জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ভাইয়া গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ভাইয়া হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের নতুন উদ্যোগ হোটেল ‘সল্ট বে’র আয়োজনে চলছে তিন দিনব্যাপী ‘কিডস ফেস্টিভ্যাল-২০২৫’। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে আয়োজন করা হয় ভিন্নধর্মী এই অনুষ্ঠানের। বিশে^র দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারের ইনানী বিচে আন্তর্জাতিক মানের পাঁচ তারকা হোটেল ‘সল্ট বে’র শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে চলছে এ আয়োজন। ‘বিনিয়োগের নতুন দিগন্ত আত্মবিশ্বাসের নতুন ঠিকানা’Ñ এই স্লোগান নিয়ে ‘সল্ট বে’র উদ্বোধন হয়। গ্রাহকের ভবিষ্যতের নিরাপদ বিনিয়োগ ও লাক্সারি আশ্রয়ের জন্য নতুন এই পাঁচ তারকা মানের হোটেল নিয়ে এসেছে ভাইয়া হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড।
সল্ট বে হোটেলের আয়োজনে গতকাল শুক্রবার দ্বিতীয় দিনে ছিল শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। চার হাজারের অধিক শিক্ষার্থী তাদের রঙতুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলে স্বপ্ন, কল্পনা ও সৃজনশীলতা। তাদের ছবিগুলোর মধ্যে ফুটে উঠেছে শিশুমনের নিখাদ ভাবনা, প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা ও ভবিষ্যৎ জীবনের স্বপ্ন। এদিন সকাল ১০টায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহজাবীন। তার বাবা এ আয়োজনের বিষয়ে বলেন, ‘এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। বাচ্চাদের মেধা বিকাশে এমন আয়োজনের জন্য ভাইয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টকে ধন্যবাদ জানাই। আমার সন্তান খুব খুশি, তার প্রতিভা প্রকাশের সুযোগ পেয়েছে।’
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া আরেক শিক্ষার্থী তাবাসসুম নানা রঙের মিশেলে আঁকছিল গাছ ও ফুলের ছবি। তার মা বললেন, ‘আমার মেয়ে প্রকৃতি ভালোবাসে। সে ছবিতে গাছ আর ফুল এঁকেছে। আমি মনে করি, এই ধরনের আয়োজন শিশুদের কল্পনাশক্তি ও প্রকৃতিপ্রেমকে আরও উজ্জ্বল করে তুলবে।’ আরেক অভিভাবক জানান, ‘শিশুরা সারা বছর লেখাপড়ার চাপে থাকে। এমন প্রতিযোগিতা তাদের সৃজনশীল মননকে জাগিয়ে তুলবে। এতে করে পড়াশোনার বাইরেও তারা আনন্দ খুঁজে পাবে এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে।’
এ আয়োজনে অংশ নেওয়া আরেক শিশুর বাবা জানান, ‘এই প্রতিযোগিতা শিশুদের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিযোগিতার মানসিকতা তৈরি করবে। আমার ছেলে পুরস্কার জিতুক বা না জিতুকÑ এখানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তার আত্মবিশ্বাস ও সামাজিক দক্ষতা বাড়বে। আজকের এই দিনটা শুধু প্রতিযোগিতা নয়, বরং এটি শিশুদের শেখা ও বেড়ে ওঠার একটি অংশ। আমি চাই প্রতিবছরই এমন উৎসব আয়োজন করা হোক।’ এ আয়োজনে অংশ নেওয়া শিশুদের আঁকা ছবি দশজনের বিজ্ঞ বিচারকের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষে আজ শনিবার আয়োজনের শেষ দিনে বিজয়ীদের দেওয়া হবে আকর্ষণীয় পুরস্কার।
এ আয়োজনের প্রথম দিন গত বৃহস্পৃতিবার অনুষ্ঠিত হয় শিশুদের নৃত্যানুষ্ঠান। যেখানে রাজধানীর ৫০টিরও বেশি স্কুলের ১ম থেকে ৫ম শ্রেণির শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। শিশুদের প্রাণবন্ত পরিবেশনা দেখে আপ্লুত হন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই। অভিভাবকরা জানান, এমন আয়োজন শুধু বিনোদন নয়, শিশুদের মেধা ও মননের বিকাশের জন্য অসাধারণ সুযোগ তৈরি করে দেয়। পুরস্কারপ্রাপ্তি শিশুদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, আবার অংশগ্রহণই হয়ে ওঠে তাদের জন্য আনন্দ ও প্রেরণার উৎস। এ আয়োজনে উপস্থিত শিক্ষকরাও বলেন, একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি এমন উৎসব শিশুদের সৃজনশীল দিকগুলো বিকশিত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
ভাইয়া হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের দায়িত্বশীল একজন জানান, আমরা বিশ্বাস করি, শৈশবেই যদি শিশুদের সৃজনশীলতা ও মননের বিকাশ ঘটে, তবে তারা দেশ ও সমাজের জন্য একদিন বড় সম্পদে পরিণত হবে। শিশুদের নিয়ে এমন আয়োজন প্রতিবছর নিয়মিত করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।
তিনি আরও বলেন, ভাইয়া হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের চেয়ারম্যান মারুফ সাত্তার আলী বিশ্বাস করেনÑ বাংলাদেশের হোটেল ইন্ডাস্ট্রি একদিন আন্তর্জাতিক মানের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। এটি শুধু ভ্রমণপিপাসুদের জন্য নয়, বরং আমাদের দেশের অর্থনীতি ও পর্যটনশিল্পের জন্যও গর্বের প্রতীক হয়ে দাঁড়াবে। আমরা সে লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, বিশ্বমানের সেবা এবং অতিথিপরায়ণতার মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের হোটেল খাতকে এমন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। যেখানে বিদেশি পর্যটকরাও আকৃষ্ট হবেন। যার মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি বিশ্বমঞ্চে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। দেশের পর্যটন ও হোটেল ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে জড়িয়ে আছে দেশের হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান, রাজস্ব আয় এবং আধুনিক অবকাঠামো গড়ে তোলার এক বিশাল সুযোগ। দেশের পর্যটনশিল্পের বিকাশে কার্যকর ভূমিকা রাখতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।
গতকাল এ আয়োজনের দ্বিতীয় দিনে উপস্থিত ছিলেন ভাইয়া গ্রুপ, ভাইয়া হাউজিং ও ভাইয়া হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা।
আজ শনিবার আয়োজনের তৃতীয় দিন পুরস্কার বিতরণীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ আয়োজন। আয়োজকদের প্রত্যাশা, এটি শিশুদের মেধা বিকাশের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র তৈরি করবে। কিডস ফেস্টিভ্যাল ২০২৫ তাই শুধু একটি উৎসব নয়Ñ এটি শিশুদের স্বপ্ন, কল্পনা আর মেধার বর্ণিল মহোৎসব।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন