অনলাইনে আর্থিক লেনদেনের সুযোগ থাকায় সবার জীবনযাত্রা অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে। বিকাশ, নগদ, রকেট, শিওরক্যাশ, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড ইত্যাদি অনলাইন ব্যাংকিং সেবার কারণে আর্থিক লেনদেন জনসাধারণের জন্যে সহজ হওয়ায় এর গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেড়ে গেছে। এর পাশাপাশি বেড়েছে অনলাইন লেনদেনের ঝুঁকির পরিমাণও। অনলাইন লেনদেনের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো কী হতে পারে?
১. ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং অনলাইন অ্যাকাউন্ট হ্যাক হবার সম্ভাবনা থাকে। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার, পাসওয়ার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিরাপদে না রাখতে জানলে হ্যাকারের আক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। এসব তথ্য নিরাপদে রাখা জরুরি। শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দেওয়া অ্যাকাউন্টকে অনেক নিরাপত্তা দিতে পারে।
২. ভুল অ্যাকাউন্ট নাম্বারে টাকা চলে যাওয়া কোথাও টাকা পাঠাতে গেলে অ্যাকাউন্ট নাম্বাারের একটা সংখ্যা ভুল টাইপ করার কারণে ভুল নাম্বারে টাকা চলে যেতে পারে। লেনদেনের ক্ষেত্রে অসতর্ক থাকলে এ ধরনের সমস্যা খুব স্বাভাবিক।
৩. নকল পেমেন্ট গেটওয়েতে অ্যাকাউন্টের গোপনীয় তথ্য দেওয়া অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়েতে তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সাবধান থাকা জরুরি। অনেক সময় সত্যিকার ওয়েবসাইটের মতো করে ভুয়া ফিশিং সাইট বানানো হয় এবং এগুলোতে অনলাইন গেটওয়ের মাধ্যমে অ্যাকাউন্টের গোপনীয় তথ্য জেনে নিয়ে অ্যাকাউন্টের টাকা নিজ অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে নেয়। সন্দেহ হলে এসব গেটওয়ে চেনার জন্যে গুগলে সার্চ করে দেখে নিতে পার। আবার যে ওয়েবসাইটে কেনাকাটা করছ সেই ওয়েবসাইট আসল হলে পেমেন্ট গেটওয়ে আসল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ওয়েব এড্রেসটা খেয়াল করলে বুঝতে পারবে।
৪. অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়ার পরেও কাক্সিক্ষত সেবা না দেওয়া অনলাইনে কোনো অ্যাকাউন্টের সাবস্ক্রিপশন, ট্রেন-বাস-লঞ্চের টিকিট কেনার সময় টাকা কেটে নেওয়ার পরও কাক্সিক্ষত সেবা না পেতে পার। কখনো এমনও হতে পারে যে টাকা প্রদানের কোনো মেসেজই তোমার ফোনে এলো না যা দিয়ে অর্থ প্রদানের প্রমাণ দিতে পার। এমন সমস্যায় পরলে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সমস্যা সমাধান হতে পারে।
৫. এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলনের সময় অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেওয়ার পরেও টাকা হাতে না পাওয়া এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে অনেক সময় অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নিলেও এটিএম মেশিন থেকে টাকা বের হয় না। এটিএম বুথে যান্ত্রিক গ-গোলের জন্যে এমন হতে পারে। দ্রুত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা অ্যাকাউন্টে টাকা রিফান্ড করে দেয়।
৬. প্রয়োজনের চেয়ে বেশি টাকা চলে যেতে পারে যে পরিমাণ টাকা দেওয়ার কথা ছিল সে পরিমাণ না দিয়ে বেশি টাকা চলে যেতে পারে। দুই হাজারকে ভুল করে ২০ হাজার লিখে ফেলা অস্বাভাবিক না। এ ধরনের সমস্যা এড়ানোর জন্য কত টাকার সেবা নিচ্ছো এবং কত টাকা দিচ্ছো সেদিকে লক্ষ্য রাখ। টাকার অঙ্ক টাইপ করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। এ রকম অবস্থায় টাকা ফেরত পাওয়া গেলেও অনেক বিড়ম্বনা পোহাতে হবে। ৭। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সেজে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরি ফোনে কল দিয়ে বিকাশ বা অন্য কোনো অ্যাকাউন্ট অচল বা ব্লক হয়ে যাবার ভয় দেখিয়ে টাকা চুরি করতে পারে। ফোন নাম্বারে ওটিপি পাঠানো হয় এবং বিশ্বাসযোগ্য কথা বলে অ্যাকাউন্টের মালিককে ওটিপিটা পাঠাতে প্ররোচিত করা হয়। এই ওটিপি পাঠালে অ্যাকাউন্টের সব টাকা প্রতারকের অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটতে দেখা যায়।

