মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ১১:০৮ পিএম

আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, লন্ডনযাত্রা আরও পেছাল

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ১১:০৮ পিএম

আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স,  লন্ডনযাত্রা আরও পেছাল

  • বহুমুখী শারীরিক জটিলতায় খালেদা জিয়া
  • এক রোগ নিয়ন্ত্রণে এলে বাড়ে আরেকটি
  • লিভার নিয়ন্ত্রণে থাকলেও কিডনি নিয়ে উদ্বিগ্ন মেডিকেল বোর্ড
  • প্রতিদিন অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট দেওয়া হচ্ছে : চিকিৎসক 

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিতে ভাড়া করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ মঙ্গলবার আসছে না। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স অপারেটরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ আজ সকালে তাদের ঢাকায় নামার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু এয়ার অ্যাম্বুলেন্স অপারেটর গতকাল সোমবার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে আজকের ওই স্লট বাতিল করার আবেদন করেছে বলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একজন দায়িত্বশীল রূপালী বাংলাদেশকে জানিয়েছেন। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো পেছাল খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা। বিএনপি নেতারা বলছেন, তার লন্ডন যাত্রার বিষয়টি নির্ভর করছে তার শারীরিক অবস্থার ওপর। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তার চিকিৎসক দল।

এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত আছে। উন্নতি হচ্ছে, তবে তা খুবই ধীরগতিতে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার মূল যে সমস্যা তা হলো একটি জটিলতা কেটে গেলে নতুন করে আরেকটি জটিলতা দেখা দেয়। একটি রোগের প্যারামিটার নিয়ন্ত্রণে থাকলে আরেকটি বেড়ে যায়। যেমনÑ দীর্ঘদিনের পুরোনো লিভারের জটিলতা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও কিডনি নিয়ে উদ্বেগ আছে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের। শারীরিক অবস্থা কাক্সিক্ষত পর্যায়ে উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিয়ে উন্নত চিকিৎসার কথা ভাবছে না বোর্ড। তার চিকিৎসার সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত ২৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ৮০ বছর বয়সি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসের পাশাপাশি কিডনি, লিভার, ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে গত ২৭ নভেম্বর তাকে নেওয়া হয় ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ)। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত দেশি-বিদেশি দুই ডজনের মতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড প্রতিদিন বৈঠক করে চিকিৎসায় পরিবর্তন আনছেন।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রূপালী বাংলাদেশকে বোর্ডের একজন চিকিৎসক বলেন, ‘ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) উন্নতি আছে। তবে আহামরি বলা যাবে না। বয়সজনিত কারণে সেরে উঠতে সময় লাগবে। এই দফায় ওনার উন্নতি হচ্ছে খুবই ধীরগতিতে। ওনার মাল্টিপল ডিজিস (বহুমুখী জটিলতা) থাকায় একটি রোগ থেকে সেরে উঠলে আরেকটি দেখা দেয়। লিভার সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও কিডনি জটিলতায় বেশ ভুগছেন। কিডনির ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বর্ডার লাইন (ঝুঁকিপূর্ণ সীমা) অতিক্রম করেছে বেশ আগেই। এট নিয়ন্ত্রণে রাখাই কষ্ট হচ্ছে। এখানে বয়স একটা বড় ফ্যাক্টর। প্রতিনিয়ত ডায়ালিসিস দিতে হচ্ছে। ডায়ালিসিস বন্ধ করলেই কিডনির অবস্থার অবনতি হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিসিইউতে নেওয়ার পর থেকে প্রতিদিন নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। প্যারামিটারগুলো খারাপ আসছে না, তবে একেবারে ঝুঁঁকিমুক্তও হচ্ছেন না। সিসিইউতে অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট দেওয়া হচ্ছে। বোর্ড প্রতি রাতে বৈঠকে বসে। যেখানে প্রত্যেক চিকিৎসক আলাদা রোগ নিয়ে আলোচনা করেন। রিপোর্ট দেখে কিছু ওষুধ বন্ধ করেন, আবার চালু করেন। কিছু ওষুধের মাত্রা কমান কিংবা প্রয়োজনে বাড়িয়ে দেন। দেশে ফেরার পর বোর্ডে সশরীরে অংশ নেন খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান। তিনি বৈঠক শেষ করে বাসায় ফেরেন। বলা যায়, দিনের বেশির ভাগ সময় হাসপাতালে শাশুড়ির শয্যাপাশে কাটান। বাসায় থাকার সময়ও টেলিফোনে টাইম টু টাইম উনি তার শাশুড়ির স্বাস্থ্যের খোঁজখবর রাখছেন। চিকিৎসার বিষয়গুলো তিনি সমন্বয় করছেন।’

মেডিকেল বোর্ডের আরেকজন সদস্য জানান, ‘চিকিৎসকদের পরামর্শে গুলশানের বাসা থেকে প্রতিদিন খাবার পাঠানো হচ্ছে। সার্বক্ষণিক খালেদা জিয়ার সঙ্গে আছেন পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা, সৈয়দা শর্মিলা রহমান, গৃহপরিচারিকা ফাতেমা এবং স্টাফ রূপা আক্তার। বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, ভাইয়ের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা সার্বক্ষণিক পাশে আছেন। তাদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কথা বলার চেষ্টা করেন খালেদা জিয়া।’ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে এভারকেয়ার হাসপাতালের এক ডজন চিকিৎসক, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের  বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসার তদারকি করছেন।

চিকিৎসার জন্য কাতার আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে গত শুক্রবার ভোরে তাকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল বিএনপির তরফ থেকে। পরে ‘কারিগরি ত্রুটির কারণে’ সেই অ্যাম্বুলেন্স আসতে বিলম্ব হওয়ার কথা জানায় দলটি। কিন্তু শুক্রবার কাতার দূতাবাস থেকে বলা হয়, তাদের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসছে না। তার বদলে কাতারের আমির জার্মানি থেকে ভাড়া করে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাবেন। সেই অ্যাম্বুলেন্স কবে আসবে কিংবা খালেদা জিয়াকে কবে লন্ডনে নেওয়া হবে, তা বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো জানানো হয়নি।

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে একাধিক জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতায় ভুগছেন। এই অসুস্থতাগুলোর মধ্যে লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস (বাত) এবং কিডনি জটিলতা অন্যতম। বর্তমানে দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় পর্যবেক্ষণে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত রয়েছেন ডা. জুবাইদা রহমান। গতকাল সোমবারও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে যান ডা. জুবাইদা রহমান। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে আসেন। এ সময় তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ)। এদিন রাতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসক বোর্ডের সঙ্গে বসেন জুবাইদা রহমান। তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সর্বশেষ সভার বিষয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!