ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

৪ ঘণ্টার পরিচয়ে বিয়ে

৪২ লাখ টাকা খুইয়ে নিঃস্ব চীনা যুবক

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৫, ০২:৫২ এএম

মাত্র চার ঘণ্টার পরিচয়ের পর বিয়েÑ এমন সিদ্ধান্তে স্তব্ধ হয়ে গেছে চীনের সোশ্যাল মিডিয়া। কিন্তু আরও বড় ধাক্কা এসেছে এরপর : বিয়ের এক মাসের মধ্যেই নববধূ উধাও করে ফেলেছেন স্বামীর সঞ্চিত দুই লাখ ৪০ হাজার ইউয়ান, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪২ লাখ টাকার সমান। হুনান প্রদেশের হেংইয়াং শহরের ৪০ বছর বয়সি হুয়াং ঝংচেং গত ২১ আগস্ট সকালে একটি ব্লাইন্ড ডেটে অংশ নেন। বিশেষত্ব হলোÑ এই এক মহিলার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে ৯ জন আলাদা ম্যাচমেকার একসঙ্গে হাজির হন।

হুয়াং স্থানীয় মিডিয়াকে জানান, ‘আমি ভেবেছিলাম একজন ম্যাচমেকারের সঙ্গে দেখা হবে, কিন্তু যাওয়ার পথে আরও আটজন হঠাৎ এসে যোগ দেন। মোট ৯ জন আমাকে একই মেয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন।’ সেদিনই দু’জন দেখা করেন এবং আশ্চর্যের বিষয়, মাত্র চার ঘণ্টা পর তারা বিয়ের রেজিস্ট্রেশনও সম্পন্ন করেন। হুয়াং বলেন, ‘ও বলল, সবকিছু আজই করতে হবে। বিকেল ৫টার মধ্যে আমরা বিবাহ সম্পন্ন করলাম। সব এত দ্রুত ঘটছিল যে আমি যেন স্বপ্ন দেখছিলাম।’

বিয়ের পর প্রথম রাতেই তারা একটি হোটেলে থাকেন এবং সেটিই ছিল তাদের একমাত্র শারীরিক ঘনিষ্ঠতা। এরপর আর কখনো স্ত্রী তাকে স্পর্শ করতে দেননি বলে দাবি করেন তিনি। বিয়ের দুইদিন পর স্ত্রী হুয়াংকে বলেন, তিনি যেন গুয়াংডং প্রদেশে কাজ করতে যান এবং নিয়মিত তাকে টাকা পাঠান। তিনি নানা অজুহাত দেখিয়ে টাকা ধার নেওয়ার অনুরোধ করতে থাকেনÑ কখনো উৎসব, কখনো মেয়ের পড়াশোনা, আবার কখনো ব্যক্তিগত প্রয়োজনের কথা বলে।

হুয়াং জানান, ‘‘ও প্রায় কখনোই আমার মেসেজের জবাব দিত না। কিন্তু যখনই দিত, সেটা টাকার জন্যই হতো। কিসি উৎসবে আমি তাকে এক হাজার ৩১৪ ইউয়ানের উইচ্যাট রেড প্যাকেট পাঠিয়েছিলাম, চীনে এই সংখ্যার মানে ‘চিরকাল’। সে শুধু লিখলÑ ‘ধন্যবাদ স্বামী’।’’ পরবর্তীতে তিনি স্ত্রীর সন্তানের জন্য দুই হাজার ৩০০ ইউয়ান দিয়ে একটি কম্পিউটারও কিনে দেন। মাত্র ১৮ দিনের মধ্যেইÑ ২১ আগস্ট থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তার পুরো সঞ্চয় শেষ হয়ে যায়।

ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই চীনা সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। হাজারো ব্যবহারকারী এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন। একজন মন্তব্য করেন, ‘এত দ্রুত বিয়ে করার সাহস সত্যিই অবিশ^াস্য। হয়তো তারা একে অপরের বাড়ির ঠিকানাও জানে না, অথচ বিয়ে করছে!’

আরেকজন লিখেছেন, ‘মাদক কারবারিরাও হয়তো এমন কাহিনি শুনে কাঁদবে।’ তৃতীয় একটি মন্তব্যে দাবি করা হয়েছে, ‘এটি স্পষ্ট প্রতারণা। ওই ৯ জন ম্যাচমেকারকেও আইনি বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।’

এখনো পর্যন্ত ওই মহিলাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে। হুয়াং আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঘটনাটি এখন চীনের বিবাহ প্রতারণা আলোচনাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। বিশেষত দ্রুত বিয়ে এবং সোশ্যাল মিডিয়া-চালিত ম্যাচমেকিং সংস্কৃতি নিয়ে।