গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় একটি বাসা থেকে রহিমা খাতুন (৩৫) নামে এক নারীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় মরদেহের পাশ থেকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই নারীর স্বামী ইমরান হোসেনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে এক কিশোরীকে। গতকাল শনিবার সকালে কোনাবাড়ী নওয়াব আলী মার্কেট এলাকার একটি ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রহিমা আক্তার (৩৪) আগে স্থানীয় পোশাক কারখানায় চাকরি করলেও বর্তমানে বাসাতেই থাকতেন। তার স্বামী এমরান হোসেন (৩৮) ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার আমতলী গ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে এবং পেশায় কসাই। রহিমা ও এমরান দুজনেরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। দীর্ঘদিন ধরে একতা টাওয়ারের ওই বাসায় তাদের সঙ্গে এমরানের প্রথম ঘরের কিশোরী মেয়ে (১৬) থাকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কোনাবাড়ীর নওয়াব আলী মার্কেট এলাকার ‘একতা ভিলা’র পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে স্ত্রী ও ১৬ বছর বয়সি মেয়েকে নিয়ে থাকতেন ইমরান হোসেন। রহিমা খাতুন ও ইমরানের এটি ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। পারিবারিক কোনো বিষয় নিয়ে তাদের মতবিরোধের জেরে স্ত্রীকে হত্যার পর ইমরান আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন, নাকি ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত তা তদন্ত করছে পুলিশ।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, একই ফ্ল্যাটের পাশের কক্ষে কিশোরী মেয়েটির দুই বন্ধুও থাকতেন। তারা ‘টিকটক’ করতেন। ঘটনার পর তাদের বাসায় পাওয়া যায়নি।
এসআই পাপন হোসেন বলেন, বহুতল ভবনে লাশ পড়ে থাকার খবরে ভোরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রহিমার লাশ উদ্ধার করে। পরে ফ্ল্যাটে তল্লাশির সময় গুরুতর আহত অবস্থায় এমরান হোসেনকে পাওয়া গেলে তাকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা কেউ কেউ বলছেন, শুক্রবার গভীর রাতে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাদের বাসায় ঢুকে এমরান ও রহিমাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলেই রহিমার মৃত্যু হয় এবং তার স্বামীও গলার কিছু অংশ কাটা অবস্থায় পড়ে ছিলেন।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), সিআইডিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বলে জানান এসআই পাপন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কোনাবাড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, ওই বাসা থেকে এমরানের মেয়েকে আটক করা হয়েছে। তাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এ ছাড়া বাসা থেকে হত্যায় ব্যবহার করা চারটি ধারালো অস্ত্রও (চাকু) উদ্ধার করা হয়েছে। ইমরানের জ্ঞান ফিরলে ঘটনার রহস্য উন্মোচিত হবে।
তিনি আরও বলেন, নিহত রহিমার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

