* দুই ঘণ্টা পরে অচেতন করে ফেরানো হলো খাঁচায়
ঢাকার মিরপুরে জাতীয় চিড়িয়াখানার খাঁচা থেকে হঠাৎ বেরিয়ে যায় ডেইজি নামে এক সিংহী। প্রায় দুই ঘণ্টার পরে অচেতন করে ফের খাঁচায় ঢোকায় চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার পরপরই দর্শনার্থীদের দ্রুত বের করে দেওয়া হয়। তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সিংহীটি কীভাবে খাঁচা থেকে বের হয়েছে তা জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিচালক রফিকুল ইসলাম তালুকদার। গতকাল শুক্রবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে খাঁচা থেকে বের হয়ে যায় ডেইজি। পরবর্তীতে সন্ধ্যা ৭টার দিকে খাঁচায় নেওয়া হয় সিংহীটিকে।
জানা গেছে, বর্তমানে জাতীয় চিড়িয়াখানায় পাঁচটি সিংহ রয়েছে। এর মধ্যে ডেইজির জন্ম হয়েছিল ২০২০ সালে চিড়িয়াখানাতেই। ২০২৩ সালের শেষদিকে তার সঙ্গীর মৃত্যু হয়।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, সিংহীটিকে ‘ট্রানকুইলাইজার গান’ দিয়ে ইনজেকশন পুশ করে অচেতন করা হয়। সিংহীটিকে তারা পুরোপুরি অচেতন করতে চাননি, যে কারণে কিছুটা সময় লেগেছে। এরপর সেটিকে সতর্কতার সঙ্গে তাকে খাঁচায় ঢোকানো হয়।
জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ড. আতিকুর রহমান বলেন, বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে পৌনে ৫টার দিকে একটি সিংহী খাঁচা থেকে বের হয়ে যায়। তবে সে পাবলিকলি আসেনি। সে তার খাঁচার টেরিটোরির মধ্যেই ছিল। আমরা লোকগুলোকে (দর্শনার্থী) খালি করে দিয়েছি। যার ফলে তাকে (সিংহী) উত্তেজিত করিনি। আমরা গরুর গোস্ত দিয়েছি, সেগুলো খেয়ে শান্ত হয়েছিল। পরে আমরা এনেস্থেসিয়া ইনজেকশন দিয়েছি বন্দুক দিয়ে। এর কিছুক্ষণ পরে যখন পুরাপুরি অচেতন হয়ে যায় তখন ওকে খাঁচার ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়।
জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, সন্ধ্যার পর সিংহীটিকে চেতনানাশক ইনজেকশন পুশ করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর অজ্ঞান হয়ে গেলে সেটিকে ধরে ফের খাঁচায় ঢোকানো হয়েছে। এই ঘটনায় আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
এটা কীভাবে বের হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আসলে তদন্ত না করে বলাটা কঠিন। মূলত আমরা কীভাবে ওকে রেসকিউ করব সেটা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। ও যেখানে ছিল সেখানে আমরা কেউ ঢুকতে পারছিলাম না। এখন মূল বিষয় হচ্ছে ওর গেট খোলা ছিল কি না... আমরা ডেফিনেটলি ধারণা করছি ও গেট দিয়েই বের হয়েছে। কারণ এই খাঁচাটা অনেক প্রোটেক্টেড (সুরক্ষিত) খাঁচা। গেটটা কেন খোলা থাকল এবং কীভাবে খোলা থাকল, এই বিষয়টা আমাদের বের করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা একটা আনুমানিক তিন সদস্যের একটা কমিটি করে দেব। এখনো করিনি, আমি কেবল রেসকিউ করে অফিসে এলাম।
কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কি নাÑ জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, আমাদের কর্মী বা দর্শনার্থী কেউ আহত হয়নি। আমরা চাইলে আরও আগেই সিংহটিকে রেসকিউ করতে পারতাম। কিন্তু সবার সেইফটি চিন্তা করে তাড়াহুড়া করা হয়নি। আমরা সময় নিয়েছি।
কীভাবে বের হয়েছে জানতে চাইলে চিড়িয়াখানার কিউরেটর ড. আতিকুর রহমান বলেন, ‘সিংহীটি খাঁচার ভেতরে আছে এখন। নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। কীভাবে বের হয়েছে সেটা আমরা পরে জানতে পারব। যদি তালা খুলে যায়... ভুলবশত তালা খুলতে পারে। অনেক সময় তো প্রাণীরা তালা নিয়ে খেলা করে, কামড় দেয়, তখন ভেঙে যেতে পারে। আবার এমনও হতে পারে আমাদের পরিচর্যাকারী হয়তো তালা লাগাতেই ভুলে গিয়েছে। তদন্তের পর এটা জানা যাবে।

