মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সালমান ফরিদ, সিলেট

প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৫, ০১:০৭ এএম

সিলেটে নতুন সংকটে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন

সালমান ফরিদ, সিলেট

প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৫, ০১:০৭ এএম

সিলেটে নতুন সংকটে  ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন

কার্যকরি পরিষদ নিয়ে চলমান সংকট এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি সিলেট ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল। এরই মধ্যে নতুন আরেক সংকটের মুখোমুখি হৃদরোগের জন্য বিশেষায়িত ও সুখ্যাতি অর্জনকারী সিলেটের চ্যারেটি প্রতিষ্ঠানটি। দাবি করা হচ্ছে, ‘পথের কাঁটা’ সরাতে ভেতরের শক্তিশালী একটি মহল হাসপাতালের দীর্ঘদিনের পরিচালককে অপসারণ করতে চাইছে। এ জন্য একটি অভিযোগ এনে বিদেশে থাকার সুযোগে পরিচালককে পদচ্যুতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও বিষয়টি চাউর হওয়ার পর হাসপাতালের ভেতরে শুরু হয়েছে তোলপাড়। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন চিকিৎসক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা ‘অন্যায় আচরণের’ প্রতিবাদ জানিয়ে গেল রোববার মানববন্ধনও করেছেন। হাসপাতালের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সিলেট ন্যাশনাল হার্ট ফাইন্ডেশন হাসপাতাল পরিচালনার জন্য কার্যকরী কমিটি গঠন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সংকটে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানের ‘স্বার্থের বাইরে’ গিয়ে কমিটি গঠন করার প্রক্রিয়া শুরুর পর এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছিল সদস্যদের মধ্যে। নানা ইস্যুতে বিতর্ক পিছু নিয়েছিল হাসপাতালের। এর মধ্যেই কমিটি গঠন করা হয় গত ২৫ সেপ্টেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভায়। ‘অযোগ্য’ ব্যক্তিদের নিয়ে কার্যকরি কমিটি গঠন করার অভিযোগ এনে চরম হট্টগোল হয় সেই এজিএমে। বিষয়টি নিয়ে পরিষদের কর্তাদের মধ্যে বেশ বাকবিত-া হয় সে সময়। সংকট শুরু সেখান থেকে।

সূত্রমতে, এর রেশ ধরেই একটি পক্ষ হাপসাতালের দীর্ঘদিনের পরিচালক কর্নেল (অব.) শাহ আবিদুর রহমানের প্রতিপক্ষ হিসেবে অবস্থান নিয়ে তাকে অপসারণের চেষ্টা শুরু করে। গত ৯ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি সুনামের সঙ্গে হাসপাতাল পরিচালনা করছিলেন। তবে নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধ তৈরির পর তাকে সেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার তৎপরতা শুরু করে ওই পক্ষ। সূত্রের দাবি, তাকে ঘায়েল করতে সম্প্রতি তারা কয়েকজন কনসালটেন্ট, নার্স এবং কর্মচারী দিয়ে কর্নেল (অব.) শাহ আবিদুর রহমানের বিরুদ্ধে নারী ডাক্তার ও নার্সদের সঙ্গে অসদাচরণের মৌখিক একটি অভিযোগ আনেন। অভিযোগটি আসে কার্যকরি পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. আমিনুর রহমান লস্কর এবং সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী সোয়েব আহমদ মতিনের কাছে। তবে অভিযোগ উঠেছে, প্রকৃতপক্ষে তারাই কর্মচারী ও কনসালট্যান্ট চিকিসকদের দিয়ে অভিযোগটি তুলতে বড় ভূমিকা রেখেছেন।

হাসপাতালের পরিচালক কর্নেল (অব.) শাহ আবিদুর রহমান তার মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে বর্তমানে মালয়েশিয়ায় সপরিবারে অবস্থান করছেন। গত রোববার টেলিফোন করে নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী সুয়েব মতিন তাকে অভিযোগের বিষয়টি অবহিত করে পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানান। এ সময় তার অপরাধ হিসেবে, মহিলা ডাক্তার ও নার্সদের ডিউটিরত অবস্থায় সম্পূর্ণ মুখম-লে হিজাব না পরার মৌখিক নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ আসার ব্যাপারটি উল্লেখ করা হয়। এমনকি তারা অভিযোগে উল্লেখ করেন মহিলা ডাক্তার ও নার্সদের সঙ্গে তিনি নানা সময় দুর্ব্যবহার করেছেন। এ জন্য হাসপাতালের শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে তাকে পরিচালক পদ থেকে অব্যহতি দেওয়ার কথা জানানো হয়।

সূত্র জানায়, ঘটনা শোনার পর সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে কার্যকরি কমিটির ৭-৮ জন বসে পরিচালককে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এটি পরিকল্পিত। কেননা কর্নেল (অব.) শাহ আবিদুর রহমান সব সময়ই হাসপাতালের প্রতি আন্তরিক। সিলেট ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালকে এ পর্যায়ে নিয়ে আসার পেছনে হাতেগোনা যে কয়জনের ভূমিকা অগ্রগণ্য, তিনি তাদের একজন। বিভিন্ন সময় স্টাফদের অনিয়ম দূর ও শৃঙ্খলা রক্ষায় খুব শক্ত ভূমিকা পালন করেন তিনি। কর্নেল (অব.) আবিদ দায়িত্ব নেওয়ার পর হাসপাতালের উন্নতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। হাসপাতালের জন্য সরকার থেকে প্রতিবছর নিয়মিত আড়াই কোটি টাকার বড় অঙ্কের যে তহবিল আসে, তার পেছনে কর্নেল (অব.) শাহ আবিদুর রহমানের ভূমিকা প্রশংসার দাবি রাখে। এ ছাড়া নতুন ক্যাথল্যাবের জন্য সরকার থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা প্রাপ্তির পেছনে তার অবদান অনস্বীকার্য। ফলে তার বিরুদ্ধে এমন বায়বীয় অভিযোগ ওঠা এবং তারই আলোকে তড়িঘড়ি করে তাকে পদ থেকে সরে যাওয়ার কথা বলায় বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মহলে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফাউন্ডেশনের এক কর্ণধার রূপালী বাংলাদেশের কাছে এভাবে পরিচালককে অপসারণের চেষ্টার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, একটি মহল সুনামখ্যাত প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে উঠেপড়ে লেগেছে। তারাই পথের কাঁটা ভেবে পরিচালককে সরাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

তবে কার্যকরি পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. আমিনুর রহমান লস্কর বলেন, আবিদুর রহমান ১০ বছর ধরে পরিচালক পদে রয়েছেন। অতীতে বারবার তার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এ সময় নানা অসঙ্গতি ও অভিযোগ উঠে। সম্প্রতি কিছু গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। তিনি বয়স্ক ও সম্মানিত ব্যক্তি, তাই বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত বা কোনোরকম ঘাঁটাঘাঁটিতে যাইনি। তাকে জানিয়ে দিয়েছি, নতুন পরিষদ তার মেয়াদ আর বাড়াতে চাইছে না। সবার সম্মতিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী সুয়েব মতিন এ বিষয়ে টেলিফোনে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

এ প্রসঙ্গে মালয়েশিয়া থেকে টেলিফোনে কর্নেল (অব.) শাহ আবিদুর রহমান দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘তারা যদি আমাকে না চায়, আমি চলে যাব। এখানে থাকলে আমাকে সম্মান নিয়ে থাকতে হবে। বায়বীয় অভিযোগ আনার তো দরকার নেই। এ প্রতিষ্ঠানের জন্য আমি কী করেছি, তা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সবাই জানেন। এটি বলার কিছু না, আমার দায়িত্ব। এখন সেই প্রতিষ্ঠান আমাকে যদি সম্মান দিতে না পারে, আমি তো সেখানে থাকব না।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!