আপনি জানেন কি ডায়াবেটিসের কারণে আপনার মুখ ও দাঁতে নানাবিধ রোগ সৃষ্টি হতে পারে? ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘ মেয়াদি অসুস্থতা যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এটি শুধু হার্ট, কিডনি বা চোখেরই ক্ষতি করে না, বরং দাঁত ও মাড়ির উপরও মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
কি ক্ষতি হতে পারে
- ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকায় মুখের ভেতর ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। নিয়মিত দাঁত ব্রাশ না করার ফলে খাবার ও ব্যাকটেরিয়ার সংমিশ্রণে দাঁতের ফাঁকে ক্যালকুলাস জমে মাড়িতে প্রদাহ সৃষ্টি করে যা জিনজিভাইটিস নামে পরিচিত। এই অবস্থায় যদি চিকিৎসা না করা হয় তবে মাড়ির গভীরে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়ে যা পেরিওডোনটাইটিস নামে পরিচিত। এতে হাড় ক্ষয় হয়ে দাঁত নড়ে যায় এবং পড়ে যাওয়ারও আশঙ্কা থাকে।
- ডায়াবেটিসের কারণে লালা গ্রন্থির কার্যকারিতা কমে যায়। যার ফলে মুখে শুষ্ক অনুভূত হয় এবং মুখে থাকা এসিড দাঁতের এনামেলকে ক্ষয় করে। ধীরে ধীরে দাঁতে শিরশির অনুভূতি হয়।
- ছোট ছোট ক্ষয় থেকে দাঁতে বড় গর্ত সৃষ্টি করে যা থেকে তীব্র ব্যথা হতে পারে।
- ডায়াবেটিস রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় খুব সহজেই মুখ ও জিহবা ছত্রাক দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।
দাঁত ও মাড়ির রোগের লক্ষণ
- মাড়ি থেকে রক্ত পড়া।
- মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হওয়া।
- দাঁত নড়ে যাওয়া।
- মাড়ি ফুলে যাওয়া ও পুঁজ পড়া।
- দাঁতে তীব্র ব্যথা অনুভূত হওয়া।
- ঘনঘন মুখ শুকিয়ে যাওয়া।
- দাঁত শিরশির করা ও টক অনুভূত হওয়া।
- মুখ ও জিহ্বায় সাদা ছত্রাকের মতো দাগ দেখা দেওয়া ও জ্বালাপোড়া করা।
- মুখে ঘা হওয়া।
এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই অতি দ্রুত দন্ত চিকিৎসক বা ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
প্রতিকার
- রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ রাখা।
- প্রতিদিন দুই বেলা দাঁত ব্রাশ করা ও ফ্লসিং করা।
- এন্টিসেপটিক মাউথওয়াশ ব্যবহার করা।
- প্রচুর পানি পান করে মুখের আর্দ্রতা ঠিক রাখা।
- প্রতি ছয় মাস পর পর দন্ত চিকিৎসকের কাছে দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা।
ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস নিশী
ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি
ঢাকা ডেন্টাল কলেজ হাসপাতাল
চেম্বার: আলোক ডেন্টাল কেয়ার ইউনিট
(আলোক হেলথকেয়ার লি.)
মিরপুর-১০, ঢাকা
আপনার মতামত লিখুন :