ ও কানাডায় শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধার লক্ষে ‘বাংলাদেশ-কানাডা দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি’ জরুরি। কানাডার সঙ্গে এফটিএ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সেবা খাত-৪ প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রাপ্তি এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে লজিস্টিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে একটি দ্বি-পাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন সমীক্ষা পরিচালনা করেছে। ওই সমীক্ষা প্রতিবেদনের বিষয়ে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি (আরটিএ) নীতি-২০২২ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামতও নেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে চলতি মাসেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জানা গেছে, ওই সভায় ‘বাংলাদেশ-কানাডা দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি’র সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ, আমদানি-রপ্তানি ও রাজস্বের ওপর প্রভাবসহ সার্বিক বিষয় সম্পর্কে উপস্থাপন করা হয়।

এর আগে বাণিজ্য উপদেষ্টার কাছে একটি ডিও পত্রে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, সম্প্রতি কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত আসিয়ান রিজিওনাল ফোরামের মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে অংশগ্রহণের সময় চলতি বছরের ১০ জুলাই কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সাক্ষাৎ হয়। ওই সাক্ষাতের মূল বিষয় হিসেবে কানাডা-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ ও চলমান বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষা ও উন্নয়ন চুক্তি (এফআইপিএ-ফিপা) সংক্রান্ত আলোচনা দ্রুত সমাপ্তির বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া চলতি বছরের ৫ মে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে কানাডার ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের বাণিজ্য প্রতিনিধি পল থপিলের বৈঠকে ফিপাসহ বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে শিগগিরই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে সংলাপ শুরুর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। এ প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কানাডার সঙ্গে এফটিএ শুরুর কার্যক্রম গ্রহণের অনুরোধ জানান বাণিজ্য উপদেষ্টাকে।

সূত্র জানায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি চলমান বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষা ও উন্নয়ন চুক্তি (এফআইপিএ-ফিপা) সমাপ্তির পাশাপাশি এফটিএ আলোচনা শুরুর জন্য বলেছেন।

শিল্প মন্ত্রণালয় ও বিভার প্রতিনিধিরা বলেছেন, এফটিএ চুক্তি হলে সেখানে বিনিয়োগ অন্তর্ভুক্ত হবে নাকি ফিপাতে বিষয়টি চলমান থাকবে এ-সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন।

এ বিষয়ে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, চলমান বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষা ও উন্নয়ন চুক্তি (এফআইপিএ-ফিপা) সংক্রান্ত আলোচনা অব্যাহত রাখা যেতে পারে এবং কানাডার সঙ্গে এফটিএ আলোচনা শিগগিরই শুরু করা প্রয়োজন বলে তিনি বলেন।

এদিকে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়াতে দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য ও বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি নিয়ে সরকারি পর্যায়ে আলোচনার মধ্যেই বাংলাদেশের ব্যাপারে কানাডার ব্যবসায়ীরা আগ্রহ দেখিয়েছেন। তারা এ দেশের খাতভিত্তিক তথ্য জানতে চেয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে ২০২৪ সালে কানাডার সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ পৌঁছেছে ৩ দশমিক ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২৭ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা)। ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশের মধ্যে কানাডার সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী।

চলতি বছরের ১৫ জুলাই গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার ইন্দো-প্যাসিফিকবিষয়ক সহকারী উপমন্ত্রী (এডিএম) ওয়েলডন এপ প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে বাংলাদেশ সফর করেন। এ সফরে তিনি সরকার, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে অংশ নেন।

সফরে তিনি, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি জোরদারে প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশে টেকসই বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে আগ্রহ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি এবং বিনিয়োগ সম্ভাবনার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে টেকসই প্রবৃদ্ধি ও উদ্ভাবনে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেন।
 

Link copied!