- আগস্টের প্রথম ১২ দিনেই রোগী ছাড়াল ৪ হাজার
- ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ১, হাসাপাতালে ভর্তি ৩৮২
- এডিস মশার প্রজননস্থল নিধনের তাগিদ
এই রোদ, এই বৃষ্টি। দেশের আবহাওয়ায় বর্তমানে এক অদ্ভুত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এমন অনুকূল আবহাওয়ায় প্রজননের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ পাচ্ছে এডিস মশা। এ কারণে প্রতিদিনই দেশে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। চলতি আগস্ট মাসের মাত্র ১২ দিনে ৪ হাজার ১৯ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মারা গেছে ২০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়ে ৩৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। আর এই সময়ের মধ্যে মারা গেছে একজন। এ নিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১০৩ জনের এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৪ হাজার ৯৯৯ জন।
গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্য থেকে এসব জানা যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১ হাজার ২৬৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৩৯৫ জন, বাকি ৮৬৮ জন ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন, মে’তে ১ হাজার ৭৭৩ জন, জুনে ৫ হাজার ৯৫১ জন এবং জুলাইয়ে ১০ হাজার ৬৮৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এপ্রিলে ৭ জন, মে’তে ৩ জন, জুনে ১৯ জন এবং জুলাইয়ে ৪১ জন মারা গেছে।
নিজেদের বাড়িঘর পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি সরকারকেও এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলোতে আমাদের শয্যা ভাড়া দিতে হয় না। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালে যদি একটা কেবিন নেওয়া হয়, তাহলে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা প্রতিদিন শুধু শয্যা ভাড়াই দিতে হয়।
এতে পাঁচ দিনেই ৫০ হাজার টাকা শুধু শয্যা ভাড়া আসে। এরপর কারও যদি আইসিইউর প্রয়োজন হয়, তাহলে প্রতিদিনই ৫০ হাজার টাকা লাগবে শুধু আইসিইউর জন্য। স্যালাইন, ওষুধ-পথ্যÑ সবই বাইরে থেকে কিনতে হবে, যা সরকারি হাসপাতালগুলোতে লাগে না। যদি মশা নিয়ন্ত্রণ করা যেত, তাহলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আনা সময়ের ব্যাপার ছিল।
এতে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অর্থ অন্য কাজে ব্যবহার করা যেত। তাই সিটি করপোরেশনের প্রতি আমাদের সুপারিশ থাকবে, মশা নিয়ন্ত্রণে বিশ্বে যতগুলো পদ্ধতি রয়েছে, সবগুলো পদ্ধতি যেন প্রয়োগ করা হয়। যেখানে যে পদ্ধতিতে মশা মরবে, সেই পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। যেখানে প্রয়োজন ওষুধ ছিটানোর, সেখানে ওষুধ ছিটাতে হবে। যেখানে প্রয়োজন কেমিক্যাল ছিটানোর, সেখানে কেমিক্যাল ছিটাতে হবে। পুকুরে গাপ্পি মাছ, ব্যাঙ ছাড়তে হবে। এতে করে মশা মরবে। সর্বোপরি মশাকে ডিম পাড়ার কোনো সুযোগ দেওয়া যাবে না। এবং এসব করতে হবে খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে। নইলে পরিস্থিতি ভয়ংকর হবে আগামী কয়েক দিনে।