মোবাইল ফোন এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য সঙ্গী। আর এই ফোন ছাড়া যোগাযোগ যেমন অসম্ভব, তেমনি ফোনটিও পুরোপুরি অচল হয়ে যায় একটি ক্ষুদ্র প্লাস্টিকের টুকরো ‘সিমকার্ড’ ছাড়া। তবে, অপরিহার্য সিমকার্ডটিকে একটু খেয়াল করে দেখলে চোখে পড়ে ছোট্ট এক রহস্য, কার্ডটির এক কোনাকাটা। প্রযুক্তি ব্যবহারের এই যুগে আমরা ফোন বদলাই, সিম বদলাই, নেটওয়ার্ক বদলাইÑ কিন্তু সিমকার্ডের এই কাটাটি বদলে না। তাই প্রশ্ন জাগে, কী দরকার এই কাটার? এর সঙ্গে কি শুধুই ডিজাইনের সম্পর্ক, নাকি ভেতরে লুকিয়ে আছে প্রযুক্তিগত গভীর কোনো রহস্য? চলুন, বিষয়টি একটু খুলে বলা যাক-
সিমকার্ডের কোণা কাটা থাকার আসল উদ্দেশ্য
সিমকার্ডের সম্পূর্ণ নাম ‘সাবস্ক্রাইবার আইডেন্টিটি মডিউল’। এই মডিউলের ভেতরেই থাকে ব্যবহারকারীর নেটওয়ার্ক-সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য। কার্ডটিকে ভুলভাবে মোবাইলে বসানো হলে ডিভাইস সিম চিনতে পারবে না, নেটওয়ার্কও পাওয়া যাবে না। সেই ভুল ঠেকাতেই সিমকার্ডের একটি নির্দিষ্ট কোনা কেটে দেওয়া হয়, যেন ব্যবহারকারী সহজেই বুঝে ফেলতে পারেন কোন দিকে সেট করতে হবে। এদিকে মোবাইলের সিম ট্রের নকশাটিও এমনভাবে বানানো হয়, যাতে সিমকার্ডটি শুধু একটা নির্দিষ্ট অবস্থানেই ফিট হয়। সহজ কথায় কোনাকাটা থাকার প্রধান লক্ষ্য হলো, ব্যবহারকারী যেন বিভ্রান্ত না হন এবং সঠিকভাবে সিম সেট করতে পারেন। সঠিকভাবে সিম ঢোকানো না হলে ফোন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। আবার সিম ট্রে বা চিপের সঙ্গেও সমস্যা তৈরি হতে পারে। আর কোনাকাটা থাকার কারণে ফোনের হার্ডওয়্যার সিমকে সঠিকভাবে ‘অরিয়েন্ট’ করতে পারে এবং ডিভাইসের নিরাপত্তাও বজায় থাকে।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ঠিক করা নকশা
ওঝঙ- অর্থাৎ ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডের তরফে সিম কার্ডের নকশা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ীই সিমের আকৃতি এমন করা হয়ে থাকে। এক কোণা কাটার বিষয়ও ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডেই ঠিক করা। যাতে যে কোনো সংস্থার ফোনেই ব্যবহার করা যায়।
তবে সবকিছুর মূলে প্রধান লক্ষ্য সাবক্রাইবার স্বচ্ছন্দবোধে। তাদের যাতে সিম সেট করতে কোনোরকম সমস্যা না হয়, সে কারণে এটিকে একটি চিহ্নও বলা যায়। অতিরিক্ত ভাবনা চিন্তা ছাড়া সকলেই সহজে সিম সেট করতে পারেন ফোনে। নেটওয়ার্ক এবং ডিভাইসের নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত হয়।

