ঢাকা বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৫

সংসদ নির্বাচন সাদাকালো ব্যালটে, গণভোট রঙিনে

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২৫, ০১:০৮ এএম

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে আয়োজনে অধ্যাদেশ অনুমোদন করা হয়েছে, যাতে সংসদের ভোটের ব্যালট সাদাকালো ও গণভোটেরটি রঙিন আকারে ছাপানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন করা এই অধ্যাদেশে পোস্টাল ব্যালটেও গণভোট দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে ব্রিফ করেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তার সঙ্গে ছিলেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব আখতার হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) সম্পর্কিত প্রস্তাবের বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষের মতামত নিতে গণভোট কীভাবে হবে, তা ঠিক করতে গণভোট অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হয়েছে। এ অধ্যাদেশ মন্ত্রিপরিষদের সভায় চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়েছে। আজকে (মঙ্গলবার) বা কালকের (বুধবার) মধ্যে এটার গেজেট নোটিফিকেশন হয়ে যাবে।’

গণভোটে একটি মাত্র প্রশ্ন থাকবে। প্রশ্নটা হলোÑ জুলাই জাতীয় সনদ আদেশ ও সংবিধান সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবে ভোটারের সম্মতি আছে কি না। সেখানে হ্যাঁ ও না দুটি বক্স থাকবে। সম্মতি জানালে ‘হ্যাঁ’ ভোট, অসম্মত হলে ‘না’ ভোট দিতে হবে। এ প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট থেকে গণভোটের ব্যালট আলাদা হবে। গণভোটের ব্যালট রঙিন হবে, যেন ভোটার বিভ্রান্ত না হন। সাধারণত সংসদ নির্বাচনের ব্যালট হয় সাদাকালো।

তিনি বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনের জন্য কমিশনের নিয়োগকৃত রিটার্নিং, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসার বা পোলিং অফিসাররাই গণভোটে রিটার্নিং অফিসার, পোলিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। গণভোটের ক্ষেত্রেও পোস্টাল ব্যালটের সুযোগ থাকবে বলে জানান উপদেষ্টা।

এ সময় নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার হোসেন জানান, ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ভোটার তালিকা নির্ধারণ হয়ে যাবে। সংসদ নির্বাচনের ব্যালট হবে সাদা কাগজের আর গণভোটের ব্যালট হবে রঙিন। প্রবাসীদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। একই খামে সংসদ ও গণভোটের ব্যালট পাবেন প্রবাসীরা। এ পর্যন্ত ৩১ হাজার ৮০১ জন প্রবাসী পোস্টাল ভোটে নিবন্ধন করেছেন।

গণভোটের প্রস্তাবগুলো হচ্ছে : ক. নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে। খ. আগামী জাতীয় সংসদ হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট এবং সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন প্রয়োজন হবে। গ. সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার এবং কয়েকটি সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, মৌলিক অধিকার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্থানীয় সরকার, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাসহ যে ৩০টি বিষয়ে জুলাই জাতীয় সনদে ঐকমত্য হয়েছে, সেসব বাস্তবায়নে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী রাজনৈতিক দলগুলো বাধ্য থাকবে। ঘ. জুলাই জাতীয় সনদে বর্ণিত অপরাপর সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা হবে। এ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গণভোট নিয়ে আরও অনেক সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা বিফ্রিংয়ে তুলে ধরা হয়।