এখন প্রায় আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে। সেই সাথে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতাও পরিবর্তিত হচ্ছে। আবহাওয়া এবং পরিবেশের পরিবর্তন চোখের ওপর বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলতে পারে। শুষ্ক ও গরম আবহাওয়া চোখের শুষ্কতা বাড়িয়ে দিতে পারে, যা অস্বস্তি এবং দৃষ্টি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। অন্যদিকে, অতিবেগুনি (টঠ) রশ্মি চোখের ছানি এবং অন্যান্য চোখের রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। এ ছাড়াও, বায়ুদূষণ চোখের জ্বালা, প্রদাহ এবং সংক্রমণের কারণ হতে পারে। নিচে কিছু সাধারণ প্রভাব ও প্রতিকারের উপায় দেওয়া হলো:
আবহাওয়া ও পরিবেশের প্রভাব
হ শুষ্কতা
কারণ : শীতকাল, শুষ্ক বাতাস, ঘরের এয়ার কন্ডিশন, হিটারের ব্যবহার, ধুলাবালি।
লক্ষণ : চোখে জ্বালাপোড়া, চুলকানি, অস্বস্তি, চোখ লাল হওয়া, পানি পড়া (রিফ্লেক্স টিয়ারিং)।
প্রতিকার : কৃত্রিম অশ্রু বা লুব্রিকেটিং আইড্রপ ব্যবহার। ঘরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার। চোখে বারবার চোখ ধোয়া ও পামিং। স্ক্রিন টাইম কমানো।
হ অ্যালার্জি
কারণ : ফুলের পরাগ, ধুলাবালি, পশুর লোম, বাতাসে ভেসে থাকা অ্যালারজেন।
লক্ষণ : চুলকানি, চোখ লাল হওয়া, পানি পড়া, চোখ ফুলে যাওয়া।
প্রতিকার : অ্যালারজেন থেকে দূরে থাকা। ঠান্ডা পানি দিয়ে চোখ ধোয়া। অ্যান্টিহিস্টামিন আইড্রপ বা ওষুধ। চুলকালে চোখ না ঘষা।
হ দূষণজনিত সমস্যা
কারণ : বায়ুদূষণ (চগ২.৫, ধোঁয়া, কেমিক্যাল), যানবাহনের ধোঁয়া।
লক্ষণ : চোখে জ্বালাপোড়া, অস্বস্তি, চোখ লাল হওয়া, দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া।
প্রতিকার : বাইরে গেলে টঠ-ঢ়ৎড়ঃবপঃবফ চশমা ব্যবহার। ধুলাবালু পরিবেশে গেলে সুরক্ষামূলক চশমা পরা। বাইরে থেকে ফিরে ঠান্ডা পানিতে চোখ ধোয়া।
হ রোদ ও অতিরিক্ত আলোর প্রভাব (চযড়ঃড়ঢ়যড়নরধ)
কারণ : তীব্র সূর্যালোক, ঝলমলে আবহাওয়া।
লক্ষণ : চোখে ব্যথা, চোখ বন্ধ হয়ে আসা, মাথাব্যথা।
প্রতিকার : রোদে গেলে সানগ্লাস পরা (টঠ৪০০ প্রোটেকশন সমৃদ্ধ)। ক্যাপ বা ছাতা ব্যবহার করা।
হ আবহাওয়াজনিত সংক্রমণ (ঠরৎধষ/ইধপঃবৎরধষ ঈড়হলঁহপঃরারঃরং)
কারণ : ঠান্ডা বা বর্ষাকালে ভাইরাস/ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ।
লক্ষণ : চোখ লাল হওয়া, ব্যথা, চোখে পিচুটি, পানি পড়া।
প্রতিকার : পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা। নিজে চোখে হাত না দেওয়া। আলাদা তোয়ালে/হ্যান্ডকার্চিফ ব্যবহার। প্রয়োজনে চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন।
অতিরিক্ত কিছু পরামর্শ
- চোখে সমস্যা হলে নিজে ওষুধ না দিয়ে প্রথমে
- চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। দীর্ঘ সময়
- মোবাইল বা কম্পিউটারে কাজ করলে ২০-২০-২০ রুল মেনে চলুন : প্রতি ২০ মিনিটে, ২০ সেকেন্ড ধরে, ২০ ফুট দূরে তাকান।
ডা. মোহাম্মদ আল আমিন
সিনিয়র অপ্টোমেট্রিস্ট
মুন্সীগঞ্জ চক্ষু হাসপাতাল