ঢাকা বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৫

নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পর্যবেক্ষকদের আহ্বান জানিয়েছে ইসি

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২৫, ০১:০৯ এএম

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি জোরেশোরে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেই লক্ষ্যে নানা ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে কমিশন। জাতিকে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়াই নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ইসির এজেন্ডা একটাইÑ জাতিকে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়া। এ লক্ষ্যে দেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর প্রতি নিরপেক্ষ ও পেশাদার ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি। নির্বাচন প্রক্রিয়াতে স্বচ্ছতা (ট্রান্সপারেন্সি) নিশ্চিত করতে পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আর নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ দাবি করেছেন, আসন্ন নির্বাচন দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে স্বচ্ছ হতে যাচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন ভবনে দেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার নেতা ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সিইসি। এ সময় অন্যান্য কমিশনার এবং বিভিন্ন পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সিইসি বলেন, ‘আমরা জাতিকে একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে চাই। যত চ্যালেঞ্জই আসুক, এই কাজটি আমরা করতে চাই। আর এই কাজে আপনাদের সহযোগিতা খুব প্রয়োজন।’ তিনি পর্যবেক্ষকদের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘তাদের কাজ ভোটার ও রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা বাড়াবে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ইতিবাচক বার্তা দেবে।’

সিইসি পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রধানদের সতর্ক করে বলেন, ‘আপনাদের নিযুক্ত কর্মীরা যেন কখনো কারো দ্বারা প্রভাবিত না হয়। পর্যবেক্ষকরা যদি রাজনৈতিকভাবে মোটিভেটেড হয়ে কাজ করে, তাহলে পুরো ইমেজ নষ্ট হয়ে যাবে। তরুণ সংগঠন বা নতুন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সংস্থাকে তাদের কর্মীদের নির্বাচন করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।’ পর্যবেক্ষকদের ভূমিকার সীমা চিহ্নিত করে সিইসি বলেন, ‘আপনাদের কাজ হলো পর্যবেক্ষণ করা, হস্তক্ষেপ করা নয়। আপনারা কাউকে প্রভাবিত করতে পারবেন না, কাউকে লাইনে দাঁড় করাতে পারবেন না। শুধু রিপোর্ট করবেন, সঠিক সময়ে পরামর্শ দেবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের রিপোর্ট অবশ্যই নিরপেক্ষ, পেশাদার এবং বাস্তবতার প্রতিফলন হতে হবে, যা ভবিষ্যতে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার কাজে সহায়তা করবে।’ পর্যবেক্ষকরা যাতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে দায়িত্বশীল রিপোর্টিং করেন, সে বিষয়েও সতর্ক করেন সিইসি।

এ সময় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে স্বচ্ছ নির্বাচন হতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় যেকোনো ধরনের ব্যত্যয় ঘটানোর চেষ্টা করলে তাকে ন্যূনতম ছাড় দেওয়া হবে না বলেও তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি দেন।

পর্যবেক্ষকদের প্রতি কঠোর বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো পর্যবেক্ষক ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব করতে পারবে না। পর্যবেক্ষকদের তালিকা তফসিল ঘোষণার ১০ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হবে। মানহীন পর্যবেক্ষক নির্বাচনে প্রয়োজন নেই। আমরা শুধু মানসম্পন্ন ও নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষণ চাই। এ ছাড়া কোনো বিদেশি নাগরিক দেশি সংস্থার হয়ে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।’ বিদেশি নাগরিকদের অবশ্যই বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে তাদের নিজস্ব আইন-বিধিতে আবেদন করে পর্যবেক্ষণ করতে হবে বলে জানান তিনি।

২৯ নভেম্বর সংসদ ও গণভোটের মক ভোটিং : ২৯ নভেম্বর শনিবার গণভোট ও সংসদ নির্বাচনের ‘মক ভোটিং’-এর আয়োজন করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল মঙ্গলবার ইসির জনসংযোগ পরিচালক রুহুল আমিন মল্লিক এ তথ্য জানান। তিনি জানান, আগামী ২৯ নভেম্বর সব ধরনের ভোটারদের নিয়ে শেরেবাংলানগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ মক ভোটিং হবে। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে করার জন্য পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ইসি।