গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উচিত ছিল কিছু নির্দিষ্ট সংস্কার এজেন্ডায় নিজের কর্তৃত্ব কাজে লাগানো। অন্তত তিনি সেগুলো বাস্তবিকভাবে শুরু করতে পারতেন এবং পরবর্তী সরকারের জন্য তা উত্তরাধিকার হিসেবে রেখে যেতে পারতেন।’
আন্তর্জাতিক পরিসরে অধ্যাপক ইউনূস ব্যক্তিগতভাবে স্বীকৃত। ফলে সংস্কার কার্যক্রমের ক্ষেত্রে তার বড় ধরনের কর্তৃত্ব ছিল। কিন্তু তিনি তা করেননি; তার সরকারও করেনি বলে মন্তব্য করেন রেহমান সোবহান।গত শনিবার রাতে সমাজ গবেষণাকেন্দ্রের আয়োজনে জুম প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত ‘অর্থনৈতিক সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি: প্রতিশ্রুতি, প্রতিবন্ধকতা, বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন রেহমান সোবহান। আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক সেলিম রায়হান।
রেহমান সোবহান বলেন, ‘এ দায়িত্ব এসে পড়েছে নাগরিক সমাজের ছোট গোষ্ঠীর হাতে। ভিন্ন ভিন্ন ১০টি কমিশন থেকে আসা সংস্কার প্রস্তাব একত্র করার কঠিন চ্যালেঞ্জ নাগরিক সমাজের সামনে। এমনকি কমিশনগুলোর কার্যপরিধি ছিল না। সে কারণে সংস্কার প্রক্রিয়ায় সমন্বয় বা সংহতির অভাব দেখা গেছে; ছিল না অগ্রাধিকারের অন্তর্নিহিত ক্রম বা আদর্শিক ভিত্তি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি কমিশনের কাজ ছিল নিজেদের খাত নিয়ে নিজেদের মতো করে ভাবনা-চিন্তা করা। এরপর তুলনামূলকভাবে ছোট এক গোষ্ঠীর ওপর এসে পড়ে বড় রাজনৈতিক কাজের দায়Ñ ১০০ রাজনৈতিক দলকে বসিয়ে সংস্কার নিয়ে সমঝোতায় আসা।’
এখন সরকারের হাতে আর ছয় মাস সময় আছে। এর পরই তারা নির্বাচন আয়োজন করে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রেহমান সোবহান বলেন, ‘এখন আলোচনাটা হওয়া উচিতÑ এই ছয় মাসে তারা কী করবে এবং এর ফলে কী ধরনের ফলাফল আসতে পারে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো রওনক জাহান। এশীয় প্রবৃদ্ধি ইনস্টিটিউট ও জাতিসংঘের উন্নয়ন গবেষণার সাবেক প্রধান নজরুল ইসলাম ছিলেন সঞ্চালক। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিশ্বব্যাংক ও আইএফসির সাবেক কর্মকর্তা সৈয়দ আখতার মাহমুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরূপাক্ষ পাল প্রমুখ।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন