বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


জালালউদ্দিন সাগর, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৫, ০৫:২৪ এএম

সূক্ষ্ম চুরিতে শতকোটির ধান্দা

জালালউদ্দিন সাগর, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৫, ০৫:২৪ এএম

সূক্ষ্ম চুরিতে শতকোটির ধান্দা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট ফি নেওয়ার পরও রোগীর স্বজনদের মানসিক অবস্থাকে পুঁজি করে সূক্ষ্ম চুরির ফাঁদ পেতেছে চট্টগ্রামের ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো। সূক্ষ্ম চুরির ফাঁদে বছরে শতকোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।

রক্ত পরীক্ষায় নির্দিষ্ট ফি নেওয়ার পরও পরীক্ষা করার জন্য ব্যবহৃত নানা উপকরণের নাম দিয়ে রোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন অঙ্কের অর্থ।

যেমন-সিরিঞ্জ, রাবার বেল্ট, টর্নিকুইট বেল্ট, ভ্যাকুয়েট নিডল, ভ্যাকুয়েট ভায়োলেট, ভ্যাকুয়েট রেড, ভ্যাকুয়েট ব্ল্যাক, ভ্যাকুয়েট গ্রে, ভ্যাকুয়েট গ্রিন, ভ্যাকুয়েট ব্লু, ক্লোট একটিভেটর টিউব, ইডিএ টিউব, ফ্লোরিডা টিউব, পার্পল টপ ভ্যাকুটেইনার, গ্রে টপ ভ্যাকুটেইনার, ইউরিন ভাইয়াল, ডিবি শিট, বেডশিটসহ এ ধরনের অর্ধশত নানা উপকরণ। রোগীর কাছ থেকে কোনো কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১০০ থেকে ২০০ টাকা নিচ্ছে।

একই উপকরণ ব্যবহার করে অন্য কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিচ্ছে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা। উপকরণের ফাঁদে ফেলে বেশি অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশে অবস্থিত শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে। কোনো কোনো রোগীর ক্ষেত্রে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। যদিও নিজস্বভাবে নির্ধারণ করা নির্দিষ্ট ফির মধ্যেই রক্ত সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের মতো সেবা নিশ্চিত করার দায়ভার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের।

নগরীতে উপকরণের নামে বাড়তি অর্থ হাতিয়ে নেওয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল রয়েছে ৭০ থেকে ৭৫টি। এর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় সারির ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে ২০টির মতো। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যÑ শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ম্যাক্স হাসপাতাল, পপুলার ডায়াগনস্টিক, ইপিক, ইবনে সিনা, ল্যাব এইড, পার্কভিউ, মেট্রোপলিটন ডায়াগনস্টিক, সিগমা ল্যাব, সিএসসিআর, মেট্রো ডায়াগনস্টিক, সেনসিভ, বেলভিউ, এভারকেয়ার  ও ইমপেরিয়াল হাসপাতাল।

এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রতিদিন যে পরিমাণ রোগী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে আসে, তার মধ্যে বেশির ভাগ রোগীর রক্ত পরীক্ষা করাতে হয়। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, প্রথম ও দ্বিতীয় সারির এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রতিদিন গড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ রোগী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে থাকেন।

এর মধ্যে কোনো কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে আসা রোগীর সংখ্যা হাজারের বেশি। তার মধ্যে যদি গড়ে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ৫০০ রোগীর রক্ত পরীক্ষা করা হয়, তাহলে ২০টি ডায়াগনস্টিকে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার রোগী রক্ত পরীক্ষা করান। এই ১০ হাজার রোগীর কাছ থেকে গড়ে ২৫০ টাকা হারে অতিরিক্ত আদায় করা হলে প্রতিদিন বাড়তি আয়ের পরিমাণ ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। যা মাসে ৭৫ কোটি এবং বছরে ৯০০ কোটি টাকার বেশি।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের আশপাশসহ চট্টগ্রাম নগরীর প্রথম ও দ্বিতীয় সারির বেশ কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ, রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথোপকথন, একাধিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্বাধিকারী ও কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছেন এই প্রতিবেদক।

পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যবহৃত উল্লিখিত উপকরণের মূল্য পাইকারি বাজার বা আমদানিকারকের কাছ থেকে যে দামে ক্রয় করা হয়, রোগীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় তিন থেকে চার গুণ বেশি। ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো কোয়ালিটি, আধুনিকতা এবং আপগ্রেডেশনের অজুহাতে বছরের পর বছর রোগীদের কাছ থেকে বাড়তি অর্থ হাতিয়ে নিলেও এ সম্পর্কে কিছুই জানে না তদারকির দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক এবং চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কার্যালয়।

যদিও চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. অংসুই প্রু এবং চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম উভয়েই এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার নির্দিষ্ট ফি নেওয়ার বাইরে কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরীক্ষা-নিরীক্ষার উপকরণের নাম দিয়ে যদি বাড়তি ফি নিয়ে থাকে, সেটা অন্যায় এবং অমানবিক।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে গেলেও নির্দিষ্ট ফি ছাড়াও নগরীর শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ভ্যাকুয়েট সিরিঞ্জ এবং নিডলশিটের জন্য ২৫ টাকা থেকে ক্ষেত্রবিশেষে নিচ্ছে ৫০ থেকে ৭৫ টাকা পর্যন্ত। পার্পল টপ ভ্যাকুটেইনারের জন্য ২৫ টাকা ও বেডশিটের নামে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে ৪০ টাকা।

সিএসসিআরে রক্ত পরীক্ষা করাতে গেলে ভ্যাকুয়েট নিডলের নামে নেওয়া হচ্ছে ৩০ টাকা, ভ্যাকুয়েট ভায়োলেট ১৫ টাকা, ভ্যাকুয়েট রেড ১৫ টাকা, ভ্যাকুয়েট ব্ল্যাক ৩০ টাকা, ভ্যাকুয়েট গ্রে ১৫ টাকা, বেড টিস্যু ৩০ টাকা করে অতিরিক্ত ফি গুনতে হয় রোগীদের।

ম্যাক্স হসপিটালে ভ্যাকুয়েট নিডল ৩০, ভ্যাকুয়েট ভায়োলেট ১৫, ভ্যাকুয়েট রেড ১৫, ভ্যাকুয়েট ব্ল্যাক ৩০, ভ্যাকুয়েট গ্রে ১৫ ও ইউরিন ভায়াল ১৫ টাকা।

ন্যাশনাল হাসপাতালের নিজস্ব ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিগমা ল্যাব নিচ্ছে ভ্যাকুয়েট নিডল ৪০, রেড টিউব ২৫, গ্রে টিউব ২৫, বেড টিস্যু ৩০, ইউরিন টিউব ২৫ টাকা।

পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিচ্ছে ভ্যাকুয়েট নিডল ২০, রেড টিউব ২০, লেভেন্ডার টিউব ২০, গ্রে টিউব ২০ টাকা।

মেট্রোপলিটন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ্যাকুয়েট ভায়োলেট ২০, ভ্যাকুয়েট নিডল ২০, ভ্যাকুয়েট ব্ল্যাক ২৫, ভ্যাকুয়েট রেড ২৫, রেড টিউব ১৫ টাকা।

ইপিক হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ভ্যাকুয়েট নিডল ২০, ভ্যাকুয়েট রেড ২০, ভ্যাকুয়েট ব্লু ২৫, ক্লোট একটিভেটর টিউব ৩০, ইডিএ টিউব ৩০, ফ্লোরিডা টিউব ৩০ টাকা। আল্ট্রাসনোগ্রাফি প্রিন্টের জন্য যে পেপার ব্যবহার হয়, তার জন্য নেওয়া হচ্ছে ডিবি শিট ৪০ টাকা।

পার্কভিউ হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিচ্ছে ভ্যাকুয়েট নিডল ২৫, ভ্যাকুয়েট রেড ২৫, ভ্যাকুয়েট ব্লু ২৫, ভ্যাকুয়েট গ্রে ২৫, ভ্যাকুয়েট ভায়োলেট ২৫, ডিসপসেবল বেড টিস্যু ৩০ এবং রক্ত নেওয়ার জন্য যে ওয়ানটাইম বেল্ট ব্যবহার করা হয় (টর্নিকুইট বেল্ট) তার জন্য নেওয়া হচ্ছে ১৫ টাকা। 

একই উপকরণ ভিন্ন ভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ব্যবহার করছে ভিন্ন ভিন্ন নামে। নেওয়া হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন অঙ্কের অর্থ। এসব নিডল বা টিউব  কোথাও কোথাও ১৫ থেকে ২০ টাকা নেওয়া হলেও একই উপকরণ অন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভিন্ন নাম দিয়ে নেওয়া হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কোথাও কোথাও আবার ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। যদিও একাধিক বিক্রেতা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, ভ্যাকুয়েট নিডলসহ এসব উপকরণের মূল্য পাইকারি বাজারে অনেক কম।

সরেজমিনে তথ্য যাচাই করতে গিয়ে দেখা গেছে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি খুরশিদা বেগম নামে এক রোগীর এক্সরে, ইসিজি ও বিভিন্ন প্রকারের রক্ত পরীক্ষার জন্য ৭ হাজার ৫৬৫ টাকা বিল করে চট্টগ্রামের প্রথম সারির ডায়াগনস্টিক সেন্টার শেভরন। ইনভয়েস নম্বর ৪৯২১৬৯২।

ওই ইনভয়েসে এক্সরে চেস্টের জন্য নেওয়া হয়েছে ৬০০ টাকা (সরকারিভাবে নির্ধারিত), ইসিজির জন্য ৪০০ টাকা এবং সিবিসিসহ অন্যান্য রক্ত পরীক্ষার জন্য বিল করা হয়েছে ৬ হাজার ৩৫০ টাকা। এর বাইরে ভ্যাকুয়েট সিরিঞ্জ এবং নিডল শিটের জন্য ৫০ টাকা, রেড টপ ভ্যাকুটেইনারের জন্য নেওয়া হয়েছে ৭৫ টাকা, গ্রে টপ ভ্যাকুটেইনার ৫০ টাকা এবং বেডশিটের জন্য নেওয়া হয় ৪০ টাকা। রোগীর কাছ থেকে সর্বমোট ২১৫ টাকা বাড়তি আদায় করে শেভরন।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে আসা রোগীর স্বজনদের প্রশ্ন, রক্ত পরীক্ষার জন্য ৬ হাজার ৩৫০ টাকা নেওয়ার পরও রক্ত সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের জন্য আলাদাভাবে ফি দিতে হবে কেন? তারা আরও বলেন, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট হারে যে ফি নিচ্ছে, তার ভেতরে সব খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকার কথা।

একই অবস্থা নগরীর ম্যাক্স হাসপাতালের ক্ষেত্রেও। স্বপ্না বেগম নামে এক রোগীর কাছ থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ১০ হাজার ৯৫৬ টাকা বিল করেছে ম্যাক্স হাসপাতাল। বিল নম্বর এম২৫০২০৩৯৯৩০, তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫। এর মধ্যে ভ্যাকুয়েট নিডল ৩০, ভ্যাকুয়েট ভায়োলেট ১৫, ভ্যাকুয়েট রেড ১৫, ভ্যাকুয়েট ব্ল্যাক ৩০, ভ্যাকুয়েট গ্রে ১৫, ইউরিন ভায়াল ১৫, সিইউএস র‌্যান্ডমের জন্য ৪০ টাকা বাড়তি বিল করা হয়। সর্বমোট ১৫৫ টাকা।

সিগমা ল্যাবের বিল নম্বর এস২৫০২০১৩৮১৪। রোগীর নাম মিসেস রিমি। মোট বিল ৫ হাজার ৯৫ টাকা। এর মধ্যে ভ্যাকুয়েট নিডলের জন্য ৪০, রেড টিউব ২৫, গ্রে টিউব ২৫, বেড টিস্যু ৩০, ইউরিন টিউব ২৫ টাকা। সর্বমোট বাড়তি বিল নেওয়া হয় ১৪৫ টাকা।

মেট্রোপলিটন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিল নম্বর ডি২৫০৪৫৫৪৪৫০, রোগীর নাম মো. আলমগীর, তারিখ ৭ এপ্রিল ২০২৫। মোট বিলের পরিমাণ ৮ হাজার ৫৩০ টাকা। এর মধ্যে ভ্যাকুয়েট ভায়োলেট ২০, ভ্যাকুয়েট নিডল ২০, ভ্যাকুয়েট ব্ল্যাক ২৫, রেড টিউব ১৫ টাকা। সর্বমোট ৮০ টাকা।

নগরীর সিএসসিআর ডায়াগনস্টিক সেন্টার চলতি বছর ১৭ ফেব্রুয়ারি শারমিন আক্তার নামের এক রোগীর কাছ থেকে বিল নেয় ৬ হাজার ৯৫ টাকা, বিল নম্বর ০২৫০২৪৪৯৫৩১। এই বিলে ভ্যাকুয়েট নিডল ৩০, ভ্যাকুয়েট রেড ১৫, ভ্যাকুয়েট গ্রে ১৫, বেড টিস্যু ৩০ করে অতিরিক্ত ফি গুনতে হয় সর্বমোট ৯০ টাকা।

তথ্যানুসন্ধ্যানে জানা গেছে, করোনাকালে ১১টি পরীক্ষার ফি নির্দিষ্ট করে নির্ধারণ করে দেয় সরকার। প্রচলিত এসব পরীক্ষার ফি নির্দিষ্ট করে দেওয়ার ফলে দৈনিক আয় কমে যায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর।

একাধিক সূত্রের দাবি, যেহেতু বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অর্থের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, যে কারণে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নানা উপকরণের নামে বিলের সঙ্গে বাড়তি অর্থ আদায় করছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো।

এ বিষয়ে জানতে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার আশরাফ খানকে মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি বলেন, বিষয়গুলো সেন্ট্রাল থেকে করা হয়েছে। যেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেভাবেই বিল করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সভাপতি এবং মেট্রোপলিটন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ কে এম ফজলুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই প্রথা তো আগে থেকেই চলে আসছে। নতুন করে বাড়তি কিছু নেওয়া হচ্ছে না।

একটি ‘ট্রপোনিন আই’ পরীক্ষা করতে এক হাজার ৬০০ টাকা এবং লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা করতে এক হাজার ২০০ টাকা নেওয়ার পরও সিরিঞ্জ, ভ্যাকুয়েট টিউব কিংবা হাতে বাঁধা একটি ওয়ান টাইম বেল্টের জন্য আলাদাভাবে কেন ১০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নে জবাব এড়িয়ে যান তিনি। তিনি বলেন, আমরা কোয়ালিটি রিপোর্ট দিতে চেষ্টা করি। নির্দিষ্ট ফি নেওয়ার পরও অতিরিক্ত এসব ফি নেওয়া উচিত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্যরা নিচ্ছে তাই আমরাও নিচ্ছি।

অতিরিক্ত এই অর্থ আদায়কে ‘অমানবিক’ বলে মন্তব্য করেছেন মাইক্রোবায়োলজি বিশেষজ্ঞ ডা. শাকিল আহমেদ ও প্যাথলজি বিশেষজ্ঞ ডা. মাহফুজুর রহমান। তারা উভয়েই বলেন, যেহেতু আলাদা আলাদাভাবে প্রত্যেক পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট হারে ফি নেওয়া হচ্ছে, তার ভেতরেই সব ধরনের খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত। আলাদাভাবে সিরিঞ্জ, নিডল কিংবা বেল্টের জন্য রোগীর কাছ থেকে ফি নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

একই কথা বলেছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. অংসুই প্রু এবং চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম। তারা উভয়েই এই প্রতিবেদককে বলেন, এ ধরনের বাড়তি ফি নিয়ে থাকলে সেটা অবশ্যই অমানবিক ও অন্যায়। যেহেতু বিষয়টা নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি, সেহেতু আমাদের জানা ছিল না। আমরা বিষয়টি নিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সঙ্গে আলাপ করব।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!