বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজে ব্যবহৃত অকশনের জন্য জমা রাখা চাকা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া অন্য একটি বেসরকারি এয়ারলাইনসের কাছে বিক্রির অভিযোগে দুই কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তারা হলেনÑ বিমানের ম্যাটারিয়াল ম্যানেজমেন্ট সুপারভাইজার মো. আরমান হাসান ও স্টোর হেলপার সামছুল হক। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. সাফিকুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল শুক্রবার বিমান-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সম্প্রতি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের হ্যাঙ্গারে অকশনের জন্য রাখা বিমানের উড়োজাহাজের কিছু টায়ার জমা করা হয়। সেখান থেকে ১০টি টায়ার বিমান প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই ওই দুই কর্মী গোপনে বেসরকারি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের কাছে বিক্রি করেন। এ ঘটনা জানাজানি হলে তাদের বিরুদ্ধে বিমানের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ ছাড়া টায়ার চুরির ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় ওই দুই কর্মীর বিরুদ্ধে একটি জিডি করা হয়।
এ বিষয়ে বিমানের মহাব্যবস্থাপক ও জনসংযোগ কর্মকতা এ বি এম রওশন কবির সাংবাদিকদের জানান, কর্তৃক্ষের বিনা অনুমতিতে টায়ার বিক্রির অভিযোগে বৃহস্পতিবার বিমানের কর্মী আরমান হাসান ও সামছুল হককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। টায়ার চুরির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের চাকরি থেকে অবসান (টার্মিনেশন) করে বিমান প্রশাসন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. সাফিকুর রহমান বলেন, অপরাধীদের সঙ্গে কোনো আপস নেই। বিমানে কর্মরত কর্মকতা-কর্মচারীদের এখন আর অপরাধ করে ছাড় পাওয়ার সুযোগ নেই।
এ ব্যাপারে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালক (প্রশাসন) মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকবে। কোনো অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এর আগে গত সোমবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ১০টি টায়ার চুরির অভিযোগে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। বিমানের সহকারী ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) মোশারেফ হোসেন এ জিডি করেন। চুরির কথা না বলে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
জিডিতে বলা হয়, ১৬ আগস্ট সন্ধ্যায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ১০টি আনসার্ভিসেবল টায়ার বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্সের পাশে থাকা অকশন শেডে খুঁজে পাওয়া যায়নি। চাকার সন্ধান না পাওয়ায় বিমানের ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট সুপারভাইজার আরমান হোসেন ও স্টোর হেলপার সামসুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানা যায়, ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করেছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে এমন কাজ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিমানের মহাব্যবস্থাপক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এ বি এম রওশন কবীর জানিয়েছিলেন, নিলামে ওঠানোর জন্য বিমানের ব্যবহৃত টায়ার রাখা ছিল। সেখান থেকে ১০টি টায়ার বিমানের দুই সদস্য ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের কাছে বিক্রি করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টি ধরা পড়েছে। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের উপমহাব্যবস্থাপক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বিমানের চেয়ে ইউএস বাংলার উড়োজাহাজের সংখ্যা বেশি। ব্যবহার করা টায়ার নেওয়ার প্রশ্নই আসে না।