বুধবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মির্জা হাসান মাহমুদ

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ০৩:০৮ এএম

শীতের আগে শিশুর রোগবালাই

মির্জা হাসান মাহমুদ

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ০৩:০৮ এএম

শীতের আগে শিশুর রোগবালাই

প্রকৃতিতে এখন হেমন্তকাল। সকাল-সন্ধ্যায় হালকা শীতের পরশে ঋতু বদলের বার্তা মিলছে। এই সময়টায় বড়দের মতো শিশুদের শরীরেও পরিবর্তন আসে। আবহাওয়া ঠান্ডা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ধুলাবালির প্রভাব বেড়ে যায়। ফলে শিশুদের মধ্যে সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে নিউমোনিয়া বা চর্মরোগ পর্যন্ত নানা সমস্যা দেখা দেয়। তাই শীতের শুরু থেকেই শিশুর যতেœ বাড়তি মনোযোগ দেওয়া দরকার। শীতে শিশুদের কোন রোগগুলো বেশি হয়, কোন রোগে করণীয় কী চলুন জেনে নিই-

ভাইরাল ফ্লু

শীতে শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় সাধারণ সর্দি-জ্বর বা ভাইরাল ফ্লু। অনেকেই ভাবেন শুধু ঠান্ডা লাগলেই সর্দি হয়, কিন্তু সর্দির মূল কারণ হলো ভাইরাস। বাতাসে ধুলাবালি, ধোঁয়া ও দূষণের কারণে এসব জীবাণু সহজে ছড়িয়ে পড়ে। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক কম হওয়ায় তারা দ্রুত আক্রান্ত হয়।

নাক দিয়ে পানি পড়া, কাশি, গলা ব্যথা, হালকা জ্বর ইত্যাদি ভাইরাল ফ্লুর সাধারণ লক্ষণ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ৫-৭ দিনের মধ্যে এ রোগ নিজে থেকেই সেরে যায়, তাই অ্যান্টিবায়োটিকের দরকার হয় না। শিশুকে বিশ্রাম দেওয়া, হালকা গরম পানি খাওয়ানো, পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাই যথেষ্ট। শীতে গরম কাপড় পরানো ও ধুলাবালি থেকে দূরে রাখা দরকার।

নিউমোনিয়া

নিউমোনিয়া শীতকালের একটি গুরুতর শ্বাসতন্ত্রের রোগ; যা ছোট শিশুদের বেশি হয়। ফুসফুসে সংক্রমণ হলে শিশুর শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, বুক ওঠানামা করে এবং নিশ্বাসের সময় পাঁজরের নিচের অংশ ভেতরে ঢুকে যায়। এছাড়া জ্বর, কাশি, নিস্তেজ ভাব ও খেতে না চাওয়াও নিউমোনিয়ার লক্ষণ। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে। শিশুর শরীর গরম রাখতে হবে, ঠান্ডা বাতাস থেকে দূরে রাখতে হবে এবং টিকা নিশ্চিত করতে হবে। নিয়মিত হাত ধোয়া, ঘর পরিষ্কার রাখা ও ধোঁয়ামুক্ত পরিবেশ তৈরি করাও নিউমোনিয়া প্রতিরোধে সহায়ক।

ব্রঙ্কিওলাইটিস

দুই বছরের কম বয়সি শিশুদের মধ্যে শীতকালে ব্রঙ্কিওলাইটিস দেখা যায়। এটি ফুসফুসের ক্ষুদ্রনালি সংক্রমিত হওয়ার ফলে হয়। প্রথমে নাক দিয়ে পানি পড়া, পরে কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। অনেক সময় অভিভাবকরা একে নিউমোনিয়া ভেবে অ্যান্টিবায়োটিক দেন, যা সঠিক নয়।

এই রোগ সাধারণত ৭-১০ দিনের মধ্যে সেরে যায়। তবে শিশুর শ্বাস নিতে অসুবিধা হলে বা খেতে না পারলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। শিশুকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও তরল খাবার দিতে হবে।

হাঁপানি

শীতের শুরুতে বা ঠান্ডা আবহাওয়ায় হাঁপানির সমস্যা বেড়ে যায়। এটি মূলত অ্যালার্জি ও শ্বাসনালির প্রদাহজনিত রোগ। ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, শোঁ শোঁ শব্দ করা বা রাতে ঘুম থেকে উঠে বসে পড়া হাঁপানির ইঙ্গিত হতে পারে। শিশুকে ধুলো, ধোঁয়া ও ধূপকাঠির ধোঁয়া থেকে দূরে রাখতে হবে। কোনো খাবারে অ্যালার্জি থাকলে তা না দেওয়াই ভালো। নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ বা ইনহেলার ব্যবহার করলে হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

ডায়রিয়া

শীতেও শিশুদের মধ্যে ডায়রিয়া হতে পারে। এটি সাধারণত ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে হয়। দিনে তিনবার বা তার বেশি তরল পায়খানা হলে ডায়রিয়া ধরা যায়। এতে শরীর থেকে তরল বের হয়ে যায়, ফলে শিশুর পানিশূন্যতা দেখা দেয়। এ সময় শিশুকে হালকা গরম পানি, ওরস্যালাইন ও তরল খাবার দিতে হবে। ঠান্ডা পানি বা অপরিষ্কার খাবার খেতে দেওয়া যাবে না। শিশুর হাত ও খাবারের পাত্র পরিষ্কার রাখা খুব জরুরি।

চর্মরোগ

শীতে আবহাওয়া শুষ্ক হয়ে

গেলে বড়দের মতো শিশুর ত্বকও রুক্ষ হয়ে যায়। ফলে ত্বকে চুলকানি, খোসা ওঠা বা ছোট ছোট দানা দেখা দিতে পারে। এই সমস্যা এড়াতে শিশুর ত্বকে প্রতিদিন ময়েশ্চারাইজার বা বেবি অয়েল ব্যবহার করা দরকার।

খুব ঠান্ডা আবহাওয়ায় খোলা জায়গায় বেশি সময় খেলতে না দেওয়াই ভালো। গোসলের সময় হালকা গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। অতিরিক্ত গরম পানি ত্বক আরও শুষ্ক করে দিতে পারে।

এ সময়ের যত্ন 

  • শিশুকে সব সময় পরিষ্কার ও শুকনো কাপড়ে রাখুন।
  • ঘরের জানালা খুলে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন।
  • ঠান্ডা পানি বা আইসক্রিম জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • শিশুর নিয়মিত টিকা
  • নিশ্চিত করুন।
  • পুষ্টিকর খাবার ও ফলমূল খেতে উৎসাহ দিন।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!