- লাইফ সাপোর্টে থাকা শিক্ষার্থী সায়েমের কপাল থেকে ঘাড় পর্যন্ত গভীর ক্ষত
- শিক্ষার্থী নাইমুলের হাতে চাপাতির কোপে গুরুতর জখম, এক হাত প্রায় বিচ্ছিন্ন
- ঘটনা তদন্তে ২১ সদস্যের কমিটি গঠন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের
- রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো হয়নি মামলা
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) সংলগ্ন জোবরা গ্রাম। দফায় দফায় সংঘর্ষে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত দুই শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
গত রোববার সারাদিন ধরে চলা শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সংঘর্ষে বাড়িঘর ভাঙচুর ও দোকানপাট লুটপাটের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। এলাকায় টহল দিচ্ছে যৌথবাহিনী। পুরুষশূন্য অবস্থায় পড়ে আছে পুরো জোবরা গ্রাম।
গত শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটে ভাড়া বাসায় প্রবেশের সময় দারোয়ানের সঙ্গে বাগবিত-ার একপর্যায়ে মারধরের শিকার হন এক নারী শিক্ষার্থী। খবর পেয়ে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা সেখানে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাঁধে। এর জেরে রোববার সারাদিন ধরে চলে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। তবে সংঘর্ষ চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি দেখা যায়নি।
সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি, প্রক্টর ও সাংবাদিকসহ অন্তত দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে। লাইফ সাপোর্টে থাকা শিক্ষার্থী সায়েমের কপাল থেকে ঘাড় পর্যন্ত গভীর ক্ষত রয়েছে। দায়ের কোপ মাথার খুলি ভেদ করে মস্তিষ্কে আঘাত করেছে। ইতিমধ্যে তাকে ছয় ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে এবং ৭২ ঘণ্টা লাইফ সাপোর্টে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। অন্য শিক্ষার্থী নাইমুলের হাতে চাপাতির কোপে গুরুতর জখম হয়। এক হাত প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, চট্টগ্রামে তার অস্ত্রোপচার সম্ভব নয় এবং হাত জোড়া লাগানো নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতিমধ্যে ঘটনাটি তদন্তে ২১ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। আহতদের চিকিৎসা ব্যয়ও বহন করছে বিশ্ববিদ্যালয়। তবে সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেল। তিনি বলেন, মামলা হলে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে যৌথবাহিনীর টহল চলছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ছাত্র সংগঠন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে জোবরা-ফতেপুর গ্রামের বাসিন্দাদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তারা ভবিষ্যতে এ ধরনের সংঘর্ষ এড়াতে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন