- সিন্ডিকেটের অধিকাংশই ঢামেক ছাত্রদলের সাবেক নেতা
- ঢাকা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ডা. মো. জাবেদ
- তারেক রহমানের নামে চাঁদাবাজির অপরাধে ২০০৮ সালে হন বহিষ্কার
- সিন্ডিকেটে আরও আছেন ঢামেক ছাত্রদলের সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. সুমন, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. বিপ্লব, ঢাবি ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মারুফ হাসান রনি
- সিন্ডিকেট নিয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদন থাকলেও নেই প্রশাসনের মাথাব্যথা
- ঢামেকের রোগীদের নিজেদের পছন্দের বেসরকারি হাসপাতালে নিতেও বাধ্য করেন তারা
- এ সিন্ডিকেটে জড়িত আছেন ঢামেকের কয়েকজন চিকিৎসকও
- পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে টেন্ডার দিকে ঢামেক উপপরিচালককে হুমকি
ঢাকা মেডিকেলে সিন্ডিকেট শব্দটি নতুন নয়। বহু ধরনের সিন্ডিকেট এখানে দিনের পর দিন আধিপত্য বিরাজ করছে। আমরা তাদের নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। যেহেতু এখন সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য পাওয়া গেছে সেহেতু সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবেÑ ডা. সায়েদুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী
দেশের সবচেয়ে বড় সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক)। প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। এই বিপুল রোগীর চাপ ও হাসপাতালের বিশাল বাজেটকে ঘিরে বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন প্রভাবশালী গোষ্ঠীর আধিপত্য, চাঁদাবাজি এবং টেন্ডারবাজি চলমান রয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে। হাসপাতাল প্রশাসন, রাজনৈতিক ছত্রছায়া ও বাণিজ্যিক স্বার্থের কারণে এসব অনিয়ম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। আওয়ামী সরকারের পতনের পর ঢামেক ছাত্রদলের সাবেক কয়েকজন নেতার সংশ্লিষ্ট নতুন একটি ঠিকাদার শ্রেণি বিগত ১৫ বছর ‘বঞ্চিত’ থাকার অজুহাতে বিভিন্ন কাজের টেন্ডারের জন্য চাপ দিচ্ছেন হাসপাতাল পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতনদের। বিষয়টি নিয়ে বিব্রত খোদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি রূপালী বাংলাদেশের হাতে আসা এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে অভিযুক্তদের নাম স্পষ্টভাবে আসলেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও দিতে পারছে না নির্বিঘœ রোগীসেবা।
যদিও ঢামেকের সেবা নিয়ে এমনিতেই অভিযোগের শেষ নেই। এখানে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের নিয়মিত অভিযোগের মধ্যে রয়েছেÑ হাসপাতালের ভেতর ও বাইরে অ্যাম্বুলেন্স মালিক এবং সিন্ডিকেট জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে। সাধারণত দুই থেকে তিন কিলোমিটারের মধ্যে ভাড়া যেখানে পাঁচশ থেকে আটশ টাকা হওয়ার কথা, সেখানে দাবি করা হয় দুই থেকে তিন হাজার টাকা। এ ছাড়াও এখানকার মর্গে লাশ নিয়েও রয়েছে ব্যবসার অভিযোগ। মৃতদেহ হস্তান্তরে দালালচক্র আত্মীয়দের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করা যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। রয়েছে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দ্রুত দেওয়ার আশ^াসে টাকা আদায়ের অভিযোগও। এমনকি সরকারি ওষুধ ও খাবার সরবরাহ কার্যক্রমও নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে এসব সিন্ডিকেটের হাতে। এ ছাড়াও হাসপাতালে ফ্রি ওষুধ মজুত থাকা সত্ত্বেও রোগীদের হাসপাতালের বাইরের বেসরকারি ফার্মেসি থেকে কিনতে বাধ্য করার অভিযোগ বহুদিনের। ক্যান্টিন ও খাবার সরবরাহে রোগী-আত্মীয়দের কাছ থেকেও আদায় করা হয় অতিরিক্ত দাম। এসব সিন্ডিকেট ও অভিযোগকে পাশ কাটিয়ে ঢামেক কর্তৃপক্ষ তবুও স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে। তবে, নতুন আরেক প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের উপদ্রব সামলাতে গিয়ে ঢামেক সংশ্লিষ্টদের বেগ পোহাতে হচ্ছে।
