বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মাইনুল হক ভূঁঁইয়া ও দেলোয়ার হোসেন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫, ০৯:০৯ এএম

বেবিচকে প্রধান প্রকৌশলীর পদ যেন হাতের মোয়া

মাইনুল হক ভূঁঁইয়া ও দেলোয়ার হোসেন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫, ০৯:০৯ এএম

প্রকৌশলী

প্রকৌশলী

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রধান প্রকৌশলী পদ নিয়ে তুঘলকি কা- চলছে। সিনিয়রকে ডিঙিয়ে জুনিয়রকে, এমনকি মামলার আসামি এবং বিভাগীয় মামলা চলমান রেখেই প্রধান প্রকৌশলী করা এখন বেবিচকে যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে অভিযুক্ত এবং বিভাগীয় মামলা চলমান অবস্থায় চলতি দায়িত্ব দিয়ে পদায়িত প্রধান প্রকৌশলী (ইএম) জাকারিয়া হোসেনের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামীকাল ৪ সেপ্টেম্বর। এরপর কে হবেন প্রধান প্রকৌশলী, এ নিয়ে চলছে ব্যাপক জল্পনা।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখনো পর্যন্ত প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার দৌড়ে আছেন চার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী। এর মধ্যে এক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অধিকার ক্ষুণেœর অভিযোগে রিট করেছেন উচ্চ আদালত। আরেকজনকে করা হয়েছে ওএসডি। অথচ তিনি চারজনের মধ্যে সবচেয়ে সিনিয়র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী। তার নাম শহিদুল আফরোজ। 

রূপালী বাংলাদেশের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই প্রকৌশলী বারবার বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। এক সাজানো দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত, বিভাগীয় মামলা নিষ্পত্তির পর তাকে পাঁচ মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পর বেবিচকের রুটিন দায়িত্বের প্রধান প্রকৌশলী করা হয়। ১০ মাস তিনি সফলতার সাথে তার রুটিন দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু তাকে স্থায়ী না করে ১০ মাস পর দ্বিতীয়বার ওএসডি করে বসিয়ে রাখা হয়েছে। এতে করে বেবিচকে মেধাবী প্রকৌশলীদের মেধা কাজে লাগছে না। ১০ মাসের মাথায় আবার তাকে কেন ওএসডি করা হয়Ñ তা প্রশ্নবিদ্ধ। বর্তমানে তিনি ওএসডি অবস্থায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।

শহিদুল আফরোজকে দ্বিতীয়বার ওএসডি করে দুদকের চার মামলার আসামিকে আপত্তির পরও তার জুনিয়র প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানকে স্থায়ীভাবে প্রধান প্রকৌশলী নিয়োগ দেওয়া হয়। এর তিন মাস পর চাকরি এক্সটেনশন না পেয়ে হাবিবুর রহমান অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) চলে যান।

এরপর আবার দুদকের অভিযোগে অভিযুক্ত, বিভাগীয় তদন্ত চলমান অবস্থায় প্রকৌশলী (ইএম) জাকারিয়া হোসেনকে ছয় মাসের জন্য চলতি দায়িত্ব দিয়ে প্রধান প্রকৌশলী করা হয়। এই ছয় মাসের প্রধান প্রকৌশলীর মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৪ সেপ্টেম্বর। 

সিনিয়র প্রকৌশলী শহিদুল আফরোজকে বারবার বঞ্চিত করে এর আগেও জুনিয়র দুই প্রকৌশলীকে বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী করা হয়। এর মধ্যে প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামীকে দুর্নীতির অভিযোগে প্রত্যাহার করা হয়। আরেক প্রকৌশলী আব্দুল মালেককে দুদকের চার মামলা মাথায় নিয়ে বেবিচক থেকে বিদায় নিতে হয়। এখনো তার মামলা চলমান। যদিও সম্প্রতি সাবেক বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান এদের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। তিনি নিজেও দুদকের চার মামলার আসামি। আর সদ্যবিদায়ী চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া, যাকে বেবিচক থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছেÑ তিনি বলেছেন, দুদকের মামলার আসামি হলেও চার্জ না হওয়া পর্যন্ত তাকে অভিযুক্ত বলা যাবে না। 

সদ্য বিদায়ী এই চেয়ারম্যানের বক্তব্যের সূত্র ধরে প্রকৌশলী শহিদুল আফরোজকে দ্বিতীয়বার ওএসডি করে আপত্তির মুখে চার মামলার আসামি হাবিবুর রহমানকে প্রধান প্রকৌশলী করা হয়। চাকরির মেয়াদ না বাড়ায় তিন মাস পর তিনি বেবিচক থেকে বিদায় নেন।

বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত। তা ছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলমান। তাকে থার্ড টার্মিনালের পিডি থেকে সরিয়ে এনে প্রধান প্রকৌশলী করা হয়।

এদিকে সিনিয়রকে ডিঙিয়ে জাকারিয়া হোসেনকে প্রধান প্রকৌশলী করায় তারই বিভাগের একজন তত্ত্বাবধায়ক  প্রকৌশলী তার অধিকার ক্ষুণেœর অভিযোগে উচ্চ আদালতে রিট করেছেন। মামলায় বেবিচক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। 

এই হচ্ছে বেবিচক প্রশাসনের সার্বিক চিত্র। এ অবস্থায় পরবর্তী প্রধান প্রকৌশলী কে হবেনÑ এ নিয়ে চলছে টানা-হ্যাঁচড়া। কারণ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীদের প্রায় সবাই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত। সবার বিরুদ্ধেই বিভাগীয় মামলা চলমান। প্রকৌশলী শহিদুল আফরোজ এ বিষয়ে রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, আমাকে নানাভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে। কখনো দুদকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে, আবার কখনো বিভাগীয় মামলা দিয়ে। আমি বিভাগীয় মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া সত্ত্বেও আমাকে অন্যায়ভাবে চেয়ারম্যান দপ্তরে ওএসডি করা হয়েছে। এর কারণ হতে পারে, আমাকে ডিঙিয়ে পছন্দসই জুনিয়র কাউকে প্রধান প্রকৌশলী করা।  

এদিকে সার্বিক বিষয়ে জানতে বেবিচক সদস্য (অপারেশন) এয়ার কমোডর মেহবুব খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, আমি প্রশাসন দেখি না। সব বিষয়ে তার অদৃশ্য হাত রয়েছেÑ এমন অভিযোগের উত্তরে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ অবান্তর।  

এ বিষয়ে সদ্য বদলির আদেশপ্রাপ্ত বেবিচক সদস্য (প্রশাসন) আবু সালেহ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন খানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!