উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে নিহতদের স্মরণে শনিবার সকালে শোক ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন (অব.) জাহাঙ্গীর খান।
তিনি বলেন, ‘পৌনে দুই বছর ধরে আমি এই কলেজের দায়িত্বে আছি। প্রতিদিন ছুটির সময় বারান্দায় দাঁড়িয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালন দেখি, শিক্ষার্থীদের গতিবিধি লক্ষ্য করি। ওই দিন প্রধান শিক্ষিকা সাক্ষাৎকারে ডেকে নেওয়ায় ১টা ৪ মিনিটে বারান্দা ছাড়ি। দুর্ঘটনাটি ঘটে ১টা ১২ থেকে ১৩ মিনিটের দিকে। না হলে আমিও হয়তো আর বেঁচে থাকতাম না।’
তিনি বলেন, ‘যে শিশুরা আমাদের ছেড়ে চলে গেছে, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। যদি দুর্ঘটনাটি কয়েক মিনিট পর হতো, তাহলে আরও কত শিশুর প্রাণ যেত, কে জানে!’
অধ্যক্ষ দায়িত্বশীলতার সঙ্গে বলেন, ‘যদি কেউ মনে করেন অবহেলার কোনো দায় রয়েছে, তবে সেই দায় একান্তই আমার। বিচার আপনাদের হাতে।’
অনুষ্ঠানে নিহত শিক্ষার্থী জারিফ হাসানের বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সেদিন সে নাকি স্কুলে আসতে চাইছিল না। ওর মা বলেছিল। ছেলে ছিল খুব চটপটে, খুব ফ্রেন্ডলি।’
এই ঘটনায় প্রাণ হারানো আরেকজন শিক্ষক মাসুকা বেগম। সহকর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি চাইলে বের হয়ে যেতে পারতেন, কিন্তু তিনি শিক্ষার্থীদের ছেড়ে রুম ত্যাগ করেননি। তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়।
মাসুকার দুলাভাই খলিলুর রহমান বলেন, ‘বিমান বিধ্বস্তের খবর পাওয়ার পরই আমরা উদ্বিগ্ন হই। বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে খুঁজে পাইনি। পরে হাসপাতালে তার খোঁজ পাওয়া যায়।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা আক্তার। দোয়া পরিচালনা শেষে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইংরেজি শিক্ষক নুসরাত আলম।
আপনার মতামত লিখুন :