সম্প্রতি রূপালী বাংলাদেশের হাতে আসা এক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে জানা যায়, বর্তমানে একশ্রেণির আধিপত্যবাদীদের উত্থানের কারণে স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রশাসন হিমশিম খাচ্ছে। আধিপত্যবাদীদের তালিকায় রয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাবেক কিছু ছাত্র; যারা এমবিবিএস শেষ করলেও বর্তমান সময়ে তারা ঠিকাদারির সঙ্গে জড়িত। এ ছাড়াও রয়েছেন ছাত্রদলের কিছু সাবেক ও বর্তমান নেতা এবং হাসপাতালের কয়েকজন ডাক্তার। এসব প্রভাবশালী ডাক্তার ও ছাত্রদলের নেতারা প্রকাশ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের রুমে ঢুকে টেন্ডারের তদবির করছেন। এ ছাড়াও উপপরিচালকের হোয়াটসঅ্যাপে টেন্ডার পেতে সহযোগিতা করার প্রস্তাবও দিচ্ছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে গড়ে ওঠা একটি ডায়াগনস্টিক ক্লিনিকে জোরপূর্বক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে বাধ্য করছেন। প্রভাবশালী এ সিন্ডিকেটে রয়েছেনÑ ঢাকা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ডা. মো. জাবেদ। যিনি বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাবের সাবেক সদস্য। ২০০৮ সালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে চাঁদাবাজির অপরাধে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ তালিকায় আরও রয়েছেন, ঢাকা মেডিকেল ছাত্রদলের সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. সুমন, ঢাকা মেডিকেল ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ডা. বিপ্লব, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ঢাবি ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মারুফ হাসান রনিসহ আরও কয়েকজন।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের ১৫ মার্চ দুপুর আনুমানিক ২টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের রুমে যান ডা. জাবেদ ও ডা. সুমন। এ সময় তারা তাদের পছন্দের কোম্পানিগুলোর পক্ষে টেন্ডার দিতে তদবির করেন। ঢামেক পরিচালক তাদের অন্যায় তদবিরে অসম্মতি জানালে তারা মনোক্ষুণœ হয়ে চলে যান। পরবর্তীতে একই মাসের ২৬ তারিখ ডা. জাবেদ হাসপাতালের উপপরিচালক আশরাফুল ইসলামকে হোয়াটসঅ্যাপে নিজেদের পছন্দের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন কাজের টেন্ডার দিয়ে সহায়তা করার তদবির করেন। এতে উপপরিচালক অসম্মতি জানালে তাকে হুমকিও দেন ডা. জাবেদ।
বর্তমানে নিয়ম অনুযায়ী ই-জিপিতে কোম্পানিগুলো তাদের প্রাইস রেটিং দিয়ে টেন্ডার ড্রপ করে। কিন্তু নিয়মবহির্ভূত পন্থায় ডা. জাবেদসহ অন্যরা পজিশনে অপেক্ষাকৃত দূরে থাকা কোম্পানিগুলোকে টেন্ডার দিতে বারবার ঢামেক প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগ করে আসছে। ডা. জাবেদ ২৬ মার্চ উপপরিচালক আশরাফুল ইসলামকে তদবির করার পরদিনও ফের তাকে জোয়ারিয়া ইন্টারন্যাশনাল (সাপ্লাই আইটেম-গজ ব্যান্ডেজ, আইডি-১০৬৫২৭৮, টেন্ডার পজিশন-৩ এবং সাপ্লাই আইটেম-এমএসআর লিলেন, আইডি-১০৬৫২৭৭, টেন্ডার পজিশন-৭) নামক একটি কোম্পানিকে পজিশনে দূরে থাকা সত্ত্বেও টেন্ডার দিতে হোয়াটসঅ্যাপে হুমকি দেন। শুধু তাই নয়, হাসপাতালে আসা রোগীদের তাদের পছন্দমতো বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতেও বাধ্য করার অভিযোগও রয়েছে এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সিন্ডিকেট এমএস মক্কা ট্রেডার্স, এমএস তিশা এন্ট্রারপ্রাইজ, মার্ক লিমিটেড, সিসমার্ক লিমিটেডসহ কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। যেগুলো ঢাকা মেডিকেলের সব ধরনের পণ্যের টেন্ডার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নতুন এ সিন্ডিকেটের আধিপত্য ও টেন্ডারবাজির কারণে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন ডাক্তার, কর্মচারী ও রোগীরা। এ ছাড়াও হাসপাতাল প্রশাসন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় টেন্ডারবাজির কারণে অনেকটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে। এদিকে হাসপাতালের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে খোদ প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসন, কর্মকর্তা-কর্মচারী, ডাক্তার-নার্সসহ সংশ্লিষ্ট সবাই সন্দিহান প্রকাশ করছেন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয় উল্লেখ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, এই সিন্ডিকেটের কয়েকজন সদস্য আমার কাছে একাধিকবার এসেছিলেন। তারা বিগত সরকারের সময় বঞ্চিত ছিলেন বলে দাবি করে বিভিন্ন টেন্ডার পেতে চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু এখন তো সবই ই-টেন্ডারে পরিচালিত হয়। যে প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে কম দাম প্রস্তাব করবে তারাই কাজ পাবে। এখানে জোর-জবরদস্তি করে সরাসরি টেন্ডার দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটা তাদের আমি পরিষ্কার করে বলে দিয়েছি। ই-জিপি থেকে টেন্ডার পেলে পাবে, না পেলে নাই।
এদিকে সিন্ডিকেটের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা না থাকলেও নিজের ঠিকাদারি ব্যবসার কথা স্বীকার করেছেন অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত ডা. সুমন। রূপালী বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বিষয়ে আমি জানতে পেরেছি। আমার ঠিকাদারি ব্যবসা থাকলেও ঢাকা মেডিকেলের কোনো সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত নই।’ এ ছাড়াও অপর অভিযুক্ত ডা. জাভেদকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ করলেও কোনো রিপ্লাই দেননি তিনি।
দেশের সবচেয়ে বড় সরকারি এ হাসপাতালে এমন পরিস্থিতি চলতে পারে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘দেশের যেকোনো রোগীর শেষ আশ্রয়স্থল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এখানে এসব টেন্ডারবাজ ও আধিপত্য বিস্তারকারীদের নির্মূলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে অভিযান পরিচালনা করা যেতে পারে। হাসপাতালের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলায় সংশ্লিষ্টদের সাংগঠনিকভাবে দলীয় হাইকমান্ড থেকে সতর্ক ও শোকজ করা যেতে পারে বলেও মনে করি।’
টেন্ডারবাজির পাশাপাশি হাসপাতালের বিভিন্ন নির্মাণকাজ ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজেও বিশাল সিন্ডিকেট রয়েছে জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালটির এক চিকিৎসক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘ভবন সংস্কার, সরঞ্জাম ক্রয়, খাবার ও লন্ড্রি সেবা ইত্যাদি খাতে কোটি কোটি টাকার বরাদ্দ রয়েছে এখানে। এসব টেন্ডার প্রায়ই একচেটিয়াভাবে নির্দিষ্ট গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রণ করে। ছাত্ররাজনীতি ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের অংশগ্রহণে ‘দলীয় কোটা’ ধরে টেন্ডার ভাগাভাগি হয়। এ থেকে আয় করা অর্থের একটি বড় অংশ রাজনৈতিক কর্মকা-ে ব্যবহার হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়েরও অভিযোগ পাওয়া যায় প্রায় সময়ই।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওষুধ ও যন্ত্রপাতি সরবরাহে দুর্নীতির কারণে চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে। রোগীর আত্মীয়রা প্রতিদিন দালাল, চাঁদাবাজ ও টেন্ডার সিন্ডিকেটের কারণে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ঢামেক প্রশাসন মাঝে মাঝে দালালবিরোধী অভিযান চালালেও স্থায়ী সমাধান হয়নি। বিভিন্ন সময় র্যাব ও পুলিশের অভিযানে দালালচক্রের সদস্যরা গ্রেপ্তার হলেও অল্পদিনের মধ্যেই তারা আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে। দুদক কয়েকবার সরঞ্জাম ক্রয় ও টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়মের তদন্ত করলেও কার্যকর কোনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়নি। ফলে তারা এখনো সক্রিয় রয়েছে।’
স্বাস্থ্য খাত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালটিকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত প্রশাসন গঠন, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনা, হাসপাতাল এলাকায় স্থায়ী দালালমুক্ত জোন তৈরি, ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ওষুধ ও সরঞ্জাম বিতরণ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। এসব পদক্ষেপ ছাড়া ঢামেককে অনিয়ম থেকে মুক্ত করা সম্ভব নয়।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দলীয় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি নাÑ জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। দলের যেকোনো পর্যায়ের নেতা যদি চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি বা দুর্নীতিতে জড়িত থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দেশের সব রোগীর আস্থার জায়গা। এখানে যদি ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের কোনো সিন্ডিকেট থেকে থাকে এবং তারা যদি অনৈতিক সুবিধা আদায় করে তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল একটা বড় প্রতিষ্ঠান। দেশের সব মানুষের আস্থার স্থান। এখানকার কেনাকাটা থেকে সব ধরনের সেবায় স্বচ্ছতা আনতে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে। এখানে সিন্ডিকেট শব্দটি নতুন না। বহু ধরনের সিন্ডিকেট এখানে দিনের পর দিন আধিপত্য বিরাজ করছে। আমরা তাদের নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। যেহেতু এখন সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য পাওয়া গেছে সেহেতু সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন