- এ বিষয়ে কিছুই জানেন না উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় আদালতের ১৪৪ ধারা জারি করা জমিতে বিএনপির সাইবোর্ড লাগিয়ে দলীয় কার্যালয় করা হয়েছে। তবে উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়েছেন। গত বুধবার উপজেলার কুশমাইল ইউনিয়নের ছলির বাজার ডাল্লার মোড়ে ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয় করা হয়। সাইনবোর্ড লাগিয়ে কার্যালয় নির্মাণের পর মুড়িও খাওয়ান দখলদারেরা।
গত ২৬ জুলাই কুশমাইল ইউনিয়নের নিউগী গ্রামের জয়নাল আবেদিনের স্ত্রী জোবেদা খাতুন (৪০) বাদী হয়ে কেরামত আলী (৬০), মো. আ. বাছেদ (৩০), মো. কায়ছার (২৫), মো. হুরমুছ আলী (৫০), মো. সুরুজ আলী (৫৩), মো. কালাম মিয়াকে (৪৫) অভিযুক্ত করে ফুলবাড়িয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিবাদীরা জয়নাল আবেদিনের গোষ্ঠীর লোক। জয়নাল আবেদীনের কেনা কুশমাইল নিউগী মৌজার ৫১২২ দাগে ১০ শতাংশ, ৫২৬০ দাগে ০৬ শতাংশ, ৪৭৫১ দাগে ১০ শতাংশ, ৪৭৭৯ দাগে ১ শতাংশ, ৪৭৭৫ দাগে ২ শতাংশসহ মোট-২৯ শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। বিরোধের জেরে বিভিন্ন সময়ে জয়নাল আবেদিনকে হুমকি দিয়ে আসছে। এমতাবস্থায় গত ২৬ জুলাই সকালে বিবাদীরা দেশীয় অস্ত্রসহ ঘর তোলার সরঞ্জাম নিয়ে জয়নাল আবেদিনের জমিতে ঘর তুলতে আসে। তখন জয়নাল আবেদিন ও তার লোকজন এগিয়ে এলে হত্যার হুমকি দেয় এবং বিবাদীরা জমি নিজেদের দাবি করে ঘর তুলে। এতে বাধা দিতে জয়নাল আবেদিন ও তার লেকজন এগিয়ে গেলে তারা পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করে। পরে বিবাদীরা ওই দিন ঘর নির্মাণ করে।
এ ঘটনার পর জমির মালিক জয়নাল আবেদিন গত ১৮ সেপ্টেম্বর ওই জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করার জন্য আদালত আবেদন করেন। পরে ওই দিন আদালত জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরে পুলিশ আদালতের নির্দেশে ২০ সেপ্টেম্বর ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে জমিতে ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি অবগত করেন। তবে, বিবাদী কেরামত আলী, সুরুজ আলী, হরমুছ আলী আবুল কালাম, রাসেলসহ আরও ১০-১৫ জন মিলে গত ১ অক্টোবর রাতে ওই জমিতে তৈরি করা ঘরে সাইনবোর্ড লগিয়ে বিএনপির কার্যালয় বানান।
এ বিষয়ে জমির মালিক জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘মাসখানেক আগে জোর করে আমার জমিতে ঘর তোলে। আমি আদালতে আবেদন করলে ওই জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করে। তার পরেও বিবাদীরা ওই জমিতে তুলা ঘরে বিএনপির কার্যালয় তৈরি করেছে।’
অভিযুক্ত সাবেক ইউপি সদস্য খাইরুল আলম বলেন, ‘ওই জমিতে বিএনপির কার্যালয় কারা তৈরি করেছে আমার জানা নেই।’ উপজেলা বিএনপির সদস্য ইউনুস আলী বলেন, বিএনপির কার্যালয় বানানোর বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। ১৪৪ ধারা জারি করা জমিতে বিএনপির কার্যালয় বানানোর নির্দেশ দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আখতারুল আলম ফারুক বলেন, এ বিষয়ে কেউ আমাকে কিছু জানায়নি। তবে, খোঁজখবর নিয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।
ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুকুনুজ্জামান বলেন, আদালতের নির্দেশে ওই জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। তবে, বিএনপির কার্যালয় বানানোর বিষয়টি জানা নেই। যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে। তাহলে বিষয়টি আদালতে অবগত করা হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন