বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সেলিম আহমেদ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫, ১১:৩৬ পিএম

অটোমেটেড হচ্ছে ডিআইএ’র কার্যক্রম 

১১৩ কোটি টাকার স্কিমে শতকোটি টাকা  খরচ হবে প্রশিক্ষণ-সম্মানিতে

সেলিম আহমেদ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫, ১১:৩৬ পিএম

১১৩ কোটি টাকার স্কিমে শতকোটি টাকা  খরচ হবে প্রশিক্ষণ-সম্মানিতে

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুদকখ্যাত পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) কার্যক্রমকে অটোমোটেড (ডিজিটাল) করতে ১১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে দুই বছরের একটি স্কিম হাতে নিয়েছে মন্ত্রণালয়। তবে এই বরাদ্দের অধিকাংশ টাকা খরচ হবে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ আর পরামর্শকদের সম্মানি ও পেশাগত সেবার জন্য। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়া স্কিমটিতে দেখা গেছে, প্রশিক্ষণ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬ কোটি ৩৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা আর সফটওয়্যার ও পরামর্শকদের সম্মানি ও পেশাগত সেবার জন্য খরচ হবে ৪৩ কোটি ৫৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। এই দুই খাতে ৯৯ কোটি ৮৭ লাখ ১৪ হাজার টাকা ব্যয় করার পর অবশিষ্ট ১৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় হবে বেতন, প্রশাসনিক ব্যয়, মুদ্রণ ও মনিহারি ক্রয়সহ অন্যান্য খাতে। উদ্যোগটি ভালো হলেও প্রশিক্ষণ ও সম্মানি খরচ নিয়ে সমালোচনা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শিক্ষা ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহার ও শিক্ষার মানোন্নয়নে ১৯৮০ সালে ১৩০ জনের জনবল কাঠামো নিয়ে গঠন করা হয় পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআই)। ডিআইএয়ের প্রধান কাজ স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর বা সংস্থা পরিদর্শন এবং নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা। ওই সময় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল মাত্র সাড়ে ৭ হাজার। বর্তমানে জ্যামিতিক হারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেড়ে ৩৫ হাজার ২৬৯টি হলেও ডিআইএ’র জনবল সংখ্যা আর বাড়েনি। ফলে এই স্বল্প জনবল নিয়ে এত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

এই অবস্থায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তিসমূহ ব্যবহার করে ডিআইএ সেবাকে অটোমেটেড (ডিজিটাল) করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিদর্শন, নিরীক্ষা ও রিপোর্টিং প্রক্রিয়া দ্রুত নির্ভুলভাবে করা যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, স্কিমটি বাস্তবায়নের উদ্যোগসহ নানা পদক্ষেপে গতি এসেছে ডিআইএ’র কার্যক্রমে। এর মধ্যে রয়েছে ই-ক্যাশ বুক ও পেমেন্ট গেটওয়ে চালুর উদ্যোগ। একই সঙ্গে কয়েক বিতর্কিত কর্মকর্তার বিষয়েও বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। স্কিমটির মধ্যে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও প্রশাসনের কার্যকারিতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। 

সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি)’র আওতায় ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট অব ডিআইএ শিরোনামে একটি স্কিমের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করা হবে। 

স্কিমটির প্রস্তাবনা থেকে জানা যায়, প্রশিক্ষণ ও পরামর্শক সেবা ছাড়াও স্কিমটির ১৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মজুরি ও বেতনের পেছনে খরচ হবে ৪ কোটি ৬ লাখ ৭১ হাজার টাকা, প্রশাসনিক ব্যয় হবে ৪ কোটি ৮৪ লাখ ১৭ হাজার টাকা, ফি, চার্জ ও কমিশনে ব্যয় হবে ২০ হাজার টাকা, ভ্রমণ ও বদলির পেছনে খরচ হবে ৪৭ লাখ ১৫ হাজার টাকা, মুদ্রণ ও মনিহারির পেছনে খরচ হবে ২ কোটি ২১ লাখ ২৫ হাজার টাকা, সাধারণ সরবরাহ ও উপকরণে ব্যয় হবে ১২ লাখ টাকা, মেরামত ও রক্ষাণাবেক্ষণে খরচ হবে ২৪ লাখ টাকা, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদির পেছনে খরচ হবে ১ কোটি ৮৭ লাখ ১০ হাজার টাকা। 

স্কিমটির প্রশিক্ষণ খরচ সম্পর্কে জানা যায়, এই স্কিমের মাধ্যমে ৪৮ হাজার শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে বাজেট ব্যবস্থাপনা, নিরীক্ষা ও সফটওয়্যার ব্যবহারের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর মধ্যে বাজেট ব্যবস্থাপনা ও রেকর্ড সংরক্ষণবিষয়ক প্রশিক্ষণের জন্য ৬৪০ জন মাস্টার ট্রেইনারদের প্রশিক্ষণ দিতে খরচ হবে ২ কোটি ৫২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা, ২৪ জনের অডিট ও ইন্সপেকশন এবং রেকর্ড সংরক্ষণবিষয়ক মৌলিক প্রশিক্ষণের জন্য ১৮ লাখ ৪৮ হাজার টাক, ২৪ জনের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রশিক্ষণের জন্য ৫০ লাখ ৭৮ হাজার টাকা, ২৪ জনের সরকারি অর্থব্যবস্থাপনার জন্য ২২ লাখ ১৯ হাজার টাকা, ২৪ জনের এডভান্সড আইসিটি প্রশিক্ষণের জন্য ২১ লাখ ৩২ হাজার টাকা। আর ২ হাজার ৪’শ জনের বাজেট ব্যবস্থাপনা ও রেকর্ডকিপিং প্রশিক্ষণের জন্য ২৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অটোমেন সফটওয়্যার প্রশিক্ষণের জন্য ২৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয় হতে পারে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলছেন, প্রশিক্ষণ আর সম্মানির নামেই প্রকল্প বা স্কিমগুলোতে অনিয়ম হয় বেশি। নামমাত্র প্রশিক্ষণ দিয়ে লুটপাট করা হয় কোটি কোটি টাকা। তাই এই প্রকল্পে প্রশিক্ষণ আর সম্মানিতে এত বরাদ্দ উদ্বেগের কারণ। অন্যদিকে স্কিম সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি পুরোটাই নতুন ধারার কাজ। শিক্ষকরা এই কাজ সম্পর্কে তেমন অবগত নন। তাই তাদের প্রশিক্ষিত করতে না পারলে পুরো টাকাই জলে যাবে। 

জানতে চাইলে ডিআইএ পরিচালক অধ্যাপক এম এম সহিদুল ইসলাম বলেন, স্কিমটি অনুমোদনের কথা শুনেছি। তবে এখনো লিখিত কোনো আদেশ পাইনি। আশা করছি, স্কিমটি বাস্তবায়ন হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরীক্ষা কার্যক্রমে গতি আসবে।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